ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

অস্ত্র তুমি কার ?

imagesনাজিম উদ্দিন, পেকুয়া :::

পেকুয়ায় পুলিশের অস্ত্র উদ্ধার নিয়ে জট খোলেনি। ইউপি সদস্য ও ওর্য়াড় আ’লীগের সাধারন সম্পাদকসহ ৫ব্যবসায়ীকে প্রায় ৪৫ঘন্টা (এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত) পেকুয়া থানা হাজতে আটকিয়ে রেখেছে পুলিশ। একটি অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী ও পেকুয়া থানা কম্পাউন্ডে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। আটকের পর থেকে গতকাল সোমবার রাত ৮টা পর্যন্ত শতশত এলাকাবাসি ও ব্যবসায়ীরা পেকুয়া থানায় জড়ো হয়েছে। অস্ত্র উদ্ধার ও আটকের বিষয়টি গত তিনদিন ধরে অমিমাংসিত থেকে গেছে। পুলিশ ওই সময় থেকে অদ্যবদি পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেননি। তবে বিষয়টি উদঘাটন ও নিষ্পত্তি করতে পুলিশ কর্মকর্তারা কয়েক দফা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পেকুয়া থানার ওসি জিয়া মো.মোস্তাফিজ ভুঁইয়া গত ররিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। একইদিন সহকারি পুলিশ সুপার (সার্কেল) মতিউল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। গতকাল সোমবার বিকেলে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফেরদৌস আহমদও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তারা পেকুয়া থানায় ওসিকে নিয়ে সন্ধ্যায় বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। দীর্ঘক্ষন বৈঠকে কি সিদ্ধান্ত হয়েছে সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে রাজাখালী ইউনিয়নের আরবশাহ বাজারে পুলিশ কর্মকর্তাদের দেখতে পেয়ে শতশত স্থানীয় ও ব্যবসায়ীরা জড়ো হন। তারা অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনাকে রহস্যজনক ও নাটকীয় বলে সাক্ষি দেন। এ ঘটনাকে সাজানো ও পরিকল্পিত চক্রান্ত বলে জানান। এদিকে অস্ত্র উদ্ধার ও আটকের পর দেন দরবারে জড়িয়ে যান ওসি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আটককৃতদের কয়েক নিকটতম আতœীয় জানায় আটককৃতদের মুক্ত করতে ওসি ৫লাখ টাকা দাবি করেন। আমরা এক লাখ টাকা দেব বলেছি। তিনি এখনো রাজি হননি। নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা গেছে দু’লাখ টাকার দফারফা চলছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সহকারি পুলিশ সুপার অস্ত্র উদ্ধার ও আটকের বিষয়ে ওসিকে কি সিদ্ধান্ত দিয়েছে সেটির উপর নির্ভর করছে বিষয়টি। গত ৪৫ঘন্টা ধরে আটককৃতরা পেকুয়া থানায় বন্দি রয়েছে। তারা মুক্ত হবেন না পুলিশ তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করবেন সেটি এখনো ঝুলে রয়েছে। আটককৃতদের ভাগ্যে কি জুটেছে সেটি বিধতায় জানে। তবে অস্ত্রসহ ইউপি সদস্যসহ ৫ব্যবসায়ী আটকের ঘটনায় মানুষ ফুসে উঠার মত পরিস্থিতি বিরাজ করছে রাজাখালীতে। বিষয়টি জানা জানি হলে রাজাখালীসহ পেকুয়ায় পুলিশের নিরপেক্ষতা ও ভাবমুর্তি চরমভাবে প্রশ্ন বিদ্ধ হয়েছে। সুশীল সমাজ প্রশ্ন তুলেছেন আসলে অস্ত্রটি কার। পুলিশের দেনদরবার ও অস্ত্র উদ্ধারে একাধিক ঘটনায় স্থানীয়রা মত দিয়েছেন এ অস্ত্র আটককৃতদের নয়। কোন অশুভ শক্তি পুলিশকে ম্যানেজ করে ইউপি সদস্য নেজুকে ঘায়েল করতে এ নাটক রচনা করেছে। এদিকে সম্প্রতি মগনামা ইউনিয়নেও পুলিশকে ম্যানেজ করে স্বেচ্ছাসেবকলীগের এক নেতাকে অস্ত্র ও ইয়াবা দিয়ে আটক করিয়েছে বিএনপি থেকে নির্বাচিত চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিম। এর কয়েকদিন যেতে না যেতে রাজাখালীতেও একই ঘটনার সুত্রপাত হয়। সাধারন মানুষের প্রশ্ন অস্ত্রগুলি পুলিশের নাকি আটককৃতদের। এবার কার পালা। পুলিশের টার্গেট এবার কে। অস্ত্র তুমি কার এমন প্রশ্ন সাধারন জনগনের। রাজাখালী ইউনিয়ন আ’লীগ সাধারন সম্পাদক আবুল কাসেম আযাদ জানায় নেজু মেম্বার ওয়ার্ড় আ’লীগের সাধারন সম্পাদক। তিনি প্রতিবাদি ও সৎ সাহসি নেতা। তাকে চক্রান্তের মাধ্যমে অস্ত্রদিয়ে ঘায়েল করা হয়েছে। আমরা এ ঘটনায় অত্যন্ত মর্মহত হয়েছি। বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে জানানো হয়েছে। এভাবে হলে আ’লীগ নিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। সাবেক চেয়ারম্যান ও আ’লীগ নেতা নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুল জানায় নেজু অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে চক্রান্তের শিকার হয়েছে। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করছি। বিষয়টি ছাড় দেয়ার মত নয়।

এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার ওসি জিয়া মো.মোস্তাফিজ ভুঁইয়া জানায় বিষয়টি সিনিয়র স্যাররা যেভাবে সিদ্ধান্ত দেবেন সেভাবে হবে। সহকারি পুলিশ সুপার (সার্কেল) মতিউল ইসলাম এর কাছে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন আমি মিটিংয়ে আছি। বিষয়টি পরে জানাব। প্রসঙ্গত গত ৮অক্টোবর শনিবার রাতে রাজাখালী আরবশাহ বাজার থেকে ইউপি সদস্য নেজাম উদ্দিন নেজুসহ বাজারের ৫ব্যবসায়ীকে আটক করে। এ সময় ইউপি সদস্যের কার্যালয় থেকে একটি দেশীয় তৈরি অস্ত্র উদ্ধার করে।

পাঠকের মতামত: