ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবির সতর্ক পাহারা

টেকনাফ প্রতিনিধি :::1_1444222579

কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য অতিরিক্ত বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সে দেশের সেনাবাহিনীর অভিযানের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের টেকনাফ সীমান্তে টহল জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। নাফ নদী অতিক্রম করে মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা যাতে  গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্টে বিজিবির সদস্যদের টহল দিতে দেখা যায়।
গত মঙ্গলবার ভোরে টেকনাফের হ্নীলা ও সাবরাং এলাকা দিয়ে দুটি নৌকায় করে নাফ নদী অতিক্রম করে ৮৬ জন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে। তাদের বেশির ভাগই ছিল নারী ও শিশু। এরপর বুধবার রাতে ঝিমংখালী এলাকা দিয়ে আরও ১৬ জন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালায়। আটক রোহিঙ্গাদের আবার মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে বিজিবি জানায়।
গত বুধবার রাত থেকে টেকনাফ সীমান্ত এলাকায় অতিরিক্ত তিন প্লাটুন (প্রতি প্লাটুনে ৩০ জন সদস্য) বিজিবি পাঠানো হয়েছে। তারা সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় টহল দিচ্ছে বলে বিজিবির কক্সবাজার সেক্টরের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল আনোয়ারুল আজিম নিশ্চিত করেছেন।
রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে সচেতনতামূলক সভা করা হচ্ছে বলে জানান টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুজার আল জাহিদ। তিনি বলেন, স্থানীয় জেলেদের নাফ নদীর শূন্য রেখা অতিক্রম না করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে রাতে মাছ না ধরতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নাফ নদী দিয়ে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ করতে দেখলে সঙ্গে সঙ্গে বিজিবিকে জানাতে বলা হয়েছে।
উখিয়া সীমান্তের দায়িত্বে থাকা ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার বলেন, গত মাসে রাখাইন রাজ্যে পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার পর থেকে বড় ধরনের কোনো অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেনি। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকার চৌকিগুলোতে জনবলের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে ১৭ নভেম্বর (গতকাল) সন্ধ্যা পর্যন্ত উখিয়া সীমান্ত এলাকা দিয়ে অনুপ্রবেশ করা ৩৭ জন রোহিঙ্গাকে আটক করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, রাখাইন রাজ্যে এ সপ্তাহের শুরুর দিকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর হাতে ৩০ জনের বেশি নিহত হয়। জানা গেছে, দেশটির সেনাবাহিনী এবারই প্রথম হেলিকপ্টার গানশিপ ব্যবহার করেছে।
ভাষা ও ধর্মের মিল থাকায় একসময় টেকনাফের মানুষ মিয়ানমারের নাগরিকদের আশ্রয় দিয়েছিল বলে জানান টেকনাফের রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মোজাম্মেল হক। তিনি  আরো বলেন, ‘রোহিঙ্গারা চুরি-ডাকাতি, মাদক পাচারসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে। আমরা মিয়ানমারের আর কোনো নাগরিককে বাংলাদেশে ঠাঁই দিতে রাজি নই। বরং টেকনাফ, উখিয়া ও কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করা প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর দাবিতে স্থানীয় মানুষ বিভিন্ন সময়ে মানববন্ধন, সভা-সমাবেশ করেছে। এ আন্দোলন এখনো চলছে।’

পাঠকের মতামত: