ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

গারোদের ঐতিহ্যবাহী ‘ওয়ানগালা’ উৎসব উদযাপিত

garoঢাকা : ‘মিসি সালজং’ বা শস্য দেবতার ওপর নির্ভর করে ফসলের ভালো ফলন হয়, এটা গারোদের একটা বিশ্বাস। এই শস্য দেবতাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ও নতুন ফসল খাওয়ার অনুমতি চেয়ে ০৪ নভেম্বর, ২০১৬ শুক্রবার গারোরা পালন করেছে এ বছরের ‘ওয়ানগালা’ (নবান্ন) উৎসব। ঢাকায় বসবাসরত গারোরা রাজধানীর বনানী মডেল হাইস্কুল প্রঙ্গণে (বাসা-১৩/এফ, রোড-০৫, ঢাকা-১২১৩) দিনব্যাপী পূজা-অর্চনা, আলোচনা, নাচ-গানের মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী এ উৎসব ‘ওয়ানগালা’ উদযাপন করে।

 ঐতিহ্যবাহী ‘ওয়ানগালা’ উদযাপন পরিষদ ২০১৬- নকমা দুর্জয় তজু-এর সভাপতিত্বে ‘ওয়ানগালা’ উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ-১ এর সংসদ সদস্য জুয়েল আরেং এমপি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিশেষ সহকারী আবদুস সোবহান গোলাপ, এক্সিম ব্যাংক-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া, ইন্ডিজেনাস পিপলস ডেভেলপমেন্ট সার্ভিস-এর সভাপতি সঞ্জীব দ্রং, ঢাকা মেট্রোপলিটান ক্রিস্টিয়ান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লি.-এর চেয়ারম্যান আগস্টিন পিউরিফিকেশন, ঢাকা ক্রিস্টিয়ান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি.-এর সভাপতি বাবু মার্কুজ গমেজ , জয়িতা ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফ হোসেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাকির হোসেন বাবুল, আদিবাসী নেত্রী আগস্টিনা চিছাম প্রমুখ।

 শুক্রবার সকালে দেবতাদের পূজার মাধ্যমে উৎসব শুরু হয়। এতে ‘আমুয়া’, ‘রুগালা’র মতো ধর্মীয় আচার পালন করা হয়। দুপুরের বিরতির পর শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে নিজস্ব ভাষায় গান গেয়ে শোনান গারো শিল্পীরা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ছিল গারোদের ঐতিহ্যবাহী জুম নাচ।

 ওয়ানগালা একই সঙ্গে ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব। ওয়ানগালা উৎসব পাহাড়ি জুমচাষকে কেন্দ্র করে উদযাপিত হয়ে থাকে। নতুন ফসল তোলার পরে নকমা (গ্রাম প্রধান) সবার সঙ্গে আলোচনা করে অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারণ করেন। এক যুগ ধরে প্রতিবছর নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে ঢাকায় বসবাসরত গারোরা এ উৎসব আয়োজন করছে।

 উৎসব উপলক্ষে বনানী মডেল হাইস্কুল প্রাঙ্গণে সমবেত হয় ঢাকায় বসবাসরত কয়েক হাজার গারো আদিবাসী। শহুরে জীবনের কর্মব্যস্ততার ফাঁকে দিনভর তারা নিজেদের মতো করে আনন্দে মেতে থাকে। বিদ্যালয়ের মাঠে গড়ে ওঠা অস্থায়ী খাবারের দোকানে ঘুরে ঘুরে স্বাদ নেয় নিজেদের ঐতিহ্যবাহী নানা পদের খাবারের। কেউ কেউ বাসায় খাবার জন্য কিনে নেন জুমের আলু, শামুক, কাঁকড়া, কুচিয়া ।

পাঠকের মতামত: