ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় ঈদের দিনে প্রবাসী ও শিক্ষকের বাড়িতে ডাকাতি

dakati-21এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :::

কক্সবাজারের চকরিয়ায় ঈদের দিন সকালে দুইটি বসতবাড়িতে ডাকাতি সংঘঠিত হয়েছে। এছাড়া উপজেলা সদরে দুই সাংবাদিকের অফিসসহ তিনটি চুরি সংঘঠিত হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় লোকজনের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।

স্থানীয় লোকজন জানায়, ঈদের দিন (বৃহস্পতিবার) সকাল ৯টার চকরিয়া পৌর শহরের হাসপাতাল পাড়া এলাকায় প্রবাসী মাহমুদুল হকের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার সময় বাড়িতে কোনো পুরুষ সদস্য না থাকার সুযোগে পাঁচ সদস্যের স্বশস্ত্র ডাকাতদল বাড়িতে ঢুকে নারী সদস্যদের হাত-পা বেঁধে রেখে ২৫ ভরি স্বর্ণ, দুই লাখ নগদ টাকা ও তিনটি মোবাইল সেট লুট করে নিয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন তাঁদের পেছনে ধাওয়া দিলেও ধরতে পারেননি। এ ঘটনার পর থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে ডাকাতদের ফেলে যাওয়া একটি ছোরা, একটি মুখোশ, একটি স্কসটেপ, রশি ও দুই রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করে।

জানতে চাইলে চকরিয়া থানার এসআই সুকান্ত চৌধুরী বলেন, ঘটনাস্থল থেকে কিছু আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। মালামাল উদ্ধার ও ডাকাতদের ধরার চেষ্টা চলছে।

আক্রান্ত পরিবারের গৃহকর্তা প্রবাসী মাহমুদুল হকের ছেলে আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাঈদ বলেন, তাঁদের ছয় তলা বাড়ি। দ্বিতীয় তলায় তাঁরা থাকতেন। ঈদের দিন সকালে বাড়ির পুরুষ সদস্যরা নামাজ আদায় করতে গেলে স্বশস্ত্র ডাকাতদল ঘরে ঢুকে স্বর্ণালঙ্কার, টাকা ও মোবাইল সেট লুট করে নিয়ে যায়।

এদিকে ঈদের আগেরদিন বুধবার রাতে উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের এসএম চর এলাকার শিক্ষক তাজউদ্দিনের বাড়িতেও ডাকাতদল হানা দেয়। এসময় একটি স্বর্ণের চেইন, দুইটি মোবাইল সেট ও কিছু কাপড়-চোপড় লুটে নেয় স্বশস্ত্র ডাকাতদল। এসময় স্থানীয় মসজিদের মাইকে ডাকাত হানা দেওয়ার ঘটনা প্রচার করা হলে ডাকাতেরা পালিয়ে যায়।

এছাড়াও ঈদের দিন সকালে চকরিয়া পৌরসদরের সমবায় মার্কেটস্থ তৃতীয় তলায় দৈনিক ভোরের কাগজের চকরিয়া প্রতিনিধি মিজবাউল হক ও চকরিয়া নিউজ ডমকট সম্পাদক জহিরুল ইসলামের অফিসে তালার লক ভেঙ্গে অফিসে হানা দেয় চোরের দল। ওইসময় চোরের দল দুই সাংবাদিককের ব্যবহৃত তিনটি ল্যাপটপ, ১টি কম্পিউটার ও ২টি ক্যামরাসহ প্রায় পাঁচ লাখ টাকার মালামাল লুটে নিয়ে যায়।

সাংবাদিক মিজবাউল হক বলেন, ওইদিন তিনি ঈদের ছুটিতে বাড়িতে ছিলেন। অন্য সহকর্মী সাংবাদিক জহিরুল ইসলাম ঈদের দিন বিকালে পেশাগত কাজে অফিসে আসলে চুরির ঘটনাটি দেখতে পান। চুরি হওয়া মালামালের মধ্যে রয়েছে স্যামসাং কোম্পানির একটি ল্যাপটপ, একই কোম্পানির একটি সেমি এসএলআর ভিড়িও ক্যামরা, একটি ডিজিটাল ক্যামরা, কোরাই-৩ মডেলের একটি কম্পিউটার ও কম্প্যাক কোম্পানির ৬১৫ মডেলের একটি ল্যাপটপ, ১টি ডিজিটাল ক্যামরা, একটি মোবাইল। তিনি বলেন, চুরির ঘটনাটি তাৎক্ষনিক চকরিয়া থানার ওসি জহিরুল ইসলাম খানকে অবহিত করা হলে তিনি থানার এসআই সুকান্ত চৌধুরীকে ঘটনাস্থলে পাঠান। এ ঘটনায় শনিবার (৯জুলাই) সাংবাদিক মিজবাউল হক বাদি হয়ে চকরিয়া থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন।

একই সময়ে চকরিয়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের একটি ভাড়া বাসা থেকে পৌরসভার প্রকৌশলী মৃনাল ধরের মোটরসাইকেল চুরি করে নিয়ে যায় চোরের দল। ঈদের দিন রাতে কাকারা ইউনিয়নের এস এম চরের হাছু মিয়ার বাড়িতে প্রবেশের সময় এক চোরকে পাকড়াও করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা।

অপরদিকে চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ঘুনিয়া এলাকায় বিনা বাধাঁয় ডাকাতি করতে প্রবাসী আশেক উদ্দিন, জসিম উদ্দিন ও জমির উদ্দিন নামের তিন ভাইয়ের বাড়ীতে উড়ো চিঠি দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। চিঠিতে লেখা হয়েছে, বাঁধাহীন ডাকাতি করতে রাত দুইটায় আপনাদের ঘরের দরজা খোলা রাখতে হবে। চিঠি পেয়ে ভয়ে প্রবাসী পরিবারের গৃহবধুরা বাবার বাড়ি চলে গেছেন।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহিরুল ইসলাম খান বলেন, সব ঘটনার ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করা হয়নি। তবে যে কয়টি অভিযোগ পেয়েছি, তা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। #

পাঠকের মতামত: