ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

কক্সবাজার পর্যটন শহরে ভাড়া লাইসেন্স চলছে ৮হাজার টমটম

tomtom_এম. শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার ॥

কক্সবাজার পৌরসভা কর্তৃক ইস্যূকৃত টমটম (ই-বাইক) লাইসেন্সের সংখ্যা হচ্ছে ২হাজার। এসব লাইসেন্সের মধ্যে অন্তত সহস্রাধিক লাইসেন্স বরাদ্দ পেয়েছে জনপ্রতিনিধি, কতিপয় রাজনৈতিক নেতা ও প্রভাবশালী মহল। অথচ এসব ব্যক্তিদের নেই কোন টমটম। স্বনামে-বেনামে এসব ব্যক্তিরা এক একজনের রয়েছে সর্বোচ্চ ১৫টি টমটম লাইসেন্স। অনেকে লাইসেন্স বরাদ্দ নিয়ে মোটা অংকের টাকায় বেচা-বিক্রিও করেছে।

অভিযোগ রয়েছে গত বছর কক্সবাজার পৌর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্যূকৃত ১হাজার টমটম লাইসেন্স থেকে প্রতিটি লাইসেন্সের বিপরীতে সর্বোচ্চ ৪০ হাজার টাকা হারে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। অথচ পৌরসভার ফান্ডে জমা হয়েছে রসিদ মূলে শুধুমাত্র প্রতি লাইসেন্সের বিপরীতে ৬হাজার টাকা।

এদিকে টমটম লাইসেন্স নিয়ে উচ্চ আদালত কর্তৃক দুইটি মন্ত্রনায়ের বিরুদ্ধে সুষ্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও গত বছর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ আরো অতিরিক্ত ১হাজার লাইসেন্স ইস্যু করে। অপরদিকে ওই ২ হাজার লাইসেন্সের দোহাই দিয়ে শুধু পৌর শহরেই চলাচল করছে ৮ সহস্রাধিক বৈধ-অবৈধ টমটম। একটি লাইসেন্সের নামে ৪-৫টি টমটম করার চাঞ্চল্যকর তথ্যও রয়েছে।

একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, প্রভাবশালীসহ বিভিন্ন মহলের নামে বরাদ্দকৃত প্রতিটি টমটম লাইসেন্স ভাড়া দেওয়া হচ্ছে প্রতিমাসে ২ হাজার ৫শ টাকা হারে। এসব লাইসেন্স মালিক ভাড়া লাইসেন্সের জামানত হিসাবে নিচ্ছে ৫হাজার টাকা। টমটম নেই এমন সহস্রাধিক ব্যক্তিদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে রয়েছে, তারাবনিয়ার ছড়ার শাহ আলম। বাজারঘাটার মফিজ কোম্পানীর ছেলে নবাব মিয়া। কাউন্সিলার চম্পা উদ্দিন। বাহারছড়ার রহমত উল্লাহ। মহাজের পাড়ার পরিতোষ বড়–য়া। একই এলাকার নুর মোহাম্মদ। বাহার ছড়ার সৌদি প্রবাসী আবদুর রহমানের নামে ১৫টি। একই এলাকার মোহাম্মদ সোলাইমানের স্ত্রীর নামে রয়েছে ৪টি। এভাবে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, সংবাদকর্মী, আইনজীবী, ব্যবসায়ী সহ আরো বিভিন্ন ব্যক্তিদের নামে বেনামে রয়েছে টমটমের লাইসেন্স। যা লাইসেন্স বরাদ্দের তালিকা নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করলে এর সত্যতা মিলবে।

অভিযোগ উঠেছে, ২হাজার লাইসেন্স নবায়ন ফি নিয়েও ঘটছে বিপত্তি। লাইসেন্স নবায়ন করতে গিয়ে বিনা রসিদে আদায় করা হচ্ছে ১০-১৫হাজার টাকা । অথচ পৌরসভার ফান্ডে জমা হচ্ছে মাত্র ৫হাজার টাকা। এর বিপরীতে ভ্যাট, ট্যাক্স, সোনালী ব্যাংককে জমা দেওয়া হয় আরও ৭৫০ টাকা। অবশিষ্ট টাকা গুলো পৌর সভার কোন খাতে যাচ্ছে এ ধরনের প্রশ্ন ঘুরপাকখাচ্ছে সচেতন মহলে।

এ ব্যাপারে বক্তব্য নেওয়ার জন্য কক্সবাজার পৌরসভা মেয়র (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ মাহবুবুর রহমান চৌধুরীর সেল ফোনে যোগাযোগ করেও তিনি রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

পাঠকের মতামত: