ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটির রন্ধ্রে রন্ধ্রে আইএস, হুজি, শিবির, দাবি ছাত্রলীগের

কক্সবাজার প্রতিনিধি :
কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনার রন্দ্রে রন্দ্রে আইএস, হরকতুল জিহাদ ও জামায়াত শিবির ঢুকে পড়েছে বলে দাবি করেছেন কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরুল হাসান রাশেদ। উগ্রবাদিদের নিয়ন্ত্রনে চলে যাওয়া কক্সবাজারের একমাত্র এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান নব নির্বাচিত জালালাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইমরুল রাশেদ।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির জঙ্গী কর্মকান্ড নিয়ে গতকাল দৈনিক কক্সবাজারে সংবাদ প্রকাশের পর জেলা জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। বিভিন্ন সময়ে সমালোচিত এই বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের জঙ্গী কার্যক্রমের খবরে প্রতিক্রিয়া জানায় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি তার ফেইসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন। “লায়ন- টাইগার ও তাঁদের আন্ডা বাচ্চা মুক্ত কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি চাই।
কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে কক্সবাজারবাসীর জন্য বিশেষ উপহার। এই বিশেষ উপহারটি যার হাতে তুলে দিয়েছিলেন সেই ভাগ্যবান লোকটি ছিল আমাদের আপনাদের সকলের পরিচিত সিআইপি সালাহ উদ্দীন সাহেব। যাকে আমরা প্রগতিশীল সংগঠনের নেতা হিসেবে চিনি। কিন্তু কিসের লোভে, কিসের অভাবে কার পরামর্শে তিনি জননেত্রীর এই মূল্যবান উপহারটি সাবেক দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার লায়ন মুজিবের হাতে তুলে দিয়েছেন?  লায়ন মুজিব সেই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রন্ধ্রে রন্ধ্রে হালের আইএস, হিযবুদ তাহেরীর জামায়াত-শিবিবের সাবেক ও বর্তমান ক্যাডারদের পুনর্বাসন করতে বিন্দু মাত্রই ভুল করেননি। যা ইতিমধ্যে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ফলাও করে প্রচারিত হয়েছে হচ্ছে। শিল্প-সংস্কৃতির অন্যতম পাঠশালা যদি এরকম প্রতিক্রিয়াশীল মানুষদের পুনর্বাসন করা হয় তাহলে এর ফলাফল কোনভাবেই জাতির জন্য সুখকর হবেনা। আমি প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনের একজন কর্মী হিসেবে এই কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। পাশাপাশি প্রতিক্রিয়াশীল সেই সব কর্মকর্তা-কর্মচারি ও তাদের মদদদাতাদের আইনের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিক্ষামন্ত্রী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন ও প্রসাশনের কর্মকর্তাদের প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি। অন্যথায় এই জঙ্গী কারখানার হোতাদের বিরুদ্ধে সকল প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনকে নিয়ে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের বৃহত্তর আন্দোলন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।”
ইউনিভার্সিটি ছাত্রলীগের বিবৃতি ঃ
হাজার বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। এদেশের সকল আন্দোলন সংগ্রামে ছাত্রলীগের ভূমিকা প্রশংসনীয়। বিশ্বে এমন কোন ছাত্র সংগঠন নেই যেই সংগঠনের ১৭ হাজার নেতাকর্মী একটি দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে। ছাত্রলীগ সকল অনিয়ম, অস্পষ্ট ও অসত্যের বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্চার।
সাম্প্রতিক সময়ে জঙ্গীবাদের উত্থান ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধেও ছাত্রলীগের অবস্থান স্পষ্ট। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা নিজেদের প্রাণের বিনিময় বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন বাংলাদেশ রক্ষা করবে। গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা উল্লেখ করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি শাখা।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ছাত্রলীগের সভাপতি মইন উদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক ওয়াসিফ কবির যৌথ বিবৃতিতে জানান- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা জনসভায় ঘোষণা দিয়ে কক্সবাজারবাসীকে উপহার হিসেবে একটি বিশ্ববিদ্যালয় দিয়েছেন। এই বিশ্ববিদ্যালয় দক্ষিণ চট্টগ্রামের একমাত্র বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।
বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয়- সাম্প্রতিক সময়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে জঙ্গীবাদের আস্ফালনের ব্যাপারে সতর্ক রয়েছে ছাত্রলীগ। জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের ভূমিকা সর্বমহলে প্রশংসনীয় হয়েছে। একইভাবে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতেও সতর্ক রয়েছে ছাত্রলীগ। এই ইউনিভার্সিটিতে যদি কেউ কোন ধরনের জঙ্গীবাদী কার্যক্রম করে বা করার চেষ্টা করে তাহলে তা শক্তহাতে দমন করা হবে।
আর ইউনিভার্সিটির বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইউনিভার্সিটির সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের প্রতি দাবী জানান ছাত্রলীগ। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দৃঢ়কণ্ঠে সকলের প্রতি স্পষ্ট করেন- সব ধরনের জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস ও নাশকতার বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ সোচ্চার। আর এই ধরনের কোন সংশ্লিষ্টতা যদি প্রমান হয় বা পূর্ব তথ্য থাকে তাহলে এসবের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমে শক্তহাতে প্রতিহত করবে ছাত্রলীগ।

পাঠকের মতামত: