ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

মাতারবাড়ীতে লোকালয়ে সাগরের পানি, প্রাণে বাঁচতে ছোটাছুটি করছে স্থানীয় লোকজন

mail.google.comছালাম কাকলী ॥

মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী বিধস্থ বেড়িবাঁধ দিয়ে সাগরের লোনা পানি হু-হু করে ঢুকছে। লবনাক্ত জোয়ারের পানি দেখে বাড়ি ঘরের লোকজন ঘরের মালামাল নিয়ে বিভিন্ন স্থানে চলে যাচ্ছে। এমনকি ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের নিয়ে বাড়ি থেকে উচু স্থানে চলে যাচ্ছে। জোয়ারের পানিতে প্রায় আট শত বাড়ি ঘর পানির নিচে রয়েছে। বন্দি হয়ে পড়েছে ঐসব পরিবারের লোকজন। ঘর বাড়ি ত্যাগ করে ছুটে আসা ছোট শিশুদের উদ্ধার করতে ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাহাদাৎ হোছাইন নাছির, ৩নং ওয়ার্ডের রিয়াজ উদ্দিন, ৯নং ওয়ার্ডের হামেদ হোছাইন ও ৮নং ওয়ার্ডের সরওয়ার ৫ জুন দুপুর ১২ টায় উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে। এসব পরিবারের আহাজারী দেখলে বুক ফেটে যায়।

 মাতারবাড়ী দক্ষিণ দিক থেকে টিয়াকাটি, রুস্তমদোনা সহ কয়েকটি স্থান থেকে জাইকা কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য জায়গা অধিগ্রহণ করেছে ঐ এলাকায় জাইকা বেড়িবাঁধ সংস্কার না করায় গত ২ বৎসর ধরে ঐ স্থানের ৩টি বড় বড় ভাঙ্গন দিয়ে সাগরের লোনা পানি ও বৃষ্টির পানি ঢুকে মাতারবাড়ী বিভিন্ন ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে আসছে। এসব ভাঙ্গন জরুরী ভিত্তিতে মেরামত করে মাতারবাড়ী বাসীকে রক্ষার জন্য বর্তমান চেয়ারম্যান মাষ্টার মোহাম্মদ উল্লাহ জাইকা কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার আবেদন নিবেদন করে আসছে। এতে জাইকা কোন ধরণের সাড়া না দেয়ায় গত ২ বৎসরে মাতারবাড়ীর ৩, ৭, ৮, ৯ নং ওয়ার্ডের লোকজনের পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। এছাড়া এসব ক্ষতিগ্রস্থ লোকজনের অন্তত পক্ষে ৩ কোটি টাকা ক্ষতি সাধন হয়েছে। এমনকি গেল শুষ্ক মৌসুমে ঐ এলাকায় লবণ মাঠে মজুদ থাকা কোটি টাকার লবণ পানিতে ভেসে গেছে। পানির স্রোতে তলিয়ে গেছে বিভিন্ন মালামাল। পরে মহেশখালী উপজেলা প্রশাসন ঐ বড় ৩টি ভাঙ্গন স্থান মেরামত করার জন্য নির্দেশ দিলে জাইকা স্থানীয় চেয়ারম্যান কে ২টি ভাঙ্গন স্থান নির্মাণের জন্য দায়িত্ব দেয়। নির্দেশ পেয়ে চেয়ারম্যান মাষ্টার মোহাম্মদ উল্লাহ তার তত্ত্বাবধানে ঐ ২টি ভাঙ্গন স্থান মেরামত করলেও অপর বড় ভাঙ্গনটি কোন অবস্থাতেই মেরামত করা সম্ভব না হওয়ায় উক্ত ভাঙ্গন দিয়ে প্রতিনিয়ত জোয়ার-ভাটা চলে আসছে। সর্বশেষ এ অবস্থায় গেল রোয়ানোর আঘাতে মেরামত করা ২টি ভাঙ্গন স্থান সহ মাতারবাড়ী বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে লন্ড-ভন্ড হয়ে যায়। এমনকি দোনার ঘোনা, পরিজানবর ঘোনা, খোদার কোম দিয়ে ৩টি বড় ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে। ঐ স্থান চলছে নিয়মিত জোয়ার-ভাটা। সাফ কথা মাতারবাড়ীর তৃতীয়াংশ জায়গায় এখন জোয়ার-ভাটা চলছে। জরুরী ভিত্তিতে এসব ভাঙ্গন মেরামত করার জন্য চেয়ারম্যান মাষ্টার মোহাম্মদ উল্লাহ, জেলা প্রশাসক, পানি উন্নয়ন বোর্ড়, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ও মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে কয়েক দফা আবেদন করলেও এখনও এসব ভাঙ্গন মেরামতের জন্য কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ফলে মাতারবাড়ী এখন অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। মাতারবাড়ী বাসীর আহাজরী দেখলে জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের বুক ফেটে যায়। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য জনপ্রতিনিধিদের চোখের জল ভাসলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন ধরণের মায়া কান্না দেখা যাচ্ছে না। ফলে চলতি বর্ষা মৌসুমে মাতারবাড়ী প্রায় ১ হাজার পরিবার পানির ঝুকিতে রয়েছে ।

পাঠকের মতামত: