ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

চকরিয়ায় চিংড়িঘেরে সন্ত্রাসীদের তাণ্ডব অর্ধকোটি টাকার মাছ লুট, আহত ৫

স্টাফ রিপোর্টার :
চকরিয়ায় ২০০ একরের ৬টি চিংড়ি ঘেরে ব্যাপক তা-ব ও লুটতরাজ চালিয়েছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। এ সময় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করায় সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলি ও মারধরে আহত হয়েছে ঘেরের পাঁচজন কর্মচারী। এর আগে এসব ঘেরে হানা দিয়ে তা-ব শুরু করার সময় অন্তত শতাধিক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়লে আশপাশের এলাকা প্রকম্পিত হয়। এসব ঘের থেকে লুট করে নেওয়া হয় উৎপাদিত চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, অন্তত ২০টি ঝাকি জাল, খামার বাড়ির সোলার প্যানেল, চাউলসহ অন্তত অর্ধ কোটি টাকার মালামাল। বুধবার দিবাগত রাত একটা থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা পর্যন্ত একযোগে এই তা-ব চালায় অন্তত ৩০ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী।
ক্ষতিগ্রস্ত ঘের মালিকেরা অভিযোগ করেছেন, কক্সবাজার সদর উপজেলার নতুন অফিস এলাকার মো. হোছন ও ছৈয়দ আহমদের নেতৃত্বে অন্তত ৩০ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী বুধবার দিবাগত রাত একটার দিকে হানা দেয় উপজেলার চিংড়িজোন খুটাখালী ইউনিয়নের ফুলছড়ি মৌজার কেরানীঘোনা, কঁচিকাটা ঘোনা, লালঘোনা, মুন্সিরঘোনা, বড়ঘোনা, কৈয়াখালী ঘোনার অন্তত ২০০ একরের চিংড়িঘেরে। এ সময় ঘের কর্মচারীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি এবং অন্তত শতাধিক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হয় গুলি করে এবং পিটিয়ে আহত করা হয় ঘেরের ৫জন কর্মচারীকে।
আহত ঘের কর্মচারীরা হলেন গুলিবিদ্ধ খুটাখালী বাজার এলাকার আবদুল মোনাফ (৫৫), আবুল কালাম (৩৫), ছৈয়দ হোছন (৩০), সালাউল্লাহ (৩০) ও মো. সোলেমান (৫০)। তন্মধ্যে আবদুল মোনাফের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে এবং অন্যদের চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
চিংড়িঘের কেরানীঘোনার অংশীদার খুটাখালীর মোহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘প্রায় ৩০ জনের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী একযোগে ৬টি চিংড়িঘেরে হানা দেয়। এ সময় ঘের কর্মচারীরা কিছু বুঝে উঠার আগেই মুহুর্মুহ ফাঁকা গুলি ছুড়লে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে ৬টি ঘেরের কর্মচারীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি এবং তাদের হাত-পা বেধে ফেলে রেখে তা-ব ও লুটপাট চালায়।’
তিনি জানান, সন্ত্রাসীরা এসব ঘের থেকে লুট করে নেয়নি এমন কোন মালামাল অবশিষ্ট নেই। একটানা পাঁচঘন্টা ধরে তা-ব চালিয়ে উৎপাদিত চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, মাছ ধরার ২০টি ঝাকি জাল, খামার বাড়ির সোলার প্যানেল, কয়েক মণ চাউল, কর্মচারীদের মোবাইল সেটসহ অন্তত অর্ধ কোটি টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে থানায় একটি লিখিত এজাহার দিয়েছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত ঘের মালিকেরা আরো জানান, একই সন্ত্রাসীদল গত ২৮ আগষ্ট ভোররাতেও একইভাবে তা-ব ও লুটপাট চালিয়েছে। ওইসময়ও ঘেরগুলোতে তা-ব চালিয়ে লুট করে নেয় কয়েক লাখ টাকার উৎপাদিত মাছসহ মালামাল। বার বার ঘেরগুলোতে তা-ব ও লুটপাটের কারণে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে ঘের মালিকদের মধ্যে।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ওসি মো. জহিরুল ইসলাম খান বলেন, ‘ঘের মালিকদের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: