ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

খুটাখালীতে ফাঁকা গুলি করে চিংড়ি ঘের ডাকাতি ঃ ৫ লক্ষাধিক টাকার মাছ লুট আহত- ৫

dakati-21সেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও (কক্সবাজার) প্রতিনিধি :::

চকরিয়া উপজেলার খুটাখালীতে সংঘবদ্ধ ডাকাতরা চিংড়ি ঘেরে ১৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে ৫ মন চিংড়ি মাছ, নগদ ২০ হাজার টাকা, ৫ টি মোবাইল সেট ও ১১ টি ঝাকি জাল লুট করে ঘের শ্রমিকদের মারধর করে অনুমানিক ৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত রবিবার ভোর রাত সাড়ে ৫ টার দিকে ইউনিয়নের ফুলছড়িস্থ কেরানী ঘোনায় ঘটে এ ঘটনা। ১৫/২০ জনের অস্ত্রধারী ডাকাতরা কেরানী ঘোনার প্রায় ১১ জন ঘের শ্রমিকদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রশি দিযে হাত পা বেঁধে লুটপাট চালায়। এসময় ডাকাতদের প্রহারে গুরুত্বর আহত হয়েছে ৫ ঘের শ্রমিক। আহতরা হলেন ইউনিয়নের বাককুম পাড়ার মোক্তার আহমদের পুত্র আবুল কালাম (৪৫), মৃত বেলাল উদ্দিনের পুত্র ছৈয়দ হোছাইন (৩৫) ও বাকি ৩ জনের পরিচয় তাৎক্ষনিক পাওয়া যায়নি। তাদেরকে চকরিয়া উপজেলা সরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ডাকাতির ঘটনায় চিংড়ি ঘেরের অংশিদার ইউনিয়নের উত্তর ফুলছড়ির হাজী ছাবের আহমদের পুত্র নুরুল আজিম বাদী হয়ে গতকাল চকরিয়া থানায় পরিচিত ৪ জন সহ অজ্ঞাতনামা ১৫/২০ জনের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করেছেন।

লিখিত এজাহারে ও ঘের মালিকদের বরাত দিয়ে জানা গেছে, চলতি সনের কেরানী ঘোনার ১০৫ একর চিংড়ি ঘেরটি মূল মালিক হতে ইজারা নিয়ে আজিম গং চিংড়ি চাষ করে আসছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ঘের শ্রমিক মালিক পক্ষ পাহারা দিয়ে ঘের থেকে মাছ ধরার যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। একপর্যায়ে গত রবিবার ভোর রাত অনুমানিক সাড়ে ৫ টার সময় ইউনিয়নের মেধাকচ্ছপিয়ার মৃত কালা মিয়ার পুত্র ছৈয়দ আলমের নেতৃত্বে ১৫/২০ জনের অস্ত্রধারী ডাকাতদল ১৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে চিংড়ি ঘের শ্রমিকদের জিম্মি করে ভীতি সৃষ্টি করেন। তাদের বাধা দিতে গেলে ডাকাতরা ঘের শ্রমিক আবুল কালাম ও ছৈয়দ হোছনকে বন্ধুকের বাট দিয়ে মারধর করে রশি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। অন্যান্য ঘের শ্রমিকরা আতংকিত হয়ে প্রাণ রক্ষার্থে সটকে পড়ে। এ সুযোগে ডাকাতরা ৫ মন বাগদা চিংড়ি, মাছ বিক্রির প্রায় ২০ হাজার টাকা, ৫টি মোবাইল সেট, ১১টি ঝাকি জাল লুট করে নৌকা নিয়ে ফাঁকা গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়।

ডাকাতের প্রহারে গুরুত্বর আহত আবুল কালাম ও ছৈয়দ হোছন জানিয়েছেন, ১৫/২০ জনের অস্ত্রধারী ডাকাতদের মধ্যে ৪ জনকে চিনতে পেরেছি। বাকিরা মুখোশ পরিহিত থাকায় স্পষ্ট চেনা যায়নি। তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ায় মূলত ডাকাতরা মারধর করে ব্যাপক লুটপাট চালিয়েছে।

ঘের ইজারাদার মালিক নুরুল আজিম জানান, সংঘবদ্ধ ১৫/২০ জনের শসস্ত্র ডাকাত দল তাদের ইজারাকৃত চিংড়ি ঘের কেরানী ঘোনায় দখল নেয়ার জন্য ব্যাপক তান্ডবলীলা চালিয়েছে। লুট করে নিয়ে গেছে ৫ মন বাগদা চিংড়ি, ২০ হাজার টাকা, ৫ টি মোবাইল সেট, ১১ টি ঝাকি জালসহ অনুমানিক ৫ লক্ষাধিক টাকার মালামাল। তাদের মারধরে গুরুত্বর জখম হয়েছে ৫ ঘের শ্রমিক।

ঘের মালিকদের অভিযোগ, ইউনিয়নের মেধা কচ্ছপিয়া ছৈয়দ আলম গং অস্ত্রের মহড়া দিয়ে চিংড়ি ঘের দখল করার জন্য লুটপাট চালিয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল ইজারা পক্ষের নুরুল আজিম বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় ৪ জনের নাম ঠিকানাসহ অজ্ঞাতনামা ১৫/২০ জনের বিরুদ্ধে লিখিত এজাহার দায়ের করেছেন। এতে আসামী করা হয়েছে বর্ণিত ইউনিয়নের মেধা কচ্ছপিয়া গ্রামের মৃত কালামিয়ার পুত্র ছৈয়দ আলম (৫০), কক্সবাজার সদর উপজেলার নতুন অফিস জওন্নাকাটার মৃত কালা মিয়ার পুত্র মাহফুজুর রহমান (৫১), খুটাখালী বাককুম পাড়ার মৃত ছদর আমিনের পুত্র ইসলাম আহমদ (৪৮), একই এলাকার মৃত ছৈয়দ কাছিমের পুত্র মনজুর আলম (৪৭) সহ অজ্ঞাতনামা আরো ১৫/২০ জন।

চকরিয়া থানার তদন্ত কর্মকর্তা (ওসি) এজাহার দায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।

পাঠকের মতামত: