ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় মাতামুহুরী নদীতে তীরসংরক্ষন বাঁধ নির্মাণে বন্যার ভাঙ্গনমুক্ত লোকালয়

৩এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :::    চকরিয়ায় মাতামুহুরী নদীতে তীর সংরক্ষন বাঁধ নির্মাণের ফলে ভাঙ্গন মুক্ত হয়েছে হাজারো জনবসতি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে ঠিকাদারী প্রতিষ্টান মের্সাস গিয়াস কন্ট্রাক্টশন কার্যাদেশ পেয়ে চলতিবছরের মার্চের প্রথম সপ্তাহে চকরিয়া পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের আবদুল বারী পাড়া অংশে মাতামুহুরী নদীতে তীর সংরক্ষন বাঁধের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। জুনমাসের প্রথমদিকে প্রকল্পের কাজ সন্তোষজনকভাবে শেষ করেছেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজি মোহাম্মদ ইলিয়াছের প্রচেষ্টায় নদীর তীর সংরক্ষন কাজটি সমাপ্ত হওয়ার ফলে বর্তমানে এলাকার কয়েক হাজার জনবসতি বন্যার ভয়াবহ ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের চকরিয়া শাখা কর্মকর্তা কাজী নজরুল ইসলাম বলেন, চকরিয়া পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের আবদুল বারীপাড়া অংশে মাতামুহুরী নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গন রোধে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প গ্রহন করেন। টেন্ডারের মাধ্যমে ঠিকাদারী প্রতিষ্টান মের্সাস গিয়াস কন্ট্রাক্টশন কার্যাদেশ পেয়ে চলতিবছরের মার্চ মাসে আড়াইশত মিটার এলাকার নদীর তীর সংরক্ষন বাঁধের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ইতোমধ্যে নির্মাণ কাজ সন্তোষজনকভাবে শেষ করা হয়েছে। তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজের তদারক প্রতিষ্টান ট্রান্সফোর্সের প্রধান প্রকৌশলী তোফায়েল আহমদ ও সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঠিক দেখভালের মাধ্যমে নির্মাণ কাজে জিও ব্যাগ ও সিমেন্ট এবং বালু মিশ্রিত ঘানি ব্যাগ বসানোর মাধ্যমে টেকসইভাবে প্রকল্পের কাজটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তাঁর ধারনা, বড় ধরণের বন্যা বা বিপর্যয় না হলে নদীর তীরে বসানো এসব ঘানি ব্যাগ ও জিও ব্যাগ অন্তত পক্ষে দীর্ঘসময় পানির ধাক্কা সামলে নেবে। এতেকরে ওই এলাকার জনবসতি আগামীতে নদীতে বিলীন হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

চকরিয়া পৌরসভার স্থানীয় নারী কাউন্সিলর রাশেদা বেগম বলেন, মাতামুহুরী নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গনের কবলে পড়ে ইতোমধ্যে গেল কয়েকবছরে এলাকার শতাধিক বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বিপুল পরিমাণ পরিবার ভিটেবাড়ি হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়েছে। তিনি বলেন, স্থানীয় এমপি হাজি মোহাম্মদ ইলিয়াছের সহযোগিতায় পানি উন্নয়ন বোর্ড একটু দেরীতে হলেও প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার কারনে বর্তমানে আবদুল বারীপাড়া, চরপাড়া ও সামনের এলাকা কাজিরপাড়া সহ আশপাশের গ্রামের অন্তত দশ হাজার পরিবার বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.সবিবুর রহমান বলেন, সিনিয়র কর্মকর্তাদের সুষ্ঠ মনিটরিংয়ের মাধ্যমে চকরিয়া পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের আবদুল বারী পাড়া অংশে মাতামুহুরী নদীতে তীর সংরক্ষন বাঁধের নির্মাণ কাজটি টেকসইভাবে শেষ করা হয়েছে। একইভাবে উপজেলার অন্য এলাকায় বাস্তবায়নধীন প্রকল্প গুলোর কাজ এগিয়ে নিতে সর্বাত্তক চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোন ধরণের অনিয়মের সুযোগ নেই। তারপরও কাজের ব্যাপারে ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের গাফেলতির অভিযোগ থাকলেও প্রয়োজনে তাদের বিল ছাড় দেওয়া হবেনা।

চকরিয়া-পেকুয়া আসনের এমপি হাজি মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, গত কয়েকবছরের বন্যার সময় চকরিয়া উপজেলার একাধিক পয়েন্টে মাতামুহুরী নদীর তীর এলাকা ভেঙ্গে যায়। এতে শত শত পরিবার ঘরবাড়ি ও জায়গা-জমি হারিয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দাবি ও এলাকা পরিদর্শন করে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাকে অগ্রাধিকার দিয়ে নদীর তীর সংরক্ষন বাঁেধর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বাস্তবায়ধীন কাজ গুলো যাতে স্বচ্ছতা ও টেকসইভাবে করা হয় সেই জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পাঠকের মতামত: