ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

পর্নো তারকাকে ১০ হাজার ডলার প্রস্তাব করেছিলেন ট্রাম্প!

37016_jessica-drakeঅনলাইন ডেস্ক :::

ডনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এবার যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছেন পর্নো তারকা ও পরিচালক জেসিকা ড্রেক। তিনি বলেছেন, শারীরিক সম্পর্কের জন্য তাকে ১০ হাজার ডলার প্রস্তাব করেছিলেন ট্রাম্প। এ নিয়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মোট ১১ জন নারী একই রকম অভিযোগ আনলেন। জেসিকা বলেছেন, এক দশক আগে ট্রাম্প তার ফোন নম্বর চান। ২০০৬ সালের যেদিন তাদের সাক্ষাত হয়েছিল সেদিন রাতেই জেসিকাকে তার স্যুটে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। তার আমন্ত্রণ রক্ষা করে ওই স্যুটে হাজির হয়েছিলেন জেসিকা। সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন আরও দু’জন নারীকে। কারণ, একা একা সেখানে যেতে তিনি সাহস পাচ্ছিলেন না। এ বিষয়ে শনিবার লস অ্যানজেলেসে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেসিকা। তিনি বলেছেন, আমরা তার স্যুটে যাওয়ার পরই ট্রাম্প আমাদের প্রত্যেককে জড়িয়ে ধরলেন। ‘হাগ’ (আলিঙ্গন) দিলেন। আমাদের অনুমতি না নিয়েই তিনি আমাদের চুমু দেয়া শুরু করলেন। জেসিকা এতে সেখানে এক অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়েন। তিনি ৩০ থেকে ৪৫ মিনিটের মধ্যে ট্রাম্পের অফিস ত্যাগ করেন। এরপরেই ট্রাম্পের এক সহকর্মীর কাছ থেকে তিনি একটি ফোন কল পান। তিনি জেসিকাকে ট্রাম্পের রুমে একা যাওয়ার আমন্ত্রণ জানান। কিন্তু সেই আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেন জেসিকা। এ খবর দিয়েছে অনলাইন সিএনএন। এতে বলা হয়েছে, এখন থেকে এক দশক আগে এসব ঘটনা ঘটে যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদায় লেক তাহোতে একটি চ্যারিটি গলফ টুর্নামেন্টে। ২০০৫ সালের ‘এক্সেস হলিউড’ টেপ প্রকাশ হওয়ার পর একের পর এক নারী ডনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনছেন। তাতে যা দেখা যায় তাহলো, ওই টেপে ট্রাম্প নারীদের নিয়ে তার যে নোংরা মানসিকতার প্রকাশ ঘটিয়েছেন, অভিযোগকারী নারীদের বর্ণনাও তার সঙ্গে মিলে যায়। তিনি নারীদের ভোগ করার ক্ষেত্রে তাদের অনুমতির প্রয়োজন নেইÑ এমন একটি মনোভাব প্রকাশ ঘটিয়েছেন। অভিযোগকারী নারীরাও তাই বলেছেন, ট্রাম্প তাদের অনুমতি না নিয়েই তাদের সঙ্গে অশালীন কর্মকান্ডে লিপ্ত হওয়ার চেষ্টা করেছেন। এমন অভিযোগকারী নারীর সংখ্যা কমপক্ষে ১১ জন। তার মধ্যে সর্বশেষ হলেন জেসিকা ড্রেক। শনিবার তিনি এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তার চিবুক গড়িয়ে ঝরতে থাকে অশ্রু। জেসিকা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সহকর্মীর প্রত্যাশামতো তিনি আমাকে না পেয়ে নিজে আমার ফোনে ফোন করেন। আমাকে তার অফিসে ফিরে যেতে আহ্বান জানান। বলেন, চলো আমরা রাতের খাবার খেতে বাইরে যাই। অথবা তার সঙ্গে কোনো এক পার্টিতে যোগ দেয়ার আহ্বান জানান। কিন্তু এবারও আমি তার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করি। তখন ট্রাম্প আমাকে বলেন, তুমি কি চাও? কত (ডলার) চাও? তার আমন্ত্রণ আমি প্রত্যাখ্যান করার পর তিনি আমাকে বলেন, আমি তোমাকে ১০ হাজার ডলার দেবো। যদি আমার প্রস্তাব রাখো তাহলে আমার প্রাইভেজ জেট ব্যবহার করতে পারবে। ওই সংবাদ সম্মেলনে ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে জেসিকা ড্রেককে একসঙ্গে একটি ছবিও দেখানো হয়। এ সময় জেসিকার পক্ষ অবলম্বন করেন নারী বিষয়ক অধিকারকর্মী গ্লোরিয়া অলরেড। এর আগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যেসব যৌন হয়রানির অভিযোগ আনা হয়েছে তা জোর দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছে ট্রাম্প শিবির। এবার জেসিকার অভিযোগও তারা প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, এ কাহিনী সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে অনেক মানুষ এ রকম ছবি তুলে থাকেন। এমন হাজারো ছবি আছে। জেসিকা যে ছবি দেখিয়েছেন সেটা তেমনই একটি ছবি। জেসিকা ড্রেককে চেনেন না ট্রাম্প। তার কথা তার স্মরণেও নেই। তাকে চেনার কোনো আগ্রহও তার মধ্যে নেই। ট্রাম্পের অবমাননা করার জন্য এটা হলো হিলারি ক্লিনটনের প্রচারণা শিবিরের আরেকটি কৌশল। এর মধ্য দিয়ে হিলারির প্রচারণা শিবির নির্বাচনে জালিয়াতির আরেকটি কৌশল অবলম্বন করেছে। ওদিকে যেসব নারী ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনেছেন তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচনের পর মামলা করার হুমকি দিয়েছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। শনিবার তিনি এমন হুমকি দিয়েছেন। তবে এদিন তিনি ক্লিভল্যান্ডে প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন। জেসিকা ড্রেকের অভিযোগ সম্পর্কে তিনি কিছু বলেন নি। এর জবাবে গ্লোরিয়া অলরেড বলেছেন, ট্রাম্প যদি ভেবে থাকেন যে, এসব কৌশলের মধ্য দিয়ে তিনি অভিযোগকারীদের কণ্ঠ স্তব্ধ করে দিতে পারবেন, অন্য নারীদের এমন অভিযোগ নিয়ে সামনে আসা বন্ধ করে দিতে পারবেন তাহলে তা হবে তার জন্য হতাশাজনক। ডনাল্ড ট্রাম্প ভয় দেখিয়ে নারীদের কণ্ঠ স্তব্ধ করে দিতে পারবেন না।

পাঠকের মতামত: