ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

চোরাচালান, মাদক ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রোধ সীমান্তে সড়ক ও কাঁটাতারের বেড়া

myanmar-bangladesh-border-600x332_1ফরিদুল মোস্তফা খান, কক্সবাজার :

বাংলাদেশ মায়ানমার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া ও সীমান্ত সড়ক না থাকার কারণে চোরাচালান ও মাদক পাচারকারী চক্র অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। স’ানীয়দের দাবি বিজিবি’র টহল জোরদার করার জন্য সীমান্ত সড়কের পাশাপাশি কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে সীমান্ত সুরক্ষিত করা হলে সব ধরনের অনৈতিকতা প্রতিরোধ করা বিজিবি’র পক্ষে সম্ভব। এ লক্ষ্যে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড টেকনাফ থেকে তুমব্রু পর্যন্ত প্রায় ৬০ কিলোমিটার স’ল পথে সীমান্ত সড়ক নির্মাণের একটি প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদে (একনেক) পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সূত্রে জানা যায়, বালুখালী থেকে তুমব্রু পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার সীমান্ত সড়ক বিদ্যমান থাকলেও সীমান্তের অন্যান্য অংশে সীমান্ত সড়ক না থাকায় সীমান্তরক্ষী বিজিবি সদস্যদের টহল দায়িত্ব পালন করতে নানা সমস্যায় সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

পালংখালী বিজিবি’র নায়েব সুবেদার আব্দুর রহিম জানান, তাদেরকে নাফ নদীর বেড়িবাঁধের নরম কাঁদামাটি পেরিয়ে টহল দিতে হয়। ঘুমধুম-বালুখালী ও পালংখালী বিজিবি’র অতিরিক্ত সর্তকতা অবলম্বনের কারণে ও স’ানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় ইদানিং রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ কমলেও মাদক ও চোরাচালান কোনভাবেই ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে না বলে ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ অংশে সীমান্ত সড়ক ও কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করা হলে মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধ সম্ভব হবে।

জানা গেছে, টেকনাফের নয়াপাড়া, মোছনি, লেদা, উখিয়ার কুতুপালং এলাকায় দুটি নিবন্ধিত ও তিনটি অনিবন্ধিত ক্যাম্পে প্রায় আড়াই লক্ষাধিক রোহিঙ্গা নাগরিক বসবাস করে। বনভূমি দখল করে ও বিভিন্ন স’ানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসবাস করছে আরো প্রায় লক্ষাধিক রোহিঙ্গা নাগরিক। এসব রোহিঙ্গার একটি অংশ চোরাচালান ও মাদক পাচারের সাথে সরাসরি জড়িত বিধায় তাদের মাধ্যমে দেশে অবাধ ইয়াবা ঢুকছে দাবি করে উখিয়া রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী জানান, দু’দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে না ওঠা পর্যন্ত সীমান্তে মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, সীমান্ত সড়ক ও কাঁটাতারের বেড়া না থাকার কারণে উখিয়ার বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে স’ানীয় গুটি কয়েক দালালের মাধ্যমে প্রতিদিন রোহিঙ্গারা এসে তাদের চাহিদামত নিত্যপণ্য সংগ্রহ করে ফিরে যাচ্ছে।

সীমান্ত সড়ক নির্মাণের ব্যাপারে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শবিবুর রহমান জানান, টেকনাফ থেকে তুমব্রু পর্যন্ত প্রায় ৬০ কিলোমিটার সীমান্ত সড়ক নিমার্ণের একটি প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদে (একনেক) পাঠানো হয়েছে। বৈঠকে ওই প্রকল্পটি গৃহিত হলে ৬০ কিলোমিটার সীমান্ত সড়ক নিমার্ণের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। তবে কক্সবাজার ৩৪ বিজিবি’র অধিনায়ক লে.কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার জানান, সীমান্ত সড়ক নিমার্ণের কাজ শুরু হয়েছে। ঘুমধুমে তাদের সীমান্ত সড়ক রয়েছে। বাকি অংশে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সীমান্ত সড়ক ও কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করা হলে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ, চোরাচালান ও মাদক পাচার অনেকটা কমে যাবে।

 

পাঠকের মতামত: