ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

লামা জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত পরিদর্শন হাইকোর্ট’র জৈষ্ঠ বিচারপতির

map-lamaলামা প্রতিনিধি :

সাবেক মহকুমা লামাসহ পাশের আলিকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় দ্রুত দেওয়ানি মামলা সমূহ নিস্পত্তি করার লক্ষে দেওয়ানি সিনিয়র সহকারি জজ আদালত প্রতিষ্ঠার দাবি উঠেছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের লামা উপজেলা শাখার সভাপতি মোহাম্মদ ইসমাইল দেওয়ানি সিনিয়র সহকারি জজ আদালত প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারের আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সবিচ বরাবরে উপজেলাবাসীর পক্ষে লিখিত আবেদনের মাধ্যমে এ দাবি তুলেন।

আবেদন সূত্রে জানা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রামের সবচেয়ে জনবহুল অধ্যুষিত ও গুরুত্বপূর্ণ জনপদ হিসেবে পরিচিত লামা উপজেলাকে পার্শ্ববর্তী আলিকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলাকে নিয়ে ১৯৭৯ সালেল ৯ সেপ্টেম্বর মহকুমা উন্নীত করে তৎকালীন সরকার। পরবর্তীতে ১৯৮৪ সালে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রী করণের ফলে জেলা ঘোষনা ১৯দিন বাস্তবায়িত হয়ে পূণরায় স্থগিত হয়ে যায়। তৎকালীন সময় থেকে সাবেক মহকুমা লামায় ফৌজদারী আদালত তথা বর্তমানে সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত চালু হয়। কিন্তু দেওয়ানি আদালত তথা সিনিয়র দেওয়ানি জজ আদালত না থাকায় লামা থেকে ৯০ কিলোমিটার, আলীকদম থেকে ১১৩ কিলোমিটার ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে অধিক সময়সহ অর্থ ব্যয় করে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম জেলা পাড়ি দিয়ে বান্দরবান জেলা সদরে ভুমি সংক্রান্ত বিরোধ নিস্পত্তির জন্য মামলা মোকদ্দমা দায়েরসহ পরিচালনার জন্য যেতে হয়। এতে বিশেষ করে এ তিন উপজেলার স্থানীয় পাহাড়িরা এত দূরত্বে গিয়ে মামলা পরিচালনা করতে চরম অসুবিধার সম্মুখিন হচ্ছেন। লামায় এ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হলে আলিকদম সদরের দূরত্ব প্রায় ১৮ কিলোমিটার ও নাইক্ষ্যংছড়ি থানা সদরের দূরত্ব প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরত্বে আসবে। এছাড়া লামার সাথে আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাসিন্দাদের সাথে যোগাযোগ, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে। বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের বান্দরবান জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক এম. রুহুল আমিন বলেন, গত ১৯ মার্চ বান্দরবান জেলা সদরে হিল্টন হোটেলে জেলা লিগ্যাল এইড কমিটিরি সভায় আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের সচিব লামা উপজেলা সদরে ফৌজদারি আদালতের পাশাপাশি দেওয়ানি আদালত প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেন। সভায় প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর, বিজ্ঞ জেলা দায়রা জজ মো. শফিকুর রহমান, জেলা প্রশাসক ও উচ্চ পদস্থ সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীগন উপস্থিত ছিলেন। আইন সচিবের এ প্রতিশ্রুতিতে পাহাড়ি জনগন আনন্দিত হয়। আইনের সুশাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লামা উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী আলিকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ির সমন্বয়ে ফৌজদারী ও দেওয়ানি আদালত প্রতিষ্ঠা করার একান্তভাবে প্রয়োজন রয়েছে। এদিকে, গত ১৯ সেপ্টেম্বর মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের বিজ্ঞ বিচারপতি ছৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসাইন লামাস্থ সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত পরিদর্শন করেন। এ সময় স্থানীয় আইনজীবি, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি ও মানবাধিকার কর্মীরা সাবেক মহকুমা লামায় একটি দেওয়ানি আদালত তথা সিনিয়র সহকারী জজ আদালত প্রতিষ্ঠার দাবি জানালে তিনি বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখবেন বলে আশ্বাস দেন। পরিদর্শনকালে বান্দরবান পার্বত্য জেলর বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ মো. শফিকুর রহমান, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ফারুক আহমদ, বিজ্ঞ যুগ্ন জেলা জজ মো. জসিম উদ্দিন সফল সঙ্গী ছিলেন। মহামান্য হাই কোর্ট বিভাগের বিচারপতি লামা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মো. আলী আক্কাস সাহেবের আদালতের কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন। এটাই মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের একজন জৈষ্ঠ বিচারপতির প্রথম আদালত পরিদর্শন।

 

পাঠকের মতামত: