ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতায় জন দুর্ভোগে চরমে

Chakaria Pic. (Harbang) 10.07.16স্টাফ রিপোর্টার, চকরিয়া :
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ ও মাতামুহুরী নদীতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে প্লাবিত হওয়া উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের নিন্মাঞ্চল থেকে এখনো নেমে যেতে পারেনি। এতে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে জলাবদ্ধতা। অনেক স্থানে সড়ক পর্যন্ত ডুবে থাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থায় মারাত্মক বিপর্যয় ঘটছে। জলাবদ্ধতার কারণে তলিয়ে রয়েছে বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত।
দ্রুত পানি সরে না যাওয়ার পেছনে কি কারণ রয়েছে, এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে ভুক্তভোগী বিভিন্ন ইউনিয়নের বাসিন্দারা জানান, গতবছরের একাধিক ভয়াবহ বন্যায় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধগুলো ল-ভ- হয়ে যায়। ইতিমধ্যে একবছর পেরিয়ে গেলেও তা সংস্কার বা টেকসইভাবে নির্মাণ না হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, অতি সম্প্রতি কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে মাতামুহুরী নদীতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে হু হু করে। গতবছরের পর পর চারটি ভয়াবহ বন্যায় ভেঙে খান খান হয়ে যাওয়া বেড়িবাঁধগুলোর সংস্কার না হওয়ায় পাহাড়ি ঢলের পানি নিন্মাঞ্চলে প্রবেশ করে। এতে কাকারা, লক্ষ্যারচর, কৈয়ারবিল, বরইতলী, হারবাং, কোনাখালী, বিএমচর, পূর্ব বড় ভেওলা, পশিম বড় ভেওলা, সাহারবিল, চিরিঙ্গাসহ অপে—গাকৃত নিচু ইউনিয়নগুলোর নিন্মাঞ্চল প¯œাবিত হয়েছে। ঈদের দিন বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টিপাত তেমন না হলেও লোকালয়ে ঢুকে পড়া বানের পানি স্থিতিশীল অবস্থায়ই রয়ে গেছে। এতে অনেক স্থানে গ্রামীণ অবকাঠামো পর্যন্ত তলিয়ে রয়েছে। তলিয়ে গেছে বিস্তীর্ণ ফসলের ক্ষেত।
চিরিঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জসীম উদ্দিন, বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জালাল আহমদ সিকদার, ল—গ্যারচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম মো¯ত্মফা কাইছার, কাকারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শওকত ওসমান, কৈয়ারবিল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মক্কী ইকবাল হোসেনসহ এসব ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা বলেন, ‘মাতামুহুরী নদীতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি ও লাগাতার ভারী বর্ষণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। বিশেষ করে বেড়িবাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে ঢলের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সারাদেশ থেকে ঈদ উদযাপনে আসা গ্রামের মানুষগুলো চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন ভয়াবহ জলাবদ্ধতায়। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় এসব ইউনিয়নের অন্তত ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।’
এদিকে পাশাপাশি ইউনিয়ন হারবাং ও বরইতলী রাস্তার মাথা থেকে পাহাড়তলী মাদ্রাসা গেইট পর্যন্ত দুই ইউনিয়নের যোগাযোগের একমাত্র সড়কটি পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন, স্থানীয় একটি চক্র মাছ চাষ করার জন্য সড়কটি পাশে মাটির বাঁধ দিয়ে পানি চলাচল পথ রুদ্ধ করে রাখায় সামান্য বৃষ্টিপাতেই দিনের পর দিন পানির নিচে তলিয়ে থাকে। এতে যোগাযোগের ক্ষেত্রে মারাত্মক দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন হাজারো মানুষ। বিশেষ করে ওই সড়ক ব্যবহার করে প্রতিদিন যাতায়াত করে স্কুল, মাদ্রাসাসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। প্রতিদিন হাজারো শিক্ষার্থী জমে থাকা ওই পানি মাড়িয়ে যাতায়াত করে থাকে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি জাফর আলম বলেন, ‘নিন্মাঞ্চলে জমে থাকা বানের পানি যাতে নেমে যেতে পারে সেজন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে কী করণীয় তা নির্ধারণ করা হবে।’

পাঠকের মতামত: