ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

‘দেশে গণতন্ত্রের পরিসমাপ্তি ঘটেছে’

image_157504_1465054786চট্টগ্রাম ব্যুরো :::

চট্টগ্রাম: ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে নির্বাচন ব্যবস্থা ও গণতন্ত্রের ‘পরিসমাপ্তি’ ঘটেছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি ড. মইনুল ইসলাম।

শনিবার চট্টগ্রাম নগরীতে ‘বাজেটে রাষ্ট্র চরিত্রের প্রতিফলন’ শীর্ষক এক সেমিনারে মূল আলোচকের বক্তব্য এ মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি মইনুল বলেন, “আমাদের তো নির্বাচন নেই। নির্বাচনকে আমরা কোথায় নিয়ে গেছি! নাউজুবিল্লাহ!

“এই যে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হচ্ছে। কত বড় ক্ষতি হয়ে গেছে তা বুঝতে সময় লাগবে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে এ জন্য ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। কীভাবে নিজ হাতে তিনি নির্বাচন ব্যবস্থাকে শেষ করে দিলেন!”

ব্যাংকারস এলাইন্স অব বাংলাদেশ (বিএবি) ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে চিটাগাং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি মিলনায়তনে এ সেমিনার হয়।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সাংবিধানিকভাবে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না উল্লেখ করে অধ্যাপক মইনুল বলেন, “কিন্তু এটা কি গণতান্ত্রিক? যতখানি গণতন্ত্র অর্জন করেছিলাম, সব তো শেষ। সরকারের মন্ত্রী বলছে- অপেক্ষা করুন, উন্নয়ন করছি।”

‘গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার’ আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “উন্নয়নের পথে বাংলাদেশ যাত্রা করেছে। বাংলাদেশের ইকোনোমি টেক অফ করেছে। কিন্তু গণতন্ত্র ফিরে না এলে উন্নয়নের সুফল মানুষের কাছে পৌঁছানো যাবে না।”

যত ত্রুটিপূর্ণই হোক নির্বাচনী গণতন্ত্রকে প্রতিনিধিত্বশীল এবং জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক করে তোলাই এখন জাতির প্রধান চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন ড. মইনুল ইসলাম।

দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) ‘সুপরিকল্পিতভাবে গলা টিপে হত্যা’ করা হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “এ জন্যও শেখ হাসিনাকে ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। সেনা নিয়ন্ত্রিত সরকার অনেক কিছু খারাপ করেছিল। কিন্তু তারা দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করেছিল।

“দুদককে গলা টিপে মেরে ফেলা হয়েছে। দুদককে শক্তিশালী করার আইন সংসদে পাস হয়নি। দুদক চেয়ারম্যানরা বলে গেছেন-এটা নখদন্তহীন ব্যঘ্র। দুর্নীতি ক্রমশ ছড়িয়ে গেছে আমলা, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদদের মধ্যে।”

দেশের উন্নয়নে ‘সর্বগ্রাসী দুর্নীতি’ সবচেয়ে বড় বাধা- একথা উল্লেখ করে অর্থনীতির শিক্ষক মইনুল বলেন, লুটপাট-দুর্নীতির লাগাম ধরলে আগামী পাঁচ বছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশে নেয়া সম্ভব।

“বাংলাদেশের রাষ্ট্রচরিত্র নব্য-ঔপনিবেশিক, প্রান্তীয় পুঁজিবাদী, আমলাতান্ত্রিক এবং পুঁজি লুণ্ঠনমূলক।”

“সরকার শুধু জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার নিয়েই মাতামাতি করছে। আয় ও সম্পদ বণ্টেনের বৈষম্য যে বিপজ্জনক স্তরে পৌঁছেছে তা ঠিকমত স্বীকারও করা হচ্ছে না।”

চিটাগাং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য মাহফুজুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ আলোচক ছিলেন চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ।

এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএবির সভাপতি শাকিল মাহমুদ।

অনুষ্ঠানের মিডিয়া পার্টনার ছিল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, চ্যানেল টোয়েন্টিফোর, বণিক বার্তা ও রেডিও টুডে।
 

পাঠকের মতামত: