ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

বদরখালী ইউপি নির্বাচনে পুনরায় ভোট গণনার নির্দেশ উচ্চ আদালতের, অভিযোগ প্রমাণিত হলেই পদ হারাবে খাইরুল বশর, নতুন চেয়ারম্যান হবেন হেফাজ সিকদার!

Chakaria Picture (U.P)  27-05-2016এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :::

চকরিয়া উপজেলার বদরখালী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দুটি কেন্দ্রের ফলাফল কারচুপির অভিযোগ তুলে ওই দুটি কেন্দ্রের প্রয়োগকৃত ভোট ফের গণনার দাবি জানিয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী আনম হেফাজ সিকদার গত ১৭ মে উচ্চ আদালতে একটি রিট মামলা (নম্বর ৬০৯৩/১৬) দায়ের করেছেন। বাদির আর্জি আমলে আদালতের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও মো.খসরুজ্জামান এর দ্বৈত বৈঞ্চ ওইদিনই নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রির্টানিং কর্মকর্তাকে আগামী ১৫দিনের মধ্যে বাদির অভিযোগ মতে ইউনিয়নের ১ নম্বর ও ৯নম্বর কেন্দ্রের ভোট পুনরায় গণনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছেন । আদালতের নির্দেশনার পর বৃহস্পতিবার ১০দিন সময় অতিবাহিত হয়েছে। তবে আগেরদিন বুধবার ইতোমধ্যে নির্বাচিত হওয়া চেয়ারম্যান খাইরুল বশর প্রতিদ্বন্দি প্রার্থী হেফাজ সিকদার বাদি হয়ে দায়ের করা রিট মামলাটির বিরুদ্ধে চেম্বার জজ আদালতে একটি আপীল মামলা করেন। কিন্তু ওইদিনই আদালত তার আপীল মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে স্থানীয় সচেতন মহলে প্রশ্ন উঠেছে, আদালতের নির্দেশে দুই কেন্দ্রের ভোট পুনরায় গণনা করে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলেই নির্বাচিত ঘোষনা করা চেয়ারম্যান খাইরুল বশর শপথ নেয়ার আগেই পদ হারাবেন। পক্ষান্তরে ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়ে নতুন ফলাফলের মাধ্যমে চেয়ারম্যান হবেন আনম হেফাজ সিকদার।

স্থানীয় লোকজন প্রশ্ন তুলেছেন, ফলাফলের ক্ষেত্রে কোন ধরণের গোজাঁমিল না থাকলে নির্বাচিত হওয়া চেয়ারম্যান খাইরুল বশর কেন আগ ভাড়িয়ে আপীল মামলাটি দায়ের করলেন। তিনি সত্যি সত্যি ভোটের ফলাফলে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে নির্ভয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশ মতো ফের ভোট গণনার আদেশকে স্বাগত জানাতেন।

জানা গেছে, গত ৭ মে চতুর্থ ধাপে অনুষ্টিত হয়েছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বদরখালী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। ওই নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান প্যানেল চেয়ারম্যান খাইরুল বশর আনারস প্রতীকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম হয়েছেন চশমা প্রতীকে আওয়ামীলীগের অপর বিদ্রোহী প্রার্থী মাতামুহুরী উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক আ.ন.ম হেফাজ সিকদার। নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রির্টানিং কর্মকর্তা ও চকরিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো.সাইফুর রহমান ৯টি কেন্দ্রের প্রাপ্ত ভোট গনণা শেষে ফলাফল ঘোষনা করেন।

হাইর্কোটে দায়ের করা মামলার আর্জিতে চেয়ারম্যান প্রার্থী আনম হেফাজ সিকদার বলেন, নির্বাচনে তিনি ইউনিয়নের ৯টি কেন্দ্রে বেসরকারী ভোটের ফলাফলে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী খাইরুল বশরের চেয়ে ১৩৪ ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের দিন বিকালে ভোট গনণা শেষে ইউনিয়নের ১ ও ৯নম্বর কেন্দ্রের ফলাফল দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাডিং কর্মকর্তাবৃন্দ ভোট কেন্দ্রে তো দেয়নি। এমনকি রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা পরিষদেরও ফলাফল ঘোষনা করেনি। ৯ নম্বর কেন্দ্রের ভোটের বাক্সটি উপজেলা কন্ট্রোল রুমে আনা হয়েছে খোলা অবস্থায় । এরপর রাত ১১টার দিকে প্রিসাডিং কর্মকর্তা ও রির্টানিং কর্মকর্তা যোগসাজস করে ফলাফল ঘোষনা করেন। তাতে ৪৬ ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত ঘোষনা করা হয় খাইরুল বশরকে। আর বিজীত প্রার্থী ঘোষনা করা হয় আনম হেফাজ সিকদারকে।

চেয়ারম্যান প্রার্থী হেফাজ সিকদার বলেন, ফলাফল ঘোষনার এমন কারচুপির অভিযোগ তুলে ওইদিন রাতেই তিনি ফলাফল স্থগিত রাখার জন্য তাৎক্ষনিক লিখিত আবেদন করেন রির্টানিং কর্মকর্তা এবং নির্বাচনের সমন্বয়ক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা তার আবেদনটি রিসিভ করলেও ফলাফল ঘোষনা স্থগিত করেনি। হেফাজ সিকদার বলেন, ফলাফল ঘোষনার পর সংশ্লিষ্ট রির্টানিং কর্মকর্তার কাছে তিনি ১ ও ৯নম্বর কেন্দ্রের ভোটের ফলাফলের কপিটি চাইলেও লিখিতভাবে তা দিতে অস্বীকৃতি জানান রির্টানিং কর্মকর্তা ও চকরিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো.সাইফুর রহমান। উচ্চ আদালতে নির্বাচন পরবর্তী ফলাফল ঘোষনার এসব অনিয়ম ও দূর্নীতির বিশদ বর্ণনা তুলে ধরেন চেয়ারম্যান প্রার্থী হেফাজ সিকদার। এরই প্রেক্ষিতে আদালত নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রির্টানিং কর্মকর্তাকে আগামী ১৫দিনের মধ্যে বাদির অভিযোগ মতে ইউনিয়নের ১ নম্বর ও ৯নম্বর কেন্দ্রের ভোট পুনরায় গণনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছেন।

ইতোমধ্যে আদালতের আদেশের অনুলিপি কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (২৬ মে) নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত রির্টানিং কর্মকর্তা ও চকরিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো.সাইফুর রহমানের কাছে দাখিল করেছেন বলে জানিয়েছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী হেফাজ সিকদার। #

পাঠকের মতামত: