ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

অবশেষে সেন্টমার্টিন থেকে ফেরত এসেছে আটকাপড়া ২৩৫ পর্যটক

keary-sinগিয়াস উদ্দিন ভুলু, টেকনাফ ::

গত ৩ দিন ধরে সাগর উত্তাল, বৈরী আবহাওয়া, ৩ নং সর্তক সংকেত থাকার কারনে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সাগর পাড়ি দিয়ে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমাটিনে বেড়াতে আসা প্রায় ২৫০ জন দেশী-বিদেশী পর্যটক আটকা পড়ে যায়। আবহাওয়ার পরিস্থিতি খারাপ থাকায় টেকনাফ উপজেলা ও জেলা প্রশাসন জাহাজ চলাচল ও নৌকা চলাচলে নিষেদ্ধাঞ্জা জারি করে। এতে সেন্টমাটিন দ্বীপ থেকে আসতে না পেরে আটকা পড়ে যায় ২৫০ জন দেশী-বিদেশী পর্যটক। অবশেষে গতকাল ১৩ অক্টোবর জাহাজ কর্তৃপক্ষ প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে আটকা পড়া যাত্রীদের ফেরত আনার জন্য দুপুর ২ টার দিকে কেয়ারী গ্রুপের দুইটি জাহাজ সেন্টমাটিনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। পরে সন্ধ্যা ৬ টার দিকে আটকা পড়া যাত্রীদের নিয়ে টেকনাফে পৌছে দুই জাহাজ।

উল্লেখ্য, গত ১০ অক্টোবর সকালে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা টেকনাফ থেকে তিনটি জাহাজে করে প্রায় দুই হাজার দেশী-বিদেশী পর্যটক সেন্টমার্টিন ভ্রমণে যায়। ওইদিন বিকেলে সেন্টমাটিন ভ্রমন করে প্রায় ১৬-১৭ শত পর্যটক ফিরে আসে টেকনাফ জেটি ঘাটে। কিন্তু প্রায় ২৫০ জন দ্বীপের বিভিন্ন হোটেলে থেকে যায়। পরের দিন সাগর উত্তাল, বৈরী আবহাওয়া ও সর্তক সংকেত থাকার কারনে বন্ধ হয়ে যায় জাহাজ ও নৌ-চলাচল। এর পর থেকে সেন্টমার্টিনে অবস্থান করা পর্যটকেরা টেকনাফে ফিরে আসতে পারেনি।

টেকনাফ টু সেন্টমাটিন কেয়ারী সিন্দাবাদ গ্রুপের ব্যবস্থাপক মো. শাহ আলম বলেন, সাগর ও নাফনদীর প্রচন্ড উত্তাল থাকায় গত ৩ দিন ধরে কোনো জাহাজ টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন উদ্দেশ্যে ছেড়ে যেতে পারেনি। অবশেষে গতকাল ১৩ অক্টোরব উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে দুপুর ২টার দিকে আটকা পড়া পর্যটকদের ফিরিয়ে আনতে টেকনাফ থেকে ২ টি জাহাজ সেন্টমার্টিনে উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে পর্যটকবাহী দুইটি জাহাজ আটকা পড়া যাত্রীদের নিয়ে টেকনাফ জেটি ঘাটে ফিরে আসতে সক্ষম হয়।

 ##########

মিয়ানমারে বিজিপি-সন্ত্রাসী সংঘর্ষ

৫ দিন ধরে টেকনাফ স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি বন্ধ

গিয়াস উদ্দিন ভুলু, টেকনাফ :::

কক্সবাজার টেকনাফ পাশ^বর্তী দেশ মিয়ানমারের মংন্ডু শহরের বিভিন্ন এলাকায় গত ৫ দিন ধরে সীমান্ত রক্ষি বিজিপি ক্যাম্পে হামলা, অন্ত্র লুট, বিজিপি-সন্ত্রাসীদের মধ্যে গুলি বিনিময় ও সংঘর্ষে মিয়ানমারের পুলিশ সদস্যসহ প্রায় অর্ধশতাধিক নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সেই খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে টেকনাফ উপজেলা সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড নৌশ-পহরী সীমান্ত রক্ষি বিজিবি সদস্যরা কড়া নিরাপত্তা জোরদার করে। বন্ধ করে দেওয়া হয় নাফনদীতে নৌ-চলাচল, বন্ধ করে দেওয়া হয় টেকনাফ স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন, টেকনাফ টু মংন্ডু ট্রানজিট যাতায়াত। বন্ধ হয়ে যায় টেকনাফ স্থলবন্দরের সাথে মিয়ানমারের আমদানি-রপ্তানি। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ৫ দিন যাবত মিয়ানমার থেকে বর্ডার পাস নিয়ে আসা প্রায় ২শত নাগরিক আটকা পড়ে যায় বাংলাদেশে। অবশেষে গতকাল ১৩ অক্টোবর বাংলাদেশ অভিবাসন-ট্রানজিট কর্মকর্তাদের সহযোগীতায় আটকা পড়া ১২৭ জন নারী-পুরুষ মিয়ানমার নাগরিকে স্বদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। টেকনাফ স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন জেটি দিয়ে তাদেরকে ফেরত পাঠানো হয়।

উল্লেখ্য, গত ৮ অক্টোবর গভীর রাত থেকে পাশ^বর্তী দেশ মিয়ানমার সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় বিজিপি ও সন্ত্রাসীদের মধ্যে হামলা,ভাংচুর, গোলাগুলির সুত্র পাত সৃষ্টি হয়। সেই সুত্র ধরে গত ৫ দিন যাবত বন্ধ হয়ে যায় টেকনাফ টু মংন্ডু ট্রানজিট যাতায়াত, বন্ধ হয়ে যায় নাফনদীতে নৌকা চলাচল। এর পর টেকনাফ থেকে বর্ডার পাস নিয়ে যাওয়া ১৮জন বাংলাদেশী ব্যবসায়ী আটকা পড়ে মিয়ানমারে। অপরদিকে মিয়ানমার থেকে বর্ডার পাস নিয়ে ২শত নাগরিক যেতে না পেরে বাংলাদেশে আটকা পড়ে যায়। কিন্তু মিয়ানমার ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে গত ১০ অক্টোবর আটকা পড়া ১৮ জন বাংলাদেশীকে ফেরত নিয়ে আসা হয়। অপরদিকে সাগর উত্তাল, বৈরী আবহাওয়া প্রচন্ড খারাপ থাকার কারনে মিয়ানমারের ২শত নাগরিকে স্ব-দেশে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে টেকনাফ স্থলবন্দরের অভিবাসন ট্রানজিট কর্মকর্তারা।

টেকনাফ স্থল বন্দরের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে থাকা অভিবাসন-ট্রানজিট কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন আরো জানান, গত ৫ দিন ধরে পাশ^বর্তী দেশ মিয়ানমারে সংঘাত সৃষ্টি, বৈরী আবহাওয়া সাগর উত্তাল থাকার কারনে বর্ডার পাস নিয়ে আসা ২শত নাগরিকে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি। অবশেষে গতকাল আবহাওয়া পরিস্থিতি ভাল হওয়ায় এবং মিয়ানমারের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের যোগাযোগ করে আটকা পড়া ২শত মিয়ানমার নাগরিকের মধ্যে ১২৭ জন মিয়ানমার নাগরিকে স্ব-দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ৭৫ জন, মহিলা ৫২ জন। বাকিদেরকেও এইভাবে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।

টেকনাফ স্থল বন্দর কাস্টমস কর্মকর্তা ও বন্দর ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ করে জানা যায়, মিয়ানমারের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে গত ৫ দিন ধরে মিয়ানমার থেকে কোন পন্যবাহী ট্রলার টেকনাফ স্থলবন্দরে আসেনি। এবং টেকনাফ থেকে কোন পন্যবাহী ট্রলার মিয়ানমারের উদ্দেশ্যে যেতে পারেনি এতে বন্ধ রয়েছে আমদানি ও রপ্তানি।

পাঠকের মতামত: