ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

বদরখালী সমবায় ও কৃষি উপনিবেশ সমিতির মনোনয়ন ফরম বিতরণে বাণিজ্যের অভিযোগ

oniom_1এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :::

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বদরখালী সমবায় ও কৃষি উপনিবেশ সমিতির নির্বাচনে মনোনয়ন ফরম বিতরণে বানিজ্যের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য ও উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আবদুল মান্নান মনোনয়ন ফরম বিতরণের সময় প্রতিদ্বন্দিতায় ইচ্ছুক প্রার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী অনেকে। নির্বাচনের পরিবেশ শুরু হওয়ার আগে ওই কর্মকর্তার এমন ভুমিকার কারনে প্রার্থীদের মাঝে স্বচ্ছ নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে।

আগামী ৫ অক্টোবর অনুষ্টিত হচ্ছে বদরখালী সমিতির নির্বাচন। ইতোমধ্যে ঘোষিত তফসিলে নির্বাচনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পদক উভয় পদে সাত হাজার, সহ-সভাপতি পদে পাঁচ হাজার এবং পরিচালক পদে সাড়ে তিন হাজার টাকা মনোনয়ন ফরমের মুল্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন। কিন্তু অভিযোগ পাওয়া গেছে, চকরিয়া উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মনোনয়ন ফরম বিতরণের সময় নির্ধারিত মুল্যের চেয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন। এনিয়ে সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) কয়েকজন পরিচালক প্রার্থী প্রতিবাদও করেছেন। ওইসময় তাদের সাথে ওই কর্মকর্তার তর্কাতকিও ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

অভিযোগে বদরখালী সমিতির নির্বাচনে ৩নম্বর ব্লকে পরিচালক পদে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক সাবেক পরিচালক জয়নাল আবেদিন বলেন, তিনি ব্যবসায়িক কাজে ব্যস্ত থাকার কারনে সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তার কলেজ পড়–য়া ছেলে মেহেদী হাসান সাইমকে বদরখালী সমিতি অফিসে পাটান একটি মনোনয়ন ফরম কেনার জন্য। ওইসময় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল মান্নানকে সাড়ে তিন হাজার টাকা দিলেও তিনি মনোনয়ন ফরম দিতে অনীহা প্রকাশ করেন। পরে চাহিদা মতো টাকা দিলে তিনি মনোনয়ন ফরম দেন। জয়নাল আবেদিন অভিযোগ করেন, ফরম কেনার পর তিনি ছেলেকে সাথে নিয়ে ওই কর্মকর্তার সাথে দেখা করেন। বেশি টাকা নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে উল্টো তার সাথে তর্কাতর্কিতে জড়ান ওই কর্মকর্তা। ওইসময় অতিরিক্ত নেয়া টাকা ফেরত দিতে চাইলেও তিনি নেননি বলে জানিয়েছেন ক্ষুদ্ধ পরিচালক প্রার্থী জয়নাল আবেদিন। এ ঘটনার পর তিনি বিষয়টি তাৎক্ষনিকভাবে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার চকরিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) মো.মাহবুব-উল-করিমকে মুঠোফোনে অবহিত করেছেন বলে জানান।

অনুরূপ অভিযোগ তুলেছেন সমিতির ৪নম্বর ব্লকের পরিচালক প্রার্থী আবদুল মালেক। তিনি দাবি করেন, মনোনয়ন ফরম বিক্রি করতে নির্বাচন কমিশন একটি নীতিমালা করে দিলেও চকরিয়া উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আবদুল মান্নান তা আমলে নিচ্ছেন না। তার চাহিদা মতো টাকা দিলে ওই প্রার্থীকে ফরম দেয়া হচ্ছে। আর কেউ চাহিদা পুরণ না করলে নানাভাবে হয়রাণি করা হচ্ছে।

বদরখালী সমিতির নবীণ প্রবীণ একাধিক পরিচালক ও কর্মকর্তা দাবি করেছেন, সমিতির নির্বাচনে দায়িত্ব দেয়া উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আবদুল মান্নানকে আসন্ন নির্বাচনের সব ধরণের কার্যক্রম থেকে ওই কর্মকর্তাকে বিরত রাখতে হবে। তা না হলে ওই কর্মকর্তার এমন ভুমিকার কারনে স্বচ্ছ নির্বাচনের প্রক্রিয়া বাঁধাগ্রস্থ হওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে।

জানতে চাইলে নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার চকরিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) মো.মাহবুব-উল-করিম বলেন, মনোনয়ন ফরম কিনতে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার বিষয়টি পরিচালক পদের একজন প্রার্থী আমাকে মুঠোফোনে জানিয়েছেন। তবে অন্য কোন পদে প্রার্থী এব্যাপারে অভিযোগ করেননি। এই রকম ঘটনার সত্যতা পেলে বিষয়টির ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পাঠকের মতামত: