ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

অস্থিতিশীল চালের বাজার

riceনিজস্ব প্রতিবেদক :::

পাইকারী বাজারে চালের সংকট হওয়ায় অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে চালের বাজার। সরকার ডিলারদের মাধ্যমে প্রতি কেজি ১০ টাকা দরে চাল বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়ায় পাইকারী ব্যবসায়িরা চাল কম আনায় এ সংকট তৈরী হয়েছে বলে জানালেন পাইকারী ব্যবসায়িরা। ফলে গত দুই দিনে কক্সবাজারে চালের পাইকারী বাজারে প্রতি বস্তায় চালের মূল্য বেড়েছে প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ টাকা করে। ফলে ক্রেতাদের দূর্ভোগের পাশাপাশি বিভ্রান্তির শিকার হচ্ছেন বলে জানালেন খুচরা ব্যবসায়িরা ।
কোন কারণ ছাড়াই বাড়ছে চালের মূল্য। শহরের বড় বাজারের পাইকারি চাল বিক্রয় প্রতিষ্ঠান গৌরি ভান্ডার সূত্রে জানা যায়, কেন চালের মূল্য বাড়ছে তা আমাদের জানা নেই। গত সপ্তাহে মিনিকেট (২৮) চালের মূল্য ছিল প্রতি বস্তা ১৬০০ টাকা, তা এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ টাকা দরে। বেড়েছে মিনিকেট (২৯) চালের মূল্যও।  একই ভাবে বেড়েছে মোটা চালের মূল্য। গত সপ্তাহে মোটা চাল প্রতি বস্ত ছিল ১৪০০ টাকা তা এখন ১৫৫০ টাকা দরে, বেতি ১৫৫০ টাকা থেকে বেড়ে ১৭৫০, মিনি সিদ্ধ ১৮০০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২১০০ টাকা দরে।
পাইকারী ব্যবসায়ি বুলবুল তালুকদার জানিয়েছেন, সরকার ১০ টাকা দরে চাল বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় মোকামে আর চাল পাওয়া যাচ্ছে না। লোকসানের ভয়ে চাল কল গুলোর কার্যক্রম কমিয়ে এনেছেন। কৃষকদের কাছ থেকে তেমন চাল ক্রয় করছেন না ব্যবসায়িরা। যার ফলে প্রচুর চাহিদা থাকলেও চাল পাওয়া যাচ্ছে না। আশুগঞ্জ, দিনাজপুর, হবিগঞ্জসহ সবখানে চালের তীব্র সংকট রয়েছে। কৃষকদের কাছে ধান থাকলেও তা ক্রয় করছেন না ব্যবসায়িরা। যার ফলে চালের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এতে পাইকারী ব্যবসায়িদের করার কিছু নেই।
চট্টগ্রাম থেকে পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান প্রগতি ট্রেডার্সের পরিচালক সনজিত বৈদ্য জানিয়েছেন, চালের সরবরাহ কমে আসায় বাজারে চালের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়েছে। লোকসানের ভয়ে কেউ ধান ক্রয় করছে না। যার ফলে চাল সরবরাহ কমে গেছে। সরকার ১০টাকা দরে চাল বিক্রি পুরোদমে শুরু করলে কেমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় তা বুঝে শুনে চাল সরবরাহ বাড়বে। কৃষক পর্যায়ে এখনো ধানের মূল্য স্থিতিশীল রয়েছে। তিনি আরো জানান এ সংকট সাময়িক। পরিস্থিতি বুঝতে না পারায় ব্যবসায়ীরা ঝুকি নিচ্ছেন না। এতে আতংকিত হওয়ার কোন কারণ নেই। আছাদগঞ্জসহ চট্টগ্রামের সব চালের আঁড়তে মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। উত্তরবঙ্গ থেকে যারা চাল আনছেন তাদের সকলেই জানিয়েছেন ওখানেও মূল্য একটু বৃদ্ধি পেয়েছে। চাল পাওয়াটাও একটু কঠিন হয়ে উঠেছে।
এদিকে খুচরা বাজারের ব্যবসায়িরা নানা সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন। খুচরা বিক্রেতা মহাজের পাড়ার রওশন সওদাগর জানালেন কোন কারণ ছাড়া কেন চালের দাম বাড়ছে আমরা জানি না। অহেতুক চালের দাম বাড়ায় ক্রেতাদের কাছে নানা কৈফিয়ত দিতে হচ্ছে। পাইকারি বাজারে যা বেড়েছে খুচরা বাজারে আর একটু বাড়িয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে।
কক্সবাজার পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মী সাধনা বালা জানান, কেন চালের মূল্য বাড়ছে আমরা জানি না। চালের দাম বাড়ায় আমাদের মতো নিম্নবিত্ত মানুষেরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছি। পাইকারি চাল বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান গৌরিভান্ডারের পরিচালক দিলীপ শীল জানিয়েছেন, এখানে ব্যবসায়িদের কোন কারসাজি নেই। দেশের বিভিন্ন মোকামে মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এখানেও বেড়েছে। এই সমস্যাটি শুধু কক্সবাজারে হয়নি, সারা বাংলাদেশে বেড়েছে। পাইকারি ব্যবসায়িদের অহেতুক চালের মূল্য বৃদ্ধি করার কোন সুযোগ নেই।

পাঠকের মতামত: