ঢাকা,শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪

পেঁয়াজ সকালে ৯৫ টাকা, সন্ধ্যায় ৬০ টাকা! আমদানির খবরে

নিউজ ডেস্ক :: বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার আজ সোমবার থেকে পেঁয়াজের আমদানি অনুমতি (আইপি) ইস্যুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত জানাজানি হওয়ার আগ পর্যন্ত চাক্তাই–খাতুনগঞ্জের আড়তে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯৫ টাকায়। কিন্তু আমদানির অনুমতির খবরের পরপর কেজিতে পেঁয়াজের দরপতন হয়েছে ৩৫ টাকা।

ভোক্তারা বলছেন, এভাবে দাম কমার কারণে এটি স্পষ্ট হয়েছে, ব্যবসায়ীদের এতদিন সিন্ডিকেট করে দাম বৃদ্ধি করেছেন। দেশে কৃষকের স্বার্থ বিবেচনায় সরকার আমদানি বন্ধ রাখে। আমদানি বন্ধ হওয়ার আগে পাইকারি বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ছিল ২৫ থেকে ৩০ টাকা। এখনো ভারতীয় পেঁয়াজের বুকিং দর আগের মতোই আছে। তাই ভারতীয় পেঁয়াজ আসার সাথে সাথে পেঁয়াজের দাম ৩০ থেকে ৪০ টাকায় নেমে আসতে পারে। গতকাল চাক্তাই–খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকালে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯৫ টাকায়। দুপুরে ৯০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির ঘোষণা আসার পর সন্ধ্যায় সেই পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। জানা গেছে, বর্তমানে দেশে তাহেরপুরী, বারি–১ (তাহেরপুরী), বারি–২ (রবি মৌসুম), বারি–৩ (খরিপ মৌসুম), স্থানীয় জাত ও ফরিদপুরী পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। ফলে বছরজুড়েই কোনো না কোনো জাতের পেঁয়াজ উৎপাদন হচ্ছে। দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২২ লাখ টন। এর মধ্যে ১৮ লাখ টন স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হয়। আর আমদানি করা হয় বাকি চার লাখ টন। মূলত এই আমদানিকৃত চার লাখ টন পেঁয়াজ বাজারের ওপর খুব বড় প্রভাব ফেলে।

চাক্তাই আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. আবুল কাশেম বলেন, বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজের আলাদা চাহিদা থাকে। দেশি পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ায় সরকার আমদানির ঘোষণা দেয়। এর ফলে পেঁয়াজের বাজার নিম্নমুখী।

খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে–এই খবরে পেঁয়াজের দাম কমে গেছে। আমার জানা মতে, পেঁয়াজ ৭০ টাকা পর্যন্ত বেচাবিক্রি হয়েছে। বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ এলে পেঁয়াজের আরো দরপতন হতে পারে। আমাদের ধারণা পেঁয়াজের বাজার ৪০–৫০ টাকার মধ্যে থাকবে।

চাক্তাই আফরা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, পেঁয়াজের বাজার যেভাবে কমছে, আগামীকাল (আজ) কেজিপ্রতি ৫০ টাকায় নেমে আসবে মনে হচ্ছে। বাজারে এখন বেচাবিক্রি নেই বললেই চলে। এদিকে খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল দেশীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকায়। এর আগের দিন বিক্রি হয়েছে ৯০ টাকায়।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন বলেন, পেঁয়াজ নিয়ে ব্যবসায়ীদের কারসাজি নতুন কিছু নয়। ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বৃদ্ধি করেছেন–এটি সহজে বোঝা যাচ্ছে। না হলে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবরের পরপর এভাবে দাম কমার কথা না।

উল্লেখ্য, সরকার দেশের কৃষকদের বাঁচাতে গত ১৫ মার্চ থেকে ভারতীয় পেঁয়াজ আইপি বন্ধ করে দেয়। তবে বর্তমানে পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকায় পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিচ্ছে কৃষি মন্ত্রণালয়। গতকাল কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আজ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেবে কৃষি মন্ত্রণালয়। পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সীমিত আয়ের, শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট লাঘবসহ সব ভোক্তার স্বার্থ রক্ষায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।

পাঠকের মতামত: