ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

ইলিশ রক্ষায় জেলায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা, প্রস্তুত প্রশাসন

dc-officeআতিকুর রহমান মানিক :

আসন্ন মা-ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম উপলক্ষে কক্সবাজার জেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেনকে সভাপতি ও জেলা মৎস্য  কর্মকর্তা অমিতোষ সেনকে সদস্য সচিব করে গঠন করা হয়েছে জেলা টাস্কফোর্স কমিটি। আগামী পূর্ণিমায় জাতীয় মাছ ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসূমে ১২ অক্টোবর থেকে ০২ নভেম্বর পর্যন্ত ২২  দিন কক্সবাজার জেলার সর্বত্র ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরন ও বিক্রয় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ সময় জেলা প্রশাসন, মৎস্য অধিদপ্তর, পুলিশ প্রশাসন, নৌ বাহিনী ও কোস্ট গার্ডের সমন্বয়ে গঠিত টীম জেলাব্যাপী অভিযান পরিচালনা করবেন। সাগরে মা- ইলিশ মাছের ডিম পাড়ার পরিবেশ সৃষ্টি প্রধান প্রজনন মৌসূমে মা-ইলিশ সংরক্ষন অভিযান -২০১৬ উপলক্ষে কার্যক্রম বাস্তবায়নে কর্মপরিকল্পনা নির্ধারনের উদ্যেশ্যে প্রস্তুতিমূলক সভায় একথা জানানো হয়।  জেলা টাস্কফোর্স কমিটির আয়োজনে গতকাল (শনিবার) সকাল ১১ টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কাজী মোঃ আব্দুর রহমান। এতে উপস্হিত ছিলেন কমিটির সদস্য সচিব জেলা মৎস্য কর্মকর্তা অমিতোষ সেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আনোয়ারুল নাসের ও সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ।   জেলা মৎস্য কর্মকর্তা তাঁর বক্তব্যে বলেন, উক্ত নিষেধাজ্ঞা যথাযথ বাস্তবায়ন ও মনিটরিং এর জন্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মৎস্য অধিদপ্তরের টীম সকল স্হানীয় হাটবাজার, অবতরনকেন্দ্র, আড়ত  ও হিমাগারসমূহ নিয়মিত পরিদর্শন করবেন। আগামী ১১ অক্টোবরের মধ্যে সকল যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক ফিশিংবোট সাগর থেকে ফিরে আসতে হবে এবং নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে উপকূলে প্রত্যাবর্তনকারী সকল ফিশিংবোট ও মাঝিমাল্লাদের বিরূদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্হা নেয়া হবে। বক্তারা বলেন, বরফকল ও ফিশিংবোটে ডিজেল সরবরাহকারী ডিপোগুলো উক্ত সময়ে বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। উপরোক্ত সময়ে সাগরে নৌ -বাহিনী ও কোষ্টগার্ডের টহল জোরদার করা হবে ও সাগরে কোন ফিশিংবোট পাওয়া গেলে তা জব্দ করে মালিক ও কর্মচারীদের বিরূদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে। বাঁকখালী মোহনা ও অন্যান্য স্হানে মৎস্য অধিদপ্তর ও কোষ্টগার্ডের যৌথ চেকপোস্ট স্হাপনের কথা জানিয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আরো বলেন, সরকারী উপরোক্ত সিদ্ধান্ত ব্যাপকভাবে প্রচারের জন্য মাইকিং, লিফলেট বিতরণ ও অন্যান্য প্রচারনা চালানো হবে। সভাপতির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কাজী মোহাম্মদ আব্দুর রহমান বলেন, উপরোক্ত সময়ে মা-ইলিশ রক্ষা ও প্রাকৃতিক জলাশয়ে মৎস্য আহরন নিষিদ্ধকরন সংক্রান্ত সরকারী নিষেধাজ্ঞা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করার উদ্যেশ্যে ব্যাপক অভিযান, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা ও অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্হা গ্রহনের জন্য জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটগন নিয়োজিত থাকবেন। এছাড়া স্হানীয় মৎস্য অধিদপ্তর, পুলিশ প্রশাসন, র‍্যাব, বিজিবি, নৌবাহিনী, এবং কোস্টগার্ড ফোর্স উক্ত কাজে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবেন। উক্ত সভায় আরো বক্তব্য রাখেন জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান, কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ আবু তাহের, সহকারী পুলিশ সুপার (সদর) সৌমিত্র চাকমা,  বাংলাদেশ বেতার কক্সবাজার’র আঞ্চলিক পরিচালক মোঃ হাবিবুর রহমান, নৌবাহিনীর ইনচার্জ লেঃ আকতার হোসেন, কোস্টগার্ড কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মোঃ জাহিদুল ইসলাম পাঠান, কক্সবাজার সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্রের উর্দ্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডঃ শফিকুর রহমান, আঞ্চলিক মৎস্য কর্মকর্তা একেএম মোখলেসুর রহমান, মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের ব্যবস্হাপক মোঃ গোলাম মোস্তফা, কক্সবাজার মৎস্য অবতরন কেন্দ্রের ব্যবস্হাপক মোঃ শরিফুল ইসলাম, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (সদর) ডঃ মঈন উদ্দীন আহমদ  কক্সবাজার বরফ মিল মালিক গ্রুপের সেক্রেটারী মোঃ শফিকুর রহমান ও ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমদ প্রমূখ। জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোজাম্মেল হক রাসেল, তুষার আহমেদ, পি এম ইমরুল কায়েস, শাহরীন ফেরদৌসী, মোঃ আবু বাক্কার সিদ্দিক, রামু উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন, চকরিয়া সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম ও জেলে-মৎস্যজীবি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উক্ত সভায় উপস্হিত ছিলেন। বিগত কয়েকবছর ধরে জেলায় উপরোক্ত কর্মসূচী বাস্তবায়নের ফলে বঙ্গোপসাগরে ইলিশ মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে জানিয়ে বক্তারা বলেন মা ইলিশ রক্ষা কাযক্রম কেবলমাত্র সরকারী কর্মসূচীতে সীমাবদ্ধ নেই, কক্সবাজারে এখন তা জনগনের কর্মসূচীতে পরিণত হয়েছে।

 

পাঠকের মতামত: