ঢাকা,সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

চকরিয়া জমজম হাসপাতালে এমডির পদ ফিরে পেতে মরিয়া গোলাম কবির

zamzaমিজবাউল হক,  চকরিয়া :

চকরিয়া জমজম হাসপাতালের এমডির পদে বহাল থাকতে এখন মরিয়া হয়ে উঠেছেন জামায়াত নেতা গোলাম কবির। যুদ্ধাপরাধী মামলা, সরকার বিরোধী নাশকতা কর্মকান্ডে আর্থিক সহযোগিতা ও হাসপাতালের কয়েক কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তাকে এমডির পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে। তাকে ওই পদে বহাল রাখতে ধর্না দিচ্ছেন যুদ্ধাপরাধ মামলার অন্যতম আসামী চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সাবেক এমপি অধ্যাপক এনামুল হক মঞ্জু।

জানা যায়, গত ১৪আগষ্ট চকরিয়া জমজম হাসপাতাল (প্রাঃ) লি: বোর্ড অব ডিরেক্টরস এর চেয়ারম্যান প্রফেসর ডাঃ মাহবুব কামাল চৌধুরীর সভাপতিত্বে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে ১১জন পরিচালকের সর্ব সম্মতিক্রমে বর্তমান এমডি গোলাম কবিরকে সরিয়ে নতুন এমডি হিসেবে হাসপাতালের পরিচালক চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের নাক, কান ও গলা বিশেজ্ঞ ডা: শওকত ওসমানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ওইদিন নতুন এমডি দায়িত্ব নিতে জমজম হাসপাতালে গেলে জামায়াত নেতা গোলাম কবির তার সহযোগি জামায়াত-শিবিরের ক্যাডার দিয়ে তাকে চরমভাবে নাজেহাল করে তাড়িয়ে দেন এবং তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। ওইদিন হাসপাতালের পরিচালক জিএম রফিককে তার ক্যাডার বাহিনী ধাওয়া দিয়েছেন। ওনসময় তিনি পায়ের মধ্যে মারাত্মক আহত হয়েছেন।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক পরিচালক জানান, গোলাম কবির এমডির পদটি ধরে রাখতে এখন মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তিনি বিভিন্নজনের কাছে ধর্না দিচ্ছেন। ইতোমধ্যে জামায়াত-শিবিরের চিহিৃত ক্যাডার শওকত ওসমানের নেতৃত্বে দাগী আসামীদের হাসপাতালে এনে জড়ো করে রেখেছেন। তিনি যুদ্ধাপরাধ মামলা ও বর্তমান সরকার বিরোধী নাশকতার খরচ যোগান দিতে আর্থিক তহবিল গঠন করেন। ওই হাসপাতালের অন্যতম উদ্যোক্তা ইসলাম ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি চকরিয়ায় দায়েরকৃত যুদ্ধাপরাধ মামলার অন্যতম আসামী চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সাবেক সাংসদ অধ্যাপক এনামুল হক মঞ্জুর মাধ্যমে এই টাকা দিচ্ছেন। এভাবে তিনি হাসপাতালের লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এসবের কেউ প্রতিবাদ করলে বিভিন্ন ভাবে নাজেহাল ও মামলার হুমকি ধমকি দিচ্ছেন। তাকে স্বপদে বহাল রাখতে জামায়াতের এই কেন্দ্রীয় নেতা বিভিন্নজনকে চাপ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক পরিচালক। যুদ্ধাপরাধী মামলা ও জামাত শিবিরকে পৃষ্ট পোষকতা ছাড়াও জমজম হাসপাতালের অবৈধ ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম কবিরের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। তিনি হাসপাতালের বিভিন্ন সময়ে মালামাল কেনাকাটায় ব্যাপক অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন। যন্ত্রপাতি কেনার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রতিষ্ঠান থেকে। অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনা, কম দামের যন্ত্র বেশি দামে কেনা, ভুয়া ভাউচার বিল করেছেন। এছাড়াও তিনি জেলা সিভিল সার্জন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, অডিট কমিটি ও হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে খরচ দিতে হয়। কিন্তু ওইসব প্রতিষ্ঠানে কাকে কত টাকা দেওয়া হয়েছে সেরকম কোন হিসাব না থাকায় গোলাম কবির গত দুই বছরে অন্তত কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

পাঠকের মতামত: