ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় আদালতের আদেশ অমান্য করে বাড়িতে হামলা ও লুটপাট

%e0%a7%81%e0%a7%81%e0%a7%81এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :::

চকরিয়া উপজেলার ঢেমুশিয়া ইউনিয়নে উচ্চ আদালতের রিট মামলার নিষেধাজ্ঞা আদেশ অমান্য করে বসতভিটা দখলে হামলা চালিয়েছে প্রতিপক্ষের লোকজন। ওইসময় হামলাকারী দুর্বৃত্তরা বাড়িতে ঢুকে আলমিরা ভেঙ্গে নগদ ৮০হাজার টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারসহ বিপুল পরিমাণ মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। ঘটনার সময় বাঁধা দিতে গেলে ধারালো অস্ত্রে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে মোর্শেদ আলমের স্ত্রী কমরুন নাহার (৩৫) নামের এক গৃহবধুকে। মারধর করা হয় তার দুই শিশু ছেলে ইয়াছিন (৮) ও ইয়ামিনকে (৫)। ঘটনার পরপর প্রতিবেশিদের সহায়তায় পরিবার সদস্যরা গুরুতর আহত ওই গৃহবধুকে উদ্ধার করে চকরিয়া সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু আহত গৃহবধুর অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১২টি জখমের চিহৃ রয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবার সদস্যরা। গত ৫ সেপ্টেম্বর সকালে ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডের তেচ্ছিপাড়া গ্রামে ঘটেছে এ হামলার ঘটনা।

এদিকে বসতবাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় গৃহবধুর ভাসুর শামসুল আলম বাদি হয়ে ১১জনকে আসামি করে গত ৭ সেপ্টেম্বর চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি নালিশী মামলা দায়ের করেছেন। এতে অভিযুক্ত আসামিরা হলেন একই ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের জমিদারপাড়া গ্রামের মাষ্টার বেলাল উদ্দিনের ছেলে রুবেল, সাহাব মিয়া ছেলে মো.ইলিয়াছ, মৃত ফয়জুর রহমানের ছেলে মাষ্টার বেলাল উদ্দিন, মৃত নুর আহমদের ছেলে নবাব মিয়া, হেফাজ উদ্দিনের ছেলে রিদুয়ান, বেলাল উদ্দিনের স্ত্রী রেহেনা বেগম, তেচ্ছিপাড়া গ্রামের আবদুল মজিদের ছেলে ইসমাইল হোসেন, বাচা মিয়ার ছেলে আলী আহমদ, আবদুর রশিদের ছেলে জামাল উদ্দিন, জাফর আলমের স্ত্রী রোজিনা বেগম ও মনছুর আলমের স্ত্রী নাছিমা। আদালতের বিচারক বাদির নালিশী অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্ত পুর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য চকরিয়া থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার আর্জিতে বাদি শামসুল আলম জানান, উপজেলার ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের ঢেমুশিয়া মৌজার বিএস ৬৪৭ ও ৮০৪ নম্বর দাগের এক দশমিক ৫২ একর পৈত্রিকভাবে প্রাপ্ত ও দখলীয় জমিতে তার পরিবারের বসবাস। কিন্তু এলাকার একটি কতিপয় মহল নানাভাবে তার পরিবারকে উচ্ছেদ করে জায়গা দখলের চেষ্টা করলে বাদি শামসুল আলম ও তার ভাই মোর্শেদ আলমের পরিবার আইনী সহায়তা চেয়ে উচ্চ আদালতে (হাইকোর্টে) একটি সিভিল রিভিশন মামলা (নম্বর-৬৩৫০/০১) দায়ের করেন। বাদি সামশুল আলম দাবি করেন, উচ্চ আদালত রিভিশন মামলার শুনানীতে তাদের পক্ষে (বাদির) স্থিতাবস্থা বজায় রেখে অভিযুক্ত পক্ষকে জমিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আদেশ দেন। সেই থেকে তাঁরা নিজেদের বসতভিটায় পরিবার নিয়ে শান্তিতে বসবাস করে আসছিলেন।

মামলার বাদি শামসুল আলম ও তার ভাই মোর্শেদ আলম অভিযোগ করেছেন, ব্যবসায়ীক কারনে তাঁরা বেশির ভাগ সময় এলাকার বাইরে থাকেন। এ সুযোগে অভিযুক্ত আসামিরা দলবদ্ধ হয়ে সর্বশেষ গত ৫ সেপ্টেম্বর সকালে বাদি পক্ষের বসতভিটা দখলে জোরপুর্বক হামলা চালায়। ওইসময় তাঁরা বাদির ভাই মোর্শেদ আলমের স্ত্রী কামরুন নাহারকে কুপিয়ে জখম ও দুই শিশুকে ছেলেকে অমানিকভাবে মারধরের পর বাড়িতে ঢুকে আলমিরা ভেঙ্গে নগদ ৮০হাজার টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারসহ বিপুল পরিমাণ মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। ঘটনার সময় হামলাকারীদের কাছ থেকে ছেলের স্ত্রী ও দুই নাতনিকে উদ্ধারে এগিয়ে আসলে তাঁরা বাদির বৃদ্ধা মা রেহেনা খাতুনকেও (৮৫) মারধর করে।

মামলার বাদি শামসুল আলম জানান, আদালতের নির্দেশে চকরিয়া থানার ওসি মামলাটি তদন্ত পুর্বক অভিযুক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য থানার এসআই মাহাবুবর রহমানকে দায়িত্ব দিয়েছেন। বাদি অভিযোগ করেছেন, মামলা দেয়ার খবর পেয়ে অভিযুক্ত আসামিরা তাকে ফের নানাভাবে হুমকি ধমকি দিচ্ছে। এতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বাদি ও তার পরিবার। এব্যাপারে মামলার বাদি কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপারের কাছে জড়িতদের বিরুদ্ধে জরুরী ভিত্তিতে আইনী সহায়তা কামনা করেছেন। #

পাঠকের মতামত: