ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

লামায় কাজীর সহায়তায় বাল্য বিবাহের হিড়িক

55মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ঃ

বান্দরবানের লামায় স্কুল, মাদ্রাসা পড়–য়া অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে-মেয়েদের কাজীর সহায়তায় বাল্য বিবাহের হিড়িক পড়েছে। ১২ আগষ্ট শুক্রবার লামা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডে সবুজ গিরি কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত এক বাল্যবিবাহ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে পন্ড করে দেয় পুলিশ। জানুয়ারী ২০১৬ থেকে এই পর্যন্ত পাওয়া তথ্য মতে লামা উপজেলায় প্রায় ১৭টি বাল্যবিবাহ সম্পন্ন হয়েছে। যাদের অধিকাংশরা ৭ম থেকে ১০ শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রী।

জানা গেছে, লামা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড মাষ্টার পাড়ার আবুল বাশারের মেয়ে শারমিন আক্তার(১৩) ও লামা সদর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের নুনার ঝিরি এলাকার মো. দেলোয়ারের ছেলে মো. দুলাল হোসেন(১৫) এর বিবাহ অনুষ্ঠান শুক্রবার সবুজগিরি কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়। বর যাত্রী ও এলাকার অনেকের থেকে জানা যায়, ১১ আগষ্ট বৃহস্পতিবার রাতে মেয়ের বাড়িতে উভয়ের বিবাহ সম্পাদন করে লামা পৌরসভার কাজী। শারমিন লামা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী ও মো. দুলাল হোসেন লামা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণীতে পড়ে। সংবাদ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে কমিউনিটি সেন্টারে গিয়ে বিবাহ পন্ড করে দেয় পুলিশ। অজ্ঞাত কারণে পুলিশ কাউকে আটক করেনি।

স্থানীয়রা জানায়, প্রতিনিয়ত এইরকম শত শত বিবাহ পড়াচ্ছে কাজীরা। জন্মনিবন্ধন জাল করে বা নিজেরা কম্পিউটারে তৈরি করে এই বাল্যবিবাহ পড়ায় কাজীরা। তাছাড়া গোপন সূত্রে জানা যায়, কাজীদের ২টি বিবাহের রেজিষ্টার রয়েছে। একটি সরকারী আরেকটি প্রেস থেকে তৈরি করা। এই সব বাল্যবিবাহ সমূহ জাল রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ করে। আইনি জটিলতা সৃষ্টি হলে তা গোপন করে বেঁচে যায় কাজীরা। সরকার যেখানে বাল্য বিবাহ বন্ধে জিহাদ ঘোষণা করেছে সেখানে কাজীদের অনিয়মের কারণে প্রতিনিয়ত হচ্ছে বাল্যবিবাহ।

এইরকম বাল্য বিবাহের শিকার আরো কয়েক জন হলেন, মাসুমা আক্তার লিজা (৮ম শ্রেণী) পিতা- মৃত কনু মিয়া লাইনঝিরি দাখিল মাদ্রাসা, আসমা আক্তার (৮ম শ্রেণী) পিতা- আলী আহামদ লাইন ঝিরি দাখিল মাদ্রাসা, হালিমা বেগম (৮ম শ্রেণী) পিতা- ছাবের আহমদ লাইনঝিরি দাখিল মাদ্রাসা, রিক্তা আক্তার (৭ম শ্রেণী) পিতা- আনোয়ার হোসেন লাইনঝিরি দাখিল মাদ্রাসা, বিবি হাজেরা ((৮ম শ্রেণী) স্বামী- রায়হান লাইনঝিরি দাখিল মাদ্রাসা।

বাল্যবিবাহের বিষয়ে কাজী মো. ইলিয়াছ এর মুঠোফোনে বলেন, আমি কোন বাল্য বিবাহ পড়াইনি। আমি বিষয়টি জানিনা।

এই বিষয়ে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার খালেদ মাহমুদ বলেন, বাল্যবিবাহ একটি ঘৃণীত কাজ। প্রতিমাসে আইনশৃঙ্খলা সভায় বাল্য বিবাহ রোধে কাজীদের বলা হয়। তাছাড়া স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় বাল্য বিবাহ রোধে নানান কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। এই কাজে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।

পাঠকের মতামত: