ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

ঈদগাঁওতে ভূঁয়া সার্জন ডাঃ ইউছুপ আলীর অপারেশন প্রতারণা ফাঁস

medicalনাছির উদ্দীন, সদর প্রতিনিধি :::

সদর উপজেলার ঈদগাঁওর কথিত সার্জন ডাঃ ইউছুপ আলীর বিরুদ্ধে প্রসূতীকে জোর পূর্বক সিজারিয়ান অপারেশন চেষ্টার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ক্ষুদ্ধ স্বজনদের চাপের মুখে ঘটনাটি মোটা অংকের টাকায় ধামাচাপা দেয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে প্রকাশ। ২১ অক্টোবর শুক্রবার দিনে ঈদগাঁও মডেল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। সরেজমিনে জানা যায়, ইসলামাবাদ ইউনিয়নের আউলিয়াবাদ গ্রামের ছৈয়দ আলমের ছেলে সেলিমের অন্তঃসত্তা স্ত্রী আসমার প্রসব বেদনা শুরু হলে গত শুক্রবার সকাল ১১ টার দিকে ঈদগাঁও বাজারের হাইস্কুল গেইটস্থ নিউ মার্কেটের ২য় তলায় ঈদগাঁও মডেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ ইউছুপ আলী প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর দুপুরের দিকে প্রসূতি আসমাকে সিজারিয়ান অপারেশন করতে হবে বলে জানিয়ে টাকা জমা ও কন্ট্রাক্ট ফরমে স্বামী সেলিমকে স্বাক্ষর করতে বলে। স্বাভাবিক ডেলিভারী চেষ্টার অনুরোধ জানালে চিকিৎসক প্রসূতীর স্বামীকে অবশ্যই অপারেশন করতে হবে বলে জানান। অন্যথায় চিকিৎসা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিলে সেলিম ও তার স্বজনরা রক্তাক্ত অবস্থায় স্ত্রী আসমাকে বাজারের পুরাতন ফোরস্টার সংলগ্ন ডাঃ খালেছার কাছে নিয়ে গেলে সে অল্প সময়ে স্বাভাবিক ডেলিভারী করেন। এ ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়ে সেলিম ও তার স্বজনরা মডেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে তার স্ত্রীকে জোর পূর্বক সিজার চেষ্টার কারণ জানতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রথমদিকে উল্টো তাদের হুমকি-ধমকি দেয়। পরে আরো লোকজন জড়ো হতে শুরু করলে কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে নানা দেন দরবার শুরু করে। অবশেষে অবস্থা বেগতিক দেখে পরদিন সকালে কর্তৃপক্ষ রোগীর এলাকার বিভিন্ন প্রভাবশালী লোকজনের কাছে ধরণা দিয়ে মোটা অংকের টাকায় ঘটনাটি ধামাচাপা দেয় বলে স্বীকার করেন প্রসূতির স্বামী সেলিম ও স্বজনরা। একই দিন ঈদগাঁও জাগির পাড়ার সাবেক মেম্বার ছৈয়দ আলমের ছোট ভাই নুর আহমদের অন্তঃসত্তা স্ত্রীর প্রসব বেদনা শুরু হলে উক্ত হাসপাতালে নিয়ে গেলে একইভাবে সিজার করার পায়তারা শুরু করে। নুর আহমদ অবস্থা বুঝতে পেরে তার স্ত্রীকে পাশর্^বর্তী ডিজিটাল হাসপাতালে নিয়ে গেলে স্বাভাবিকভাবে ডেলিভারী হয় বলে জানান। এভাবেই বছরের পর বছর কথিত সার্জন ডাঃ ইউছুপ আলী উক্ত হাসপাতালের নাম প্রথমদিকে ডায়াবেটিস কেয়ার সেন্টার, পরে ডায়াবেটিস কেয়ার সেন্টার এন্ড হাসপাতাল এবং সর্বশেষ ঈদগাঁও মডেল হাসপাতাল নাম পরিবর্তন করে সার্জন না হয়েও নিজেকে বড় বিশেষজ্ঞ জাহির করে এলাকার সহজ-সরল লোকদের সাথে চিকিৎসার নামে প্রতারণা করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অহেতুক সিজারের মত ঝুকিপূর্ণ অপারেশন করে মহিলাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। ইতিপূর্বে এ হাসপাতালের ভুল চিকিৎসায় ইসলামপুর জুমনগরের হাজী সোনা আলীর স্ত্রী রইজা খাতুন, খুটাখালী গর্জনতলির জহিরের স্ত্রী মর্জিনা, নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারী বটতলী বাজার সংলগ্ন করলিয়া মুরা এলাকার মিজানুর রহমানের স্ত্রী আয়েশা আক্তারসহ আরো অসংখ্য রোগীর মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ঐ সময় বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে জেলা সিভিল সার্জনের নির্দেশে একটি তদন্ত টীম সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উক্ত ভুল চিকিৎসার সত্যতা পেয়ে হাসপাতালের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিলেও লাখ টাকার বিনিময়ে তদন্ত প্রতিবেদনটি ধামাচাপা দিয়ে ফের মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা শুরু করে। রাতারাতি পরিবর্তন করে হাসপাতালের নাম। তাই সচেতন ঈদগাঁওবাসী চিকিৎসক নামধারী এ অর্থ পিপাসু কসাইয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা ঘটনাটি মিমাংসা করেছে বলে দাবী করে। অভিযোগ উঠা ডাঃ ইউছুপ আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে ভুল চিকিৎসার বিষয়টি এড়িয়ে যায়।

পাঠকের মতামত: