ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

হারবাং পরিবার ও পরিকল্পনা বিভাগের পরিদর্শক পদে জালিয়াতি করে নিয়োগ পাওয়া সেই নাছিরউদ্দিন এখনো বহাল তবিয়তে

faloupAমিজবাউল হক, চকরিয়া :

হারবাং ইউনিয়ন পরিবার ও পরিকল্পনা বিভাগে পরিদর্শক পদে প্রত্যারণা ও জালিয়াতি করে চাকরি নেওয়া সেই নাছিরউদ্দিন এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। তিনি কাউকে তোয়াক্কা করছেন না। টাকার বিনিময়ে চাকরি নিয়েছি ভয় করার দরকার নেই। আমি ছাত্রলীগ করি। চাকরি কেউ খেতে পারবে না। এসব কথা বলে বেড়াচ্ছেন তিনি। এদিকে তার অবৈধ নিয়োগের তদন্ত শুরু করেছেন পরিবার ও পরিকল্পনা বিভাগের একটি তদন্ত টিম। তারা বিভিন্ন জনের লিখিত বক্তব্য সংগ্রহ করেছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলেই আইনুনাগ ব্যবস্থা নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে এমনটাই জানালেন পরিবার ও পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তারা।

জানা যায়, গত দুই বছর পূর্বে কক্সবাজার জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ চকরিয়া উপজেলা হারবাং ইউনিয়ন পরিবার ও পরিকল্পনা বিভাগের পরিদর্শক পদের জন্য ৮জন প্রার্থী আবেদন করেছিলো। গত ২০১৪সালের ১৯ডিসেম্বর কক্সবাজার বায়তুশরফ জব্বারিয়া একাডেমিতে ৭জন প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন। কিন্তু নাছিরউদ্দিন কাগজপত্র জমা দিলেও লিখিত পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেনি। যারা লিখিত পরীক্ষায় পাস করেছে পরবর্তীতে তারা মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেয়। কিন্তু সেখানে নাছিরউদ্দিন লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করলে অন্য প্রার্থীদের মধ্যে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। কিভাবে নাছির লিখিত পরীক্ষা অংশ না নিয়ে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিলো, এইরকম কথা শুধু ঘুরপাক খাচ্ছে পরীক্ষায় নেওয়া অন্য প্রার্থীদের মনে।

সূত্র জানা গেছে, মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে কক্সবাজার জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক দীপক তালুকদার নাছির উদ্দিনকে নিয়োগ দেন। তাকে নিয়োগ দিয়ে অবসরে চলে যান ওই উপ-পরিচালক। চলতি বছরের ২০জুন মাসে হারবাং ইউনিয়ন পরিবার ও পরিকল্পনা বিভাগে পরিদর্শক পদে যোগদান করেন নাছির। সে ওই পদে থেকে দুই মাসের বেতন-ভাতা উত্তোলন করেছেন। তার অবৈধ ভাবে নিয়োগ পাওয়ায় এলাকায় চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে তার নিয়োগ বাতিলের জন্য সংশিলষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

উপজেলা পরিবার ও পরিকল্পনা বিভাগের নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একজন পরিদর্শক জানান, কক্সবাজার বাইতুশরফ হলে পরীক্ষায় অংশ নেন ঠিকই। তার নামে অন্য একজন পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেছে। তবে নাছির উদ্দিনের স্বাক্ষর ও পরীক্ষা অংশ নেওয়া ওই ব্যক্তির স্বাক্ষর মিলালে বের হয়ে আসবে তার জালিয়াতি। এদিকে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেওয়া মহিউদ্দিন ও নোমান চৌধুরী সাজ্জাদ তার নিয়োগ বাতিলের জন্য জেলা পরিবার ও পরিকল্পনা দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এরপ্রেক্ষিতে জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ চকরিয়া উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বিধান কান্তি রুদ্রকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

গত ১সেপ্টেম্বর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে অভিযোগকারী ও নিয়োগ পাওয়া নাছিরউদ্দিনকে হাজির হওয়ার নিদের্শ দেন। কিন্তু ওইদিন আবেদনকারীরা হাজির হলেও অভিযুক্ত নাছির উদ্দিন লাপাত্তা হয়ে যায়। এতে বিভিন্ন জনের মধ্যে আরও বেশি সন্দেহ সৃষ্টি হয়। গত কয়েকদিন ধরে জালিয়াতি ও প্রতারণা করে চাকরি নেওয়ার বিষয়টি বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ পেলে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। জেলা ও উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরে অনিয়ম ও দূর্নীতির বিষয়টি জানা জানি হলে নাছির উদ্দিন গা ঢাকা দিয়েছেন। হারবাং কর্মস্থলে যাচ্ছে না বলে জানান স্থানীয় লোকজন।

জানা গেছে, দূর্নীতি ও জালিয়াতির মাধ্যমে চাকরি নেওয়া নাছির উদ্দিনের নিয়োগ যাতে বাতিল না করে সেজন্য পরিবার ও পরিকল্পনা অফিসের কর্মকর্তাদের কাছে ধর্না দিচ্ছেন। মোটা অঙ্কের বিনিময়ে হলেও তার চাকরিটি রক্ষা পায় সেজন্য অফিসের দারে দারে ঘুরছেন তিনি। ##

পাঠকের মতামত: