ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় ব্যবসায়ী হতাকান্ডে এলাকায় আতঙ্ক, আটক দুইজনের সম্পৃক্ততা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি!

faloupচকরিয়া অফিস :

চকরিয়ায় সিন্ডিকেট ব্যবসার বিরোধের জের ধরে বুধবার রাতে প্রতিপক্ষের হাতে খুন হওয়া ব্যবসায়িক পার্টনার রফিক উদ্দিন খুনের ঘটনায় উপকুলীয় অঞ্চলের বদরখালী ইউনিয়নে বর্তমানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। খুনের ঘটনার দুইদিন পর শুক্রবার নিহতের স্বজনরা ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইউনিয়নের সাতডালিয়া পাড়ার নজির আহমদের ছেলে চিংড়ি প্রকল্পের কর্মচারী আবদুল আজিজ ও মাতারবাড়ি পাড়ার কামাল উদ্দিনের স্ত্রী আজবাহার বেগমকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। এ ঘটনায় শনিবার রাতে চকরিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন থানার ওসি মো.জহিরুল ইসলাম খাঁন।

এদিকে আটক দুইজনের মধ্যে আবদুল আজিজের স্ত্রী রানু আক্তার ও পরিবার সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, আবদুল আজিজ এ ঘটনার সাথে কোন মতেই জড়িত নেই। তিনি স্থানীয় একটি চিংড়ি প্রকল্পে শ্রমিকের কাজ করতেন। ঘটনার দিনও তিনি ওই চিংড়ি প্রকল্পে কর্মরত ছিলেন। রানু আক্তার ও তার পরিবারের অভিযোগ, আবদুল আজিজের সাথে নিহত রফিক উদ্দিনের কোন ধরণের বিরোধ ছিলনা। তবে দীর্ঘদিন আগে মাতারবাড়ি পাড়া গ্রামের মোস্তাক আহমদ নামের একজনকে ৫০ হাজার টাকা দেন আবদুল আজিজ একটি চিংড়ি প্রকল্প ইজারা নেয়ার জন্য। কিন্তু টাকা নিয়ে চিংড়ি প্রকল্পটি ইজারা না দেয়ায় মুলত আবদুল আজিজের সাথে মোস্তাক আহমদের বিরোধের সৃষ্টি হয়। রানু আক্তারের দাবি, ওই মোস্তাক আহমদের ইন্ধনে মামলায় জড়িয়ে হয়রাণি করার জন্য পরিকল্পিতভাবে ঘটনার সাথে তার স্বামী আবদুল আজিজকে জড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। তিনি এব্যাপারে প্রশাসনের কাছে সুষ্ট তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, বদরখালী ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আবু ছৈয়দের ছেলে রফিক উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে বদরখালী বাজারস্থ সিন্ডিকেট অফিসের মাধ্যমে লবণ ও চিংড়ি মাছের ব্যবসা করে আসছিলেন। নিজের টাকা বিনিয়োগ করার পাশাপাশি রফিক একাধিক আত্মীয় স্বজন এবং বন্ধু-বান্ধব থেকে টাকা নিয়ে সিন্ডিকেট অফিসে দেন। রফিক উদ্দিন সিন্ডিকেট অফিস থেকে পাওনা প্রায় এক কোটি ৭০লাখ টাকা পাওনা রয়েছে।

নিহতের ভাই ওয়াজ উদ্দিন দাবি করেন, হিসাব করার সময় অফিস থেকে বাইরে ঢেকে নিয়ে তার ভাইকে (রফিক উদ্দিনকে) পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ ফেলে দেয়া হয় ইউনিয়নের ৩নম্বর ব্লকের বদরখালী সমিতির মালিকানাধীন বড় মাঠ লবণ ও চিংড়ি প্রকল্প এলাকায়। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মুলত পাওনা টাকা ফেরত চাইতে যাওয়ার কারনে তাঁরা রফিক উদ্দিনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।

এদিকে ব্যবসায়ী রফিক উদ্দিনকে হত্যার ঘটনায় সিন্ডিকেট অফিসের লোকজন জড়িত থাকার ঘটনাটি আঁচ করতে পেরে শুক্রবার রাত আনুমানিক সাড়ে সাতটার দিকে নিহতের স্বজন ও বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসি হামলা করে বদরখালী বাজারস্থ সিন্ডিকেট অফিসে। ওইসময় তাঁরা অফিসে ব্যাপক ভাংচুর করেন। ঘটনার খবর পেয়ে পাশের বদরখালী নৌ-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে চেষ্টা করেন। ওইসময় ঘটনাস্থলে পুলিশের সাথে বিক্ষুদ্ধ জনগনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে চার পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১৫জন কমবেশি আহত হয়েছেন। এ ঘটনার আগে নিহতের স্বজন ও এলাকার লোকজন ঘটনাস্থলের অদুরে একটি চিংড়ি প্রকল্প থেকে আবদুল আজিজ ও মাতারবাড়ি পাড়া গ্রামের কামাল উদ্দিনের স্ত্রী আজবাহার বেগমকে আটক করে। অভিযোগ উঠেছে, তাদেরকে আটকের পর ব্যাপক ভাবে মারধর করা হয়। বর্তমানে আটক দুইজনকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। #

পাঠকের মতামত: