ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

চিকিৎসকের কাছে স্ত্রীর স্বীকৃতি চায় কলেজছাত্রী, মামলা ছিনতাইয়ের

image_166905_0লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :::
লক্ষ্মীপুর: দিনভর অনেক নাটকীয়তায় শেষে লক্ষ্মীপুর বিএমএর সভাপতি এবং লক্ষ্মীপুর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ আশফাকুর রহমান মামুনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।

রোববার বিকেলে কলেজছাত্রী ও মামুনের স্ত্রী দাবিদার ফারহানা আক্তার বাদী হয়ে সদর থানায় ওই মামলা দায়ের করেন।

 মামলায় আরো তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। অপরদিকে শুক্রবার রাত থেকে রোববার সারাদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সর্বমহলে বিষয়টি ছিল টপ অব দ্য লক্ষ্মীপুর।

পুলিশ সুপার আসম মাহাতাব উদ্দিন মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ছিনতাই ও হামলার ঘটনায় ডাঃ আশফাকুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ছাড়া আরো কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।
আসামিদের গ্রেফতারের অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।
এ দিকে ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে মূল ঘটনাকে দামা-চাপা দিতে হামলা ও ছিনতাইয়ের মামলা নিয়েছে পুলিশ।
এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিজানান তারা।

রোববার দুপুরে ডাঃ আশফাকুর রহমান মামুনের সমর্থিত প্রভাবশালীদের চাপে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফারহানা আক্তারকে সদর হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়া হয় বলে অভিযোগ করেন ফারহানা আক্তার।
ফারহানা আক্তার আরো জানায়, বিএমএর সভাপতি এবং লক্ষ্মীপুর স্বাস্থ্য ও পরিবার ও পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ আশফাকুর রহমান মামুনকে ভালোবেসে এবং পাওয়ার জন্য সব করেছি। কিন্তু এখন দেখি সব মিথ্যা। সে একজন প্রতারক। বিয়ের প্রলোভান দিয়ে ঢাকা শহরের তিতুমীর কলেজের সামনে হোটেল অবকাশ এবং সিলেটের সুরমা ভ্যালী রেস্ট হাউজসহ বিভিন্ন স্থানে ডাঃ আশফাকুর রহমান মামুন আমার সঙ্গে একাধিকবার দৈহিক মেলামেশা করে।

তার দাবি, গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর ৩০ লাখ টাকা দেন মোহরে সিলেট এলাকার সুরমা ভ্যালী রেস্ট হাউজে ডাঃ ইমামুলের মধ্যস্থতায় ডাঃ আশফাকুর রহমান মামুনের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর তার স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেয়া নিয়ে তার সঙ্গে আমার দূরত্ব সৃষ্টি হয়।
তিনি বলেন, আমি মামুনের কাছে কাবিননামা চাইলে সে আমাকে লক্ষ্মীপুরে না আসার জন্য বলে এবং আসলে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেন। এর জের ধরে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে মামুন তার লোকজন নিয়ে শাখাঁরী পাড়ার ছোটপুল এলাকায় আমার ওপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে পেটে এবং বুকে কুপিয়ে আহত করে।

বর্তমানে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ থেকে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ডিগ্রি পরীক্ষা দিচ্ছিলেন ফারহানা। এ ছাড়া দীর্ঘদিন সেইভ দ্যা চিলড্রেনের মা-মনি প্রকল্পের লক্ষ্মীপুর  অফিসে তিনি চাকরি করতেন। এ সুবাধে ডাঃ আশকাফুর রহমান মামুনের সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে উঠে।
ফারহানার ভাষ্য, এ সব ঘটনায় মামলা করতে সদর থানায় গেলেও পুলিশ আমার দেয়া অভিযোগ পাল্টিয়ে নিজেদের মন মতো অভিযোগ তৈরি করে মামলা নিয়েছেন।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন ডাঃ আশফাকুর রহমান মামুন।
তিনি বলেন, এটি একটি ষড়যন্ত্র ওই মহিলা নিজের শরীর কেটে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
এ ছাড়া ফারহানা নামে ওই মহিলা আমাকে বিয়ে করতে চায় বলেও জানান তিনি।

সূত্র বলছে, লক্ষ্মীপুর শহরের শাখাঁরীপাড়া ছোটপুল এলাকায় বন্ধবী সবিতা রাণী নামে এক ভিজিটরের বাসায় থাকতেন ফারহানা। শুক্রবার লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ থেকে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ডিগ্রি পরীক্ষা দিচ্ছিলেন তিনি।
পরীক্ষা শেষে ফারহানা বিকেলে পাবনার উদ্দেশ্য সবিতা রানীর বাসা থেকে বের হন। অপেক্ষা করেও বাস কাউন্টারে টিকিট না পেয়ে ফের বাসায় ফেরার পথে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে ৩/৪জন যুবক তার পথ গতিরোধ করে তার ওপর হামলা করে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এরপর তাকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান জেলা প্রশাসক মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুজ্জামান, সহকারী পুলিশ সুপার খন্দকার শাহনেওয়াজসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

পাঠকের মতামত: