ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

চকরিয়ায় রোজার ঈদ উপলক্ষে চলছে হুন্ডির মাধ্যমে লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য

hundiএম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :::

চকরিয়ায় রোজার ঈদকে উপলক্ষ করে বর্তমানে প্রতিদিন চলছে হুন্ডির মাধ্যমে লাখ লাখ টাকার অবৈধ বাণিজ্য। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার যথাযথ নজরদারি না থাকার সুবাদে উপজেলার বিভিন্ন জনপদে অবৈধ হুন্ডি ব্যবসা দিনদিন জনপ্রিয়তা হয়ে উঠেছে। বর্তমানে উপজেলার সদরের একাধিক বাণিজ্যিক বিপনী কিংবা ভ্রাম্যমান পদ্ধতিতে চলছে হুন্ডির টাকা লেনদেনের কাজ কারবার। স্থানীয় প্রশাসনের নিলিপ্তার সুযোগে প্রবাসীরা ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর বদলে এখন সহজ মাধ্যম হিসেবে হুন্ডির প্রথাকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন। এতেকরে সরকার প্রতিবছর এ খাতে বিপুল টাকার রাজস্ব হারাচ্ছেন। উপজেলা সদরে অবস্থিত একাধিক বাণিজ্যিক ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশ থেকে টাকা পাচার হওয়ার ঘটনাটির সত্যতা মিলেছে। ব্যাংক কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, প্রবাসীরা বিদেশ থেকে ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে পরিবার পরিজনের জন্য টাকা পাঠালে একটি রেমিডেন্স ব্যাংকের কোষাগারে জমা হয়। ব্যাংকের গচ্ছিত রেমিডেন্সের একটি অংশ সরকারের রাজস্ব খাতে দেয়া হয় যথা নিয়মে। কিন্তু হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশ থেকে বেশির ভাগ টাকা লেনদেন হওয়ার কারনে ব্যাংকের রেমিডেন্স বলতে গেলে শুন্যের কোটায় চলে যাচ্ছে। এতে সরকারও রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকার অন্তত লক্ষাধিক প্রবাসী কয়েক যুগ ধরে অর্থ উর্পাজনের জন্য সৌদিআরব, দুবাই, কাতার, ভারত, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে চাকুরীসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্টানে কর্মরত থেকে প্রবাস জীবনে রয়েছে। তাঁরা বছরের বেশির ভাগ সময় কমবেশি পরিবারের জন্য হুন্ডির মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠালেও বিশেষ করে রোজার ঈদকে সামনে রেখে প্রতিবছর লেনদেনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, আগেকার সময়ে প্রবাসীরা ব্যাংকের মাধ্যমে পরিবারের জন্য দেশে টাকা পাঠিয়ে থাকলেও গেল কয়েকবছর ধরে সেই দৃশ্যপট একেবারে বদলে গেছে। বর্তমানে প্রবাসীরা অনেকটা সহজ মাধ্যম হিসেবে পরিবারের জন্য দেশে টাকা পাঠাচ্ছেন হুন্ডির মাধ্যমে। লেনদেনের মাধ্যমে অবৈধ হুন্ডি ব্যবসায়ীরা লাভবান হলেও পক্ষান্তরে আশানুরূপ রেমিডেন্স পাচ্ছেনা বাণিজ্যিক ব্যাংক গুলো। এতে সরকারও রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রশাসনের যথাযথ মনিটরিং না থাকার সুযোগে বর্তমানে চকরিয়া উপজেলা সদরের বিপনি বিতান গুলোতে বিশেষ করে কাপড়ের দোকান, মুদিমালের দোকান, কসমেটিক্স’র দোকান, ফোন ফ্যাক্সের দোকান ও ট্রাভেল এজেন্সির আড়ালে অন্তত দুই শতাধিক ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে হুন্ডি ব্যবসা চালিয়ে আসছে। এছাড়াও উপজেলা ও পৌরসভা এলাকার বিভিন্ন জনপদে অনেকে ভ্রাম্যমান পদ্ধতিতে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা লেনদেন করে আসছে।

সুত্রে জানা গেছে, কয়েকবছর আগে এভারে হুন্ডির টাকা পাচারকালে চকরিয়া সদরের ইসলামী ব্যাংকের সামনে ও উপজেলার জিদ্দাবাজার এলাকায় কয়েকটি টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওইসময় হুন্ডি ব্যবসায়ীরা টাকার মালিকানা দাবি করে আইনের আশ্রয় নিতে র্ব্যথ হওয়ায় লুটের পর ওই টাকা উদ্ধারে প্রশাসনের সহায়তাও নিতে পারেনি। অভিযোগ রয়েছে, ব্যক্তিগত ভাবে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশ থেকে টাকা পাচারের ঘটনা অব্যাহত থাকলেও উপজেলা সদরের একাধিক বাণিজ্যিক ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও গোপনে এ ব্যবসায় জড়িত রয়েছেন। প্রশাসন তদন্তের মাধ্যমে প্রবাসীদের ব্যাংক একাউন্টের অতীতের এবং বর্তমান লেনদেনের হিসাব মিলিয়ে দেখলেই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে বলে মনে করেন অভিজ্ঞ মহল।

পাঠকের মতামত: