ঢাকা,শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

খাদ্য অফিসে দুর্নীতি বাড়ছে

কক্সবাজার প্রতিনিধি :::
জনগনের সেবা নিশ্চিত করার জন্য সরকার সমস্ত কর্মচারীতের বেতন দ্বিগুন করা সহ আরো অনেক সুযোগ সুবিধা দিয়েছে। এত কিছুর পরও কক্সবাজার খাদ্য অফিসে কর্মকর্তা কর্মচারীদের লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না তারা অনিয়ম দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছেন।
সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়নে ডিলার নিয়োগ তাদের কাছে নিয়মিত মালামাল সরবরাহ করা আবার কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচী ডিও ছাড় দেওয়া এমনকি মিল মালিকদের কাছ থেকে সব ধরনের বিল ভাওচার প্রতি টাকা আদায় করছে এতে ক্যাশিয়ারের ভুমিকা পালন করছে সদরের  খাদ্য পরিদর্শক। আবার কর্মচারীদের মধ্যে একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে তারা সাধারন মানুষ জনের কাছ থেকে জোর পূর্বক টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগিরা। তবে বরাবরের মত দৃশ্যমানএ সব অনিয়ম দূর্নীতি সম্পর্কে কিছুই বলতে নারাজ সংশ্লিষ্ঠ কর্তকর্তারা।
কক্সবাজার ঝিলংজা চান্দু পাড়ার এলাকার প্রান্তিক কৃষক আবু নাছের বলেন আমি গত কয়েক দিন ধরে খাদ্য অফিসে আসা যাওয়া করছি আমাদের কিছু বিল ছিল। তাছাড়া একটা মিলের ও বেশ কিছু বিল ছিল সেটা আমি সমন্নয় করেছি। তিনি বলেন মূলত টাকা নিয়ে দরকষা কষি চলছে সব সরকারি টাকা লুটপাট করছে এখানকার কর্মকর্তারা। তবে তারা নিজেরা সামনে আসে না কর্মচারীদের দিয়ে কথা বলায়। আমি সদর খাদ্য পরিদর্শক শায়লা ফেরদৌস কে টাকা দিয়ে বাইরে অপেক্ষা করছি আমার চেকের জন্য। সরজমিনে খাদ্য অফিসে গেলে সাংবাদিক পরিচয় না দিয়ে কথা প্রসঙ্গে খুরশকুল পাল পাড়া এলাকার জিসু বিশ্বাষ বলেন আমি বেশ কিছু দিন ধরে চেষ্টা করেও একটি ডিলার পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলাম কিন্তু তাদের চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিতে না পারায় আমি ডিলার পাইনি অথচ বর্তমানে যে ডিলারের দায়িত্ব পালন করছে তার বিরুদ্বে অনেক অনেক অভিযোগ আছে বর্তমানে আমি আরেকটি কাজে এসেছি। তিনি বলেন আমি নিজে স্বাক্ষি এখানে কি পরিমান অনিয়ম দূর্নীতি হয়। টাকা ছাড়া কোন কাজেই হয় না। খোঁজ নিলে জানা যাবে এবার জেলায় ৮৭ হাজার ৭ শত ২২ পরিবারকে খাদ্য সংকট মোকাবেলায় সুরক্ষা কর্মসূচীর আওতায় ১০ টাকা কেজিতে ৩০ কেজি মাসে চাল দেওয়া হবে। এ কাজের জন্য ৬ উপজেলায় ১২৮ জন ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে আমি প্রয়োজনে আদালতে গিয়ে বলতে পারবো  সদরের প্রতি জন ডিলারের কাছ থেকে সদর খাদ্য অফিসে ১৫/২০ হাজার টাকা নিয়েছে। এবং কিছু ক্যাশিয়ার ম্যাডাম ম্যান্টেইন করেছে।
পিএমখালী নুর মোহাম্মদ চৌধুরী পাড়া এলাকার ব্যবসায়ি কাউসার আলম বলেন  আমি যতটুক জানি ডিলার হিসাবে নিয়োগ পেয়েছে তাদের নিয়মিত চাল আটা বা সরকারি ভাবে যা বরাদ্দ তা দেওয়ার কথা সেখানেও কর্মকর্তাদের যারা বেশি খুশি করতে পারে তারা বরাদ্দও বেশি পায়। আর তারা কোন অনিয়ম করলেও সেটা তারা আমলে নিতে চায় না। সম্প্রতি এখানে ডিলাররা চালের বদলে সাধারন মানুষ কে আটা কিনতে বাধ্য করছে আমরা সেটা প্রতিবাদ করছি এমনকি স্থানিয় মেম্বারকে দিয়ে সদর খাদ্য কর্মকর্তাকে ফোন করিয়েছি তবুও তারা কর্ণপাত করেনি। আমি যতটুকু জানি সেখানে সব কিছু নিয়ন্ত্রন করে শায়লা নামের একজন মহিলা কর্মকর্তা। উনার সিনিয়র কর্মকর্তারাও কোন কিছু বলার থাকলে উনাকে বলতে বলে।
ঈদগাও গোমাতলী এলাকার নাছির উদ্দিন বলেন কিছু দিন আগে আমি একটি ডিও নিয়ে খাদ্য অফিসে গেলে রীতি মত যেন খেয়া ঘাটে গিয়েছি এরকম অবস্থা আমরা ২ জন ৪ টনের ডিও নিয়ে গেছি সেখানে প্রথমে একজন পিওন আমাদের এক মহিলা কর্মকর্তার কাছে নিয়ে গেল তিনি আমাদের স্বাক্ষর নেওয়ার পর সরাসরি ৮ শত টাকা দাবী করলো। আমরা হতবাক হয়ে ৫০০ টাকা দিতে চাইলে তিনি আমাদের রীতিমত বকাঝকা শুরু করে। পরে বাধ্য হয়ে ৮০০ টাকা দিলে তিনি স্বাক্ষর করে এ সময় তিনি আমাদের বলেন এগুলো অনেক পুরানো রীতি, আপনারা নতুন এসেছেন এ জন্য জানেন না। এ সময় আমরা দলীয় পরিচয় দিলে তিনি এ সব এখানে কাজে আসে না বলে জানান।  পরে বের হওয়া সময় এক পিওনও আমাদের কাছে টাকার জন্য পিছু নেয় পরে বাধ্য হয়ে তাকেও টাকা দিলাম। তিনি বলেন আমি বুঝতে পারছি না দুদক বা অন্যান্য দূর্নীতি বিরোর্ধী সংস্থা গুলো কি করে। আমি চিন্তা করছি দরকার হলে আমি নিজে অভিযোগ করবো।
কক্সবাজার পৌরসভার এক সিনিয়র কর্মকর্তা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিবেদককে বলেন আমাদের পান থেকে চুন খসলে সেটা পত্রিকায় শিরোনাম হয় কিন্তু খাদ্য অফিসের যে দীর্ঘ দিনের অনিয়ম সেটা কারো দেখার কেউ নেই। টাকা ছাড়া এক চুল ফাইল নড়ে না সেখানে। প্রতিটি কাজের জন্য নির্ধারিত টাকা দিতে হয়। রীতিমত ক্যাশিয়ার হিসাবে দায়িত্বে থাকেন সদর খাদ্য পরিদর্শক। এবং চেয়ারে বসেই নেয় এসব টাকা।
এ ব্যাপরে সদর খাদ্য পরিদর্শক শায়লা ফেরদৌসের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলতে বলেন।
আর সদর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা শাহ জামাল বলেন কারো কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়ে অভিযোগ পেলে সেটা তদন্ত করা হবে। তবে গ্রাম পর্যায়ে ডিলারদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আসছে বলে জানান তিনি।
একই ভাবে জেলা খাদ্য পরিদর্শক এসএম তাহসিনুল হক বলেন কেউ অভিযোগ করতে চাইলে লিখিত করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: