ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়া পৌরশহরে অবাধে বিক্রি হচ্ছে ভেজাল খাবার ও ইফতার সামগ্রী, ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার জরুরী

basikhabarমিজবাউল হক, চকরিয়া:

পবিত্র রমজান মাসে চকরিয়া পৌরশহরের চিরিংগায় অধিকাংশ হোটেল-রেষ্টুরেন্টে অবাধে বিক্রি হচ্ছে ভেজাল ও পঁচা-বাসি খাবার। বিক্রি করছেন ভেজাল ইফতার সামগ্রীও। বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমান আদালতের ভেজাল বিরোধী অভিযান চালালেও দীর্ঘদিন ধরে সেই একই নিয়মে চলে আসছে ভেজাল খাবার ও ইফতারের রমরমা ব্যবসা।

জানা যায়, খাদ্য দ্রব্য ও ইফতার সামগ্রী সহ প্রতিটি জিনিসেই ভেজাল ভরে গেছে। চকরিয়া উপজেলাসহ পৌরশহর ও বাজারগুলোতে। বেশির ভাগ ভেজালকারীদের খপ্পরে পড়ছে পৌরবাসী। না জেনে বুঝে এই ভেজাল খেয়ে পরে বাঁধতেছে শরীরে নানা রকম মরণব্যধি। মানুষের শরীরে মাঝে দেখা দিচ্ছে নতুন নতুন নাম জানা অজানা রোগব্যধির। ক্রেতাদের অভিযোগ, ইফতার সামগ্রী তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের উপকরণ। মেশানো হচ্ছে বিভিন্ন ধরণের রং। পবিত্র রমজানকে পুঁজি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফার আশায় এই অপকর্ম করছে বলে জানান সাধারণ ক্রেতারা। যদিও প্রয়োজনের তাগিদেই তাদের এসব খাবার কিনে খেতে হচ্ছে। তাছাড়া ফলমূলকে পাকানো হচ্ছে বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে। পৌরশহর চিরিঙ্গায় মৌসুমে ফলে ভরে গেছে। সব ফলেই মেশানো হয়েছে ফরমালিন। এমনকি ফলমুল বাদেও সবজি, মাছকে ফরমালিন দিয়ে সতেজ রাখা হচ্ছে। এসব খাদ্য খেয়ে মানুষের বিভিন্ন নাম জানা অজানা মরণব্যাধির সৃষ্টি হচ্ছে। মাছ বা সবজির মধ্যে মেশানো হচ্ছে ফরমালিন। এসব পন্য গুলোতে সতেজ রাখতে পারলে ক্রেতারা আকৃষ্ট হয় বলে মনে করছেন ব্যবসায়িরা।

অনেকে রাস্তার পাশে অস্থায়ীভাবে দোকান দিয়ে খোলা আকাশের নিচে ইফতার সামগ্রী বিক্রি করছেন। কিন্তু এসব রকমারি ইফতার সামগ্রীর মান নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। তারপরও রোজাদাররা বাধ্য হয়ে ওইসব সামগ্রী ক্রয় করছেন। প্রতিবছরের মতো ইফতারিতে তেমন কোনো বৈচিত্র নেই। সচরাচর যেগুলো বেশি বিক্রি হয় সে গুলোই তারা তৈরি করেছেন। বিশেষ করে সাধারণ মানুষ আলুর চপ, বেগুনি, ছোলা, পেঁয়াজু, সবজির বড়া, ডিমের চপ, শাহী জিলাপি ইত্যাদির প্রতিবেশি ঝুঁকেছেন। চিরিঙ্গা কাঁচাবাজার সড়ক ও ইসলামী ব্যাংকের পিছনে গড়া উঠা ৫-৬টি হোটেল রেষ্টুরেন্টের পরিবেশ খুবই অস্বাস্থ্যকর। পাশাপাশি রাজভবন ও অভিরুচি রেষ্টুরেন্টে খোলা ও নোংরা পরিবেশে খাবার তৈরি করে বিক্রি করছেন। হোটেল গুলোর রান্না ঘরের, ভেতরে স্যাঁতস্যাঁতে ময়লা, দুর্গন্ধ এবং রান্না করা খাবার গুলোতে ময়লা ও মাছির উপদ্রব কম নয়। রান্নায় ব্যবহার করা পানি গুলোও বিশুদ্ধ নয়। বসার চেয়ার টেবিল গ্লাস-জগ অপরিস্কার। পুকুরের পানি ব্যবহার করে যাচ্ছে অধিকাংশই হোটেল। বদরখালী ইউনিয়ন থেকে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা আবদুল গণি জানান, পৌর শহরের চিরিংগা গড়ে উঠা হোটেল রেষ্টুরেন্টে অপরিস্কার পঁচাবাসির খাবার বিক্রি করা হচ্ছে। তাছাড়া বয়দের শারিরীক অপরিচ্ছন্নতা, পোষাক সচেতনতা ও ক্রেতা সার্ভিস অত্যন্ত নাজুক। এবং বে-আইনি শিশু শ্রম আছে।

চকরিয়া সরকারি হাসপাতালের আরএমও ডা: ছাবের আহমদ জানান, ভেজাল খাবার খাওয়ার কারণে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। খোলা বাজারের খাবার গুলোতে মেশানো হচ্ছে বিভিন্ন ধরণের রং। এসব ভাজাপোড়া খাবার তৈরী করছেন পোড়া তৈল দিয়ে। এতে ডায়ারিয়া ও আমাশা সহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। সারাদিন রোজা রেখে এসব না খাওয়াই ভালো। রোজাদারদের ইফতার সামগ্রীতে পরিবর্তন আনারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

অপরদিকে পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই গরু ছাগল জবাই করা হচ্ছে। পৌরশহরের চিরিঙ্গা বাজার গুলোতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা এমনকি মৌলভী ছাড়াই কাকডাকা ভোরে জবাই করা হচ্ছে গরু ছাগল গুলো। ক্রেতারা কোন ভাবেই জানতে পারছে না কোনটি আসল-নকল, কোনটি হালাল হারাম। ভেজালকারীরা বছরে এক দুই বার ধরাও পরে জরিমানাও হয়। তার পরেও চলছে ভেজালের দৌরাত্ব, প্রশাসনও সচেতন কিন্তু বন্ধ হচ্ছে না এসব কিছুই। গরু-ছাগল জবাই করার জন্য নির্দিষ্ট স্থানও নেই। যেখানে সেখানে জবাই করছে গরু-ছাগল। স্থানিয়রা জানান, সরকারীভাবে বাসি খাবার ও ইফতার সামগ্রী বিক্রিসহ অপরিচ্ছন্নতার আইন থাকলে তার প্রয়োগ নাই। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করার জন্য হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন মহল। ##

পাঠকের মতামত: