ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

ঈদগাঁওতে এনজিও সংস্থা এহছান সোসাইটি কোটি টাকা নিয়ে উধাও

ngoসেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও (কক্সবাজার) প্রতিনিধি :::

কক্সবাজার সদরের ঈদগাওর এহসান সোসাইটি এখন লাপাত্তা। বাস স্টেশনে অবস্থিত হায় হায় কোম্পানীর এ অফিসটি দীর্ঘ গত ৩ মাস ধরে জনশূন্য। এদিকে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার নামে অফিসের দায়িত্বশীল কয়েক কর্মকর্তা প্রায় ৬’শ গ্রাহকের নেয়া কোটি টাকার হদিস পাচ্ছেনা ভুক্তভোগিরা। এতে করে হয়রানির শিকার হয়েছে কমপক্ষে ২০ জন মাঠকর্মী ও ৬’শ গ্রাহক। চাঞ্চল্যকর এ বিষয়টি আইনী আশ্রয়ে ছুটছে বলে জানা গেছে। এদিকে এ ঘটনা নিয়ে বর্তমানে জালালাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা ছাত্রলীগের সেক্রেটারী ইমরুল হাসান রাশেদের কাছে শালিস চলছে।

সূত্রে প্রকাশ, ২০১১ সালের ৫ মে কফিল মাহমুদ প্রকাশ মাস্টার কফিল নামক এক ব্যক্তি রিয়েল এস্টেট বান্ধব এহসান সোসাইটি নামক এ শাখা প্রতিষ্টিত করেন ঈদগাওতে। তিনি এবং হাফেজ মো: নেজাম উদ্দিনের নেতৃত্বে সহকারী ম্যানেজার রায়হান, চৌফলদন্ডীর নুরুল আলম ও সোয়াইবসহ বেশ কয়েকজন স্টাফ নিয়ে বাস স্টেশনস্থ দরগাহ পাড়া সড়কে সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে একটি অফিস স্থাপনের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করে। যথারীতি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির প্রকাশ করে কমপক্ষে ২০ জন মাঠকর্মী নেয়। এদিকে জনপ্রতি ৫০ টাকায় ভর্তি ফরম পূরণ করে ৫ বছরে প্রায় ৬’শ গ্রাহক সৃষ্টি করা হয়। প্রতিমাসে নূন্যতম ১’শ টাকা হতে সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়ী টাকা জমা করা হয়। এছাড়া ৩ লাখ হতে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত এফডিআর এর টাকা জমা নেয়া হয়। তাদের নিয়োগকৃত মাঠকর্মীদের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ হতে টাকা উত্তোলন করে অফিসের ওই ২ কর্মকর্তা রশিদ মূলে টাকা গ্রহন করেন। বিপুল পরিমান টাকা জমা হওয়ার শুরু হয় অভিনব কায়দায় ফাঁদ পাতানোর কাজ। গত ২২ এপ্রিল ২০১৩ সালে ২৫ লাখ টাকায় খুরুস্কুল হতে একটি জায়গা ক্রয়ের জন্য বায়নানামা করে ব্যবসা শুরুর কথা বলে কৌশলে ধীরে ধীরে লাপাত্তা হওয়ার পায়তারা শুরু করে। এরপর ওই ২ কর্মকর্তার স্বাক্ষরে গত ১১ ফেব্রুয়ারী ২০১৫ সালে মাঠকর্মীদের কাছে লিখিত নোটিশ করেন এবং ৩১জুলাই ২০১৫ তারিখে সভা অনুষ্টিত হওয়ার পর হতে কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। মাঠকর্মী যথাক্রমে চৌফলদন্ডীর মৌলভী ছৈয়দ আমিনের কাছ হতে ১১ লাখ টাকা, ভাদিতলার বজলুর রহিমের ৮ লাখ টাকা, ফরাজি পাড়ার আবদুল মতিনের সাড়ে ১৪ লাখ টাকা, নতুন অফিসের রশিদ আহমদের ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, পালাকাটার তৈয়ব তাহেরের সাড়ে ৩ লাখ টাকা, খুরুস্কুলের মুর্শেদ আলমের ১ লাখ , জালালাবাদ বাহারছড়ার মুর্শেদ ইকবালের ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা নতুন অফিসের কুতুব উদ্দিনের ১ লাখ টাকা, খুটাখালীর ইব্রাহিম খলিলের ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, রামুর হাফেজ উসমানের ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, দরগাহ পাড়ার মৌ: ইউনুসের ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা, হাফেজ দেলোয়ারের ৭০ হাজার টাকাসহ অনেকর কাছ হতে কর্মকর্তারা প্রায় কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায়। এহসান সোসাইটির এ ধরনের প্রতারনায় নি:স্ব হয়ে পড়েছে সহজ সরল গ্রাম্য লোকজন। এছাড়া মাঠকর্মীরাও চরম বেকায়দায় পড়েছে।

ভ’ক্তভোগিরা জানান অফিসের প্রধান কর্মকর্তা কফিল মাহমুদ ও তার অন্যতম সহযোগী হাফেজ মো: নেজাম উদ্দিন গ্রাহকদের এসব টাকা আত্মসাৎ করেছে। অফিসের আরো কয়েজন স্টাফও জড়িত বলে তারা জানান।

সরেজমিন এহসান সোসাইটি অফিসে গিয়ে দেয়া যায় সেখানে চেয়ার টেবিল ও অন্যান্য আসবাবপত্র সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এ ব্যাপারে হাফেজ মো: নেজাম উদ্দিনের (ইসলামপুর নতুন অফিস) সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টার পরও তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। কফিল মাহমুদের সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি প্রথমে বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও পরে স্বীকার করে জড়িত থাকার কথা। তিনি আরো জানান আমি এহসান সোসাইটি হতে ২০১২ সালে পদত্যাগ করেছি। কিন্তু ২০১৫ সাল পর্যন্ত কাগজে কলমে তার উক্ত সংগঠনে থাকার প্রমান দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এ কথা বলার পর তিনি আর কোন উত্তর দেননি।

পাঠকের মতামত: