ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪

কক্সবাজারে অবাধে জাটকা নিধন ও বিক্রি হচ্ছে

coxsbazr-taknaf-pict-18-9-2016-3শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার, ১৮ সেপ্টেম্বর ॥

কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন স্থানে বঙ্গোপসাগর মোহনায় অবাধে জাটকা নিধন করা হচ্ছে। দিনে-রাতে অসংখ্য জেলে কারেন্ট জালসহ অবৈধ অন্যান্য জাল দিয়ে জাটকা শিকার করছেন। আর এসব জাটকা টেকনাফ, উখিয়া ও কক্সবাজার শহরে হাটে বাজারে রূপালী ইলিশের পাশাপাশি প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে জাটকা। প্রতি কেজি দরে ১৮০ থেকে ৩’শ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে ১৪ থেকে ১৮টি জাটকা ইলিশ। প্রকাশ্য অবাধে চলা জাটকা বেচাকেনা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরের টেকনাফ শাপলাপুর, শীলখালী, উখিয়ার মনখালীসহ বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন স্থানে চলছে জাটকা নিধন। দিনে-রাতে অসংখ্য জেলে কারেন্ট জালসহ অবৈধ অন্যান্য জাল দিয়ে জাটকা শিকার করছেন। আর এসব জাটকা প্রকাশ্যেই টেকনাফের শামলাপুর বাজার, শীলখালী বাজার, টেকনাফ মাছ বাজার ও উখিয়ার মনখালী নৌকা ঘাট সহ বিভিন্ন হাট-বাজার এবং কক্সবাজার শহরের বড়বাজার, বাহারছড়া বাজার, কানাইয়ার বাজার, কালুর দোকান বাজারসহ আশে-পাশের রাস্তা ঘাটে প্রকাশ্যে জাটকা বেচা-বিক্রি চলছে।

মৎস্য বিভাগ, প্রশাসন ও কোষ্টগার্ড সদস্যরা দেখেও দেখছে না। অথচ প্রকাশ্যে এগুলো বেচা-কেনা হচ্ছে।

সরজমিন দেখা গেছে, কেজিতে ১৪ থেকে ১৮টি জাটকা ১৮০ থেকে ৩’শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে (বড়) ৮শ থেকে ১ হাজার টাকা।

কয়েকজন ক্রেতা জানান, অবাধে জাটকা ধরে বিক্রি করার কারণে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধিতে মৎস্য অধিদফতরের নেয়া উদ্যোগগুলো ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা তৈরী হয়েছে।

প্রতিটি বাজারেই বিক্রি হচ্ছে দুই ইঞ্চি থেকে ১০ ইঞ্চি আকারের নিষিদ্ধ জাটকা। আর নিষিদ্ধ জাটকা ব্যবসার সাথে সরকারী দলের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের যোগসাজশ রয়েছে বলে জানা যায়।

কয়েকজন ব্যবসায়ি জানান, সাগর থেকে জেলেদের কাছ থেকে ১৬০-১৭০ টাকা কেজি দরে কিনে আনা জাটকা ঢাকার পাইকারী বাজারে দেড়শ টাকা এবং খুচরা বাজারে আড়াইশ’ থেকে তিনশ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অভিযোগ রয়েছে, জাটকা ধরা, বিপণন ও মজুদের জন্য দুই বছর পর্যন্ত কারাদন্ডের বিধান থাকলেও প্রভাবশালীরা মৎস্য বিভাগ, থানা-পুলিশ ও কোষ্টগার্ডকে ম্যানেজ করেই এই ব্যবসা চালাচ্ছে।

একদিকে, বঙ্গোপসাগরে কোস্টগার্ডের অপর্যাপ্ত টহল ও নজরদারির কারণে ইলিশের অভয়াশ্রমে জাটকা নিধন বন্ধ হচ্ছে না, অন্যদিকে শহরে-বন্দরে সরকারী দলের নেতা এবং পুলিশের যোগসাজশে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটের কারণে ইলিশ সংরক্ষণে সরকারী উদ্যোগগুলো ব্যর্থ হতে চলেছে।

সচেতন মহলের মতে, প্রতিদিন শত শত মন জাটকা ধরা এবং বিপণন বন্ধ হলে কয়েক লাখ টন পরিণত ইলিশের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব। জাটকা নিধন বন্ধে দিনে এবং রাতে কোস্টগার্ড ও নৌপুলিশের টহল বাড়ানোর পাশাপাশি জাটকা নিধন ও বিবণন সংক্রান্ত আইনের দৃষ্টান্তমূলক বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। জাটকা নিধন বন্ধ রাখতে জেলেদের প্রণোদনা সহায়তা দেওয়ার যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল তারও যথাযথ বাস্তবায়ন জরুরী।

 

পাঠকের মতামত: