ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় বসতবাড়ি দখলের জের হামলা ভাংচুর লুটপাট ও গুলিবর্ষণ

songarsএম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :::  চকরিয়ায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে পৌরসভার সবুজবাগ এলাকায় আলাদা দুটি বসতবাড়িতে হামলা লুটপাট ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার সকালে ও দুপুরে ঘটেছে এ হামলার ঘটনা। সংগঠিত দুটি হামলার ঘটনা নিয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ জাফর আলম এবং উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছরওয়ার আলম পরস্পর বিরোধী অভিযোগ তুলেছেন। এ ঘটনা নিয়ে চকরিয়া পৌরশহরে দিনভর উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ দু আওয়ামীলীগের নেতা কতৃক জমি দখলের ঘটনা এখন টক অব দ্যা চকরিয়া ।

উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সরওয়ার আলম দাবি করেন, সোমবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে পৌরসভার ৪নম্বর ওয়ার্ডের সবুগবাঘস্থ তার ভাড়া বাসায় সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়। ওইসময় উপজেলা চেয়ারম্যানের ভাইপো পৌর কাউন্সিলর জিয়াবুল হকের নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে বসতঘরের টিনের ঘেরা ও দরজা ভাংচুর ছাড়াও ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে দুই লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করেছে। ঘটনার সময় গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। তিনি আরো দাবী করেন, তার ক্রয়পূর্বক নামজারি খতিয়ান সৃজন করা ৫শতক জমি দখল করতে এ হামলা চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় তাঁর ভাড়াটিয়া খতিজা বেগম ও হামিদা বেগম আহত হয়েছে।

অপরদিকে ঘটনাস্থলের বসতবাড়ির পাশের বাসিন্দা চকরিয়া পৌরসভা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম সোহেল দাবী করেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সরওয়ার আলমের মালিকানাধীন ভাড়া বাসায় হামলা চালানোর সময় মানবিক কারনে তিনি হামলাকারীদের বাঁধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দুর্বৃত্তরা তাঁর বসতবাড়িতে গুলিবর্ষণ ও ভাংচুর চালায়। এসময় তার বাড়ি থেকে ১টি এলইডি টিভি, ২টি মোটর সাইকেল, ৮ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ ৮লাখ ৪৭ হাজার টাকা লুট করা হয় বলে তিনি দাবী করেন।

এদিকে আওয়ামীলীগ নেতা ছরওয়ার আলম ও যুবলীগ নেতা আজিজুল ইসলাম সোহেলের অভিযোগ প্রসঙ্গে চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ জাফর আলম বলেন, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সঠিক নয়। মুলত এ অভিযোগ প্রতিহিংসা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। দখলবাজদের হাতে নিরীহ মহিলার পরিবার হামলার শিকার হচ্ছে খবর পেয়ে আমি সেখানে গিয়েছিলাম। নির্যাতিতা পরিবারকে জিন্মিদশা থেকে উদ্ধার করা উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে আমার দায়িত্ব আছে। তিনি বলেন, প্রবাসী হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী জাহেদা বেগম নামের এক নিরীহ মহিলার ১০বছর আগে নির্মিত বসতবাড়িটি দখল করে আওয়ামীলীগ নেতা সরওয়ার আলম। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে গত ৩১ জুলাই উপজেলা আইনশৃ্খংলা কমিটির সভায় বিষয়টি উপস্থপন করা হয়। সভার সিদ্বান্তের আলোকে চকরিয়া থানার ওসিকে আক্রান্ত মহিলাকে বসতবাড়িতে নিরাপত্তা নিশ্চিত ও তার জায়গা অবৈধ দখল ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অনুরোধ করা হয়।

উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলম আরো বলেন, ২০০৭ সালে চকরিয়া পৌরসভা থেকে নকশা অনুমোদন নিয়ে জাহেদা বেগম ক্রয়কৃত জায়গায় বসতবাড়ি নির্মাণ করেন। কিন্তু তাকে নির্যাতন করে বাড়ি ছাড়া করার চেষ্টা করলে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে নৈতিক ও মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি সুরাহার চেষ্টা করি। তিনি বলেন, সোমবার বিকাল ৫টায় উভয়পক্ষকে নিয়ে পুলিশ বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও অভিযুক্তরা ওই বাড়িতে তালা লাগিয়ে দেয়।

ভুক্তভোগী বাড়ির মালিক জাহেদা বেগম দাবী করেন, পৌরসভার ৪নম্বর ওয়ার্ডের থানা সেন্টার এলাকার প্রকৌশলী জহুর মওলা’র কাছ থেকে এটর্ণি পাওয়ারমূলে ২০০৭ সালে জমি ক্রয় করে সেখানে বসতবাড়ি নির্মাণ করি। বাড়িতে পুরুষ সদস্য না থাকার সুবাদে প্রথমে জায়গায়টি নামমাত্র দামে কিনতে চেষ্টা করে। এতে আমি রাজী না হলে পরে আমাকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা চালিয়ে আসছে অভিযুক্তরা। তবে আইনী জটিলতার কারনে ওই জমির রেজিষ্ট্রিমূলে এখনো মালিক হননি বলে দাবি করেন জাহেদা বেগম বলেন।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহিরুল ইসলাম খান বলেন, পৌরসভার সবুগবাঘ এলাকায় জায়গার বিরোধ নিয়ে একটি ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পাঠকের মতামত: