ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

গুলশানে সন্ত্রাসী হামলা জঙ্গি রোহানের বাবা আওয়ামী লীগ নেতা!

image_159844_0নিউজ ডেস্ক :::

ঢাকা: গুলশানের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় যে পাঁচজন ‘আইএস সদস্যের’ ছবি সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ আইএসের বরাতে প্রকাশ করেছে, তার মধ্যে একজনকে আওয়ামী লীগের এক নেতার ছেলে রোহান ইবনে ইমতিয়াজ বলে শনাক্ত করেছেন ক্ষমতাসীন দলটির আরেক নেতা।

রোহান নিখোঁজ জানিয়ে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা ও বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের উপ-মহাসচিব এস এম ইমতিয়াজ খান (বাবুল) গত ৪ জানুয়ারি রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। তার সাত মাস পর শুক্রবার হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পর আইএস হামলাকারী হিসেবে তাদের পাঁচ সদস্যের যে ছবি ইন্টারনেটে দেয়, তাতে রোহানের ছবি আসে।

বাবুল গত ৪ জানুয়ারি মোহাম্মদপুর থানায় যে জিডি করেছেন, তাতে ছেলে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর ছাত্র রোহান ইবনে ইমতিয়াজের বয়স উল্লেখ করা হয়েছে ২০ বছর। চেহারার বিবরণে বলা হয়েছে, উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি, গায়ের রং ফর্সা, মুখমণ্ডল লম্বাটে, মাথায় ঘনকালো চুল।

জিডিতে বলা হয়, গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর চিকিৎসার জন্য সস্ত্রীক ভারতে যান ইমতিয়াজ বাবুল। ভারতে থাকার সময় ৩০ ডিসেম্বর রোহান বাসা থেকে বেরিয়ে আর ফেরেনি বলে খবর পান তিনি। ১ জানুয়ারি ঢাকায় ফিরে আত্মীয়-স্বজন ও রোহানের বন্ধু-বান্ধবের কাছে সন্ধান করেও খোঁজ না পেয়ে ৪ জানুয়ারি জিডি করেন তিনি।

সদ্য বিলুপ্ত অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুকুল চৌধুরী রোববার একটি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “বিভিন্ন পত্রপত্রিকা এবং ফেইসবুকে ছবি দেখে আমরা বুঝতে পেরেছি ওটা (রোহান) ইমতিয়াজ বাবুলের ছেলে।”

ইমতিয়াজ বাবুল সদ্য বিলুপ্ত অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন। রোহানকে বাবুলের ছেলে বলে শনাক্তকারী মুকুল ওই কমিটিতে সহ-সভাপতি ছিলেন।

রোহান ইমতিয়াজ স্কলাসটিকার সাবেক ছাত্র, তার মা নামি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গণিতের শিক্ষক। বাবা ও মার সঙ্গে তার ছবির পাশে সাইটের ছবি বসিয়ে ফেইসবুকে অনেকেই দুই ছবির চেহারায় মিল দেখাচ্ছেন।

রেস্তোরায় হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে হত্যার পর কমান্ডো অভিযানে ছয় হামলাকারীর নিহত হওয়ার কথা সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়। এরপর পুলিশ যে পাঁচজনের লাশের ছবি প্রকাশ করেছে, তার মধ্যে রোহান নেই বলে তার স্বজনরা জানিয়েছেন।

এদিকে সাইট ইন্টেলিজেন্সে প্রকাশিত হামলাকারীদের নাম কিংবা পুলিশের দেয়া নামে রোহান ইমতিয়াজ বলে কেউ নেই। সাইট পাঁচ হামলাকারীর নাম বলেছে- আবু উমর, আবু সালমা, আবু রহিম, আবু মুসলিম ও আবু মুহারিব। অন্যদিকে পুলিশ নাম বলেছে- আকাশ, বিকাশ, ডন, বাঁধন ও রিপন।

পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হক শনিবার বলেছেন, গুলশানে হামলাকারী পাঁচজন জেএমবি সদস্য এবং তাদের খোঁজা হচ্ছিল। তবে আইএসের দায় স্বীকার কিংবা ছবির সত্যতা পুলিশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়নি। বাংলাদেশ পুলিশ বরাবরই আইএসের নামে আসা বার্তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে আসছে।

এ বিষয়ে কথা বলতে ইমতিয়াজ বাবুলের মোহাম্মদপুরের বাড়িতে যোগাযোগ করা হলেও কেউ কথা বলতে রাজি হননি।

তবে ছেলের খোঁজ পাওয়ার জন্য একাধিকবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের আইজির কাছে এবং র্যাব সদর দপ্তরে গিয়েছিলেন বাবুল। এই সময়গুলোতে তার সঙ্গে থাকা এক স্বজন এ তথ্য জানান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি জানান, নিখোঁজ হওয়ার কিছু দিন আগে থেকে নিয়মিত নামাজ পড়তে শুরু করেছিল রোহান। বাসার সামনে মসজিদেও আসা-যাওয়া করত।

পাঠকের মতামত: