ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

লামায় বন্যহাতির আক্রমণে ২২ বসতঘর ভেঙ্গে দিয়েছে

30373_111-300x180লামা প্রতিনিধি :::

বান্দরবানের লামা উপজেলায় বন্যহাতির দল আক্রমণ চালিয়ে তছনছ করে দিয়েছে ২২টি বসতঘর। গত মঙ্গল ও বৃহষ্পতিবার রাতে উপজেলার সরই ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি ফুইট্টারঝিরি, কম্বনিয়া, কাজলপাড়া ও বাগখোলা পাড়ায় ১০-১২টি বন্যহাতি এ আক্রমন চালায়।
হাতির দলটি বর্তমানে ওই এলাকায় অবস্থান করায় স্থানীয়দের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। হাতির আক্রমন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো বসতঘর হারিয়ে এখন খোলা আকাশের নীচে জীবনযাপন করছেন। আবার কেউ কেউ ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গহীন পাহাড় থেকে বন্যহাতির দল বুধবার রাতে লোকালয়ে নেমে পড়ে। হাতিগুলো প্রথমে ফুইট্টারঝিরির আবদুল মালেক ও আক্কাছ মিয়ার বসতঘর ভাংচুর করে। এর আগের রাতে মো. দেলোয়ার হোসেন, মো. আমান উল্লাহ, মো. রফিকুল ইসলাম, মোক্তার আহমদ, মনির আহমদ, নুর আহমদ ও আহমদ কবির এবং রাতে কাজল পাড়ার ৭টি বসতঘরে তান্ডব চালিয়ে তছনছ করে দেয় বন্যহাতির দল।
এ সময় হাতিগুলো কৃষকের ঘরে থাকা ৫০মণ ধানও খেয়ে ফেলে। একই রাতে পাশের বাগখোলা পাড়ার মো. সিরাজ, দেরাজ মিয়া ও আবদুল হাকিমের বসতঘর ভাংচুর করে বন্যহাতি। এছাড়া গত ২৭ মে ধুইল্যাপাড়ায় বসতঘরে বন্যহাতির তান্ডব মো. ইলিয়াছ সওদাগরের মেয়ে মেহেরুন্নেছা (১৫) নামের এক স্কুল ছাত্রী নিহত হন। আহত হন তার স্ত্রী আমেনা বেগম ও ও ছোট মেয়ে তাসিয়া বেগম (৫)।
হাতির আক্রমণের শিকার আবদুল মালেক, আক্কাছ মিয়া ও দেলোয়ার হোসেন জানান, হাতিগুলি প্রথমে বাড়ির চারিদিকে ঘেরাও করে ফেলে। বিশেষ করে ঘরের দরজা জানালার পাশে পাহারাদারের মত দাঁড়িয়ে থাকে। আর ঘর ভাঙ্গা শুরকরে। পরে ঘরে থাকা ধান চাল খেয়ে চলে যায়। রাত জেগে বাড়ি ঘর পাহারা দিয়ে হাতির আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে চেষ্টা চালাচ্ছে স্থানীয়রা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. নাছির উদ্দিন জানান, অনেক ক্ষেত্রে রাত জেগে আগুন জ্বালিয়ে ও ঢোল পিটিয়ে চিৎকার করেও বন্য হাতির দলকে সরানো যায় না। বেশি ভয় দেখালে হাতির পাল উল্টো তেড়ে আসে। এ কারণে চেয়ে দেখা ছাড়া আমাদের পক্ষে কিছুই করার থাকে না।
লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম চৌধুরী জানান, পাহাড়ে হাতির আবাসস্থল ও খাবার দিনদিন কমে যাওয়ার কারণে হাতির দল এখন লোকালয়ে নেমে আসছে। হাতিগুলোকে গভীর বনে সরিয়ে নেয়ার জন্য স্থানীয়দের সহযোগিতায় বনবিভাগের লোকজন কাজ করছে।
এ বিষয়ে সরই ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম বলেন, গত ২৭ মে থেকে বন্যহাতিগুলো এলাকায় অবস্থান করায় লোকজন চরম আতঙ্কে রয়েছেন। আবারও যে কোন মুহূর্তে আক্রমন চালিয়ে জান ও মালের ক্ষতিসাধন করতে পারে। বন্যহাতির আক্রমন ক্ষতিগ্রস্তরা এখনো সরকারি কিংবা বেসরকারি কোন সহযোগিতা পায়নি।

 

পাঠকের মতামত: