ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

ইয়াবার আগ্রাসনের শিকার টেকনাফের সাড়ে ৩ লক্ষ মানুষ!!

yabaগিয়াস উদ্দিন ভুলু , টেকনাফ ::

বাংলাদেশের দক্ষিণে সর্বশেষ সীমান্ত শহর পর্যটন নগরী হিসাবে খ্যাত টেকনাফ উপজেলা। এই উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ মানুষের বসবাস। এই এলাকার মানুষ শিক্ষার হার থেকে এখনো অনেক পিছিয়ে পড়ে আছে। তবে এই সীমান্ত নগরী টেকনাফের মানুষ খুবেই সাধারণ, খুবেই সহজ সরল। অথচ এই এলাকার মানুষ গুলো দীর্ঘ এক যুগ ধরে মরন নেশা ইয়াবার আগ্রাসনের শিকার। মিয়ানমার থেকে পাচার হয়ে আসছে প্রতিনিয়ত লক্ষ লক্ষ ইয়াবা। এই সমস্ত ইয়াবা পাচারে দিন দিন জড়িত হয়ে পড়ছে টেকনাফের যুব সমাজ এবং এই যুব সমাজকে ইয়াবা পাচারে ব্যবহার করছে টেকনাফ উপজেলার বাইরে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা বৈধ ব্যবসার আড়ালে ভদ্রবেশী, মুখোশধারী ইয়াবা ব্যবসায়ীরা।

বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়, এই মুখোশধারী ভদ্রলোকেরা তাদের নিজস্ব ব্যবসার আড়ালে থেকে ইয়াবা পাচার করে বনে যাচ্ছে কোটি কোটি টাকার মালিক। খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, বৈধ ব্যবসার আড়ালে এই অবৈধ ইয়াবা পাচারের সাথে জড়িত তারা অল্প কয়েক মাসের ব্যবধানে ৭-৮ টি বিভিন্ন প্রতিষ্টানের মালিক বনে যায়। কিন্তু প্রশাসনের চোখে তারা একেবারে সাধু। কারন তারা লক্ষ লক্ষ ইয়াবা পাচার করার সময় ব্যবহার করে নিত্য নতুন কৌশল। এবং ইয়াবা পাচারের সময় বাহক হিসাবে ব্যবহার করে টেকনাফের সহজ সরল হতদরিদ্র যুবক ও নারীদেরকে।

বিজিবি সুত্রে জানা যায়, সীমান্ত এলাকায় ইয়াবা ও মাদক প্রতিরোধ করতে দিন রাত কাজ করে যাচ্ছে বিজিবি সদস্যরা। তার পাশাপাশি নিত্য নতুন কৌশলধারী ইয়াবা পাচারকারিদের ধরতে বিজিবি সদস্যরা প্রতিনিয়ত চালিয়ে যাচ্ছে সাড়াঁশি অভিযান। এই সমস্ত অভিযানে বিজিবি সদস্যরা আটক করছে লক্ষ লক্ষ মালিকবিহীন ইয়াবা। বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে সু-কৌশলে পালিয়ে যাচ্ছে এই সমস্ত কৌশলধারী ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। বিজিবি সুত্রে আরো জানা যায়, চোরাকারবারিরা তাদের অবৈধ ব্যবসা অব্যাহত রাখার জন্য বিভিন্ন প্রকার নিত্য নতুন কৌশল ব্যবহার করে থাকে। তবে বিজিবি সদস্যরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পাচারকারিদের প্রায় কৌশল গুলো থেকে ইয়াবা উদ্ধার করতে সক্ষম হচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় গতকাল ২৯ আগস্ট দমদমিয় বিওপির সদস্যরা গোপন সংবাদে একটি গাড়ীতে তল্লাশী চালিয়ে অভিনব কায়দায় লুকিয়ে লাখা বাধাই করা একটি ছবির ফ্রেম থেকে ১১ হাজার ইয়াবাসহ মোঃ বাবুল (১৮) নামে এক পাচারকারীকে আটক করতে সক্ষম হয়। সে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামের মোঃ আবুল হোসেনের ছেলে।

এব্যাপারে টেকনাফ সুশীল সমাজের ব্যক্তিরা বলেন, টেকনাফ ২ বিজিবি সদস্যরা দিনের পর দিন যেভাবে লক্ষ লক্ষ মরন নেশা ইয়াবা আটক করতে সক্ষম হচ্ছে। কিন্তু এই সমস্ত ইয়াবা পাচারের সাথে কারা জড়িত, কারা বৈধ ব্যবসার আড়ালে এই অপকর্ম ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই আমাদের দাবি এই ভদ্রবেশী মুখোশধারী ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আইনের আওয়াতাই নিয়ে আসা না হলে টেকনাফের মানুষ সারা জীবন মাদকের কলংক মাথায় নিয়ে মরতে হবে। আর আগামী প্রজন্মকে এই ইয়াবার আগ্রাসন থেকে কিছুতেই রক্ষা করা যাবে না। তার পাশাপাশি প্রতিনিয়ত বাড়বে মাদক আসক্তদের সংখ্যা। ধংস হয়ে যাবে যুব সমাজ।

টেকনাফ ২ বিজিবি অধিনায়ক লে: কর্ণেল আবুজার আল জাহিদ অভিনব কায়দায় ১১ হাজার ইয়াবাসহ পাচারকারি আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আমাদের বিজিবি সদস্যরা প্রতিনিয়ত অভিযান চালিয়ে আটক করছে কোটি কোটি টাকার ইয়াবা ও পাচারকারি। কিছু কিছু কৌশলধারী ইয়াবা পাচারকারিরা বিজিবি উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। তবে আমরা তাদের পেলে যাওয়া ইয়াবা গুলো আটক করতে সক্ষম হচ্ছি। তিনি আরো বলেন, যে সমস্ত চোরাকারবারিরা বৈধ ব্যবসার আড়ালে সু-কৌশলে ইয়াবা পাচার করে যাচ্ছে তাদের আইনের আওয়াতাই আনতে হলে স্থানীয় এলাকাবাসীকে বিজিবি সদস্যদেরকে সহযোগীতা করতে হবে।

পাঠকের মতামত: