ঢাকা,শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়া-পেকুয়ার উপর দিয়ে গেলেন মন্ত্রী কিন্তু নামলেন না

চকরিয়া প্রতিনিধি ।।

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর ক্ষয়ক্ষতি স্বচক্ষে দেখার পর ত্রাণ বিতরণ শেষে এবিসি (আনোয়ারাবাঁশখালীপেকুয়াচকরিয়া) কক্সবাজারে যান ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। পথিমধ্যে পেকুয়ার ক্ষয়ক্ষতি দেখতে এক মুহূর্তের জন্য না নামায় হতাশ হয়েছেন পেকুয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হাজার হাজার মানুষ। আওয়ামীলীগ দলীয় নেতাকর্মীরাও বিষয়টিকে ভালভাবে নেননি। এনিয়ে এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পেকুয়া উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’ আঘাত হানার পাঁচদিন পেরিয়ে গেছে। কয়েকঘন্টার এ দুর্যোগে লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়া উপজেলার চার ইউনিয়ন মগনামা, রাজাখালী, উজানটিয়া ও পেকুয়া সদরের ঘরবাড়ি হারানো প্রায় দুই হাজার পরিবারের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ এখন সীমাহীন কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। কোথাও ত্রাণ হিসেবে শুকনো খাবার ও চাল বিতরণের খবর শুনলেই দুর্গতরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। আর তাদেরকে সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন জনপ্রতিনিধিরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূলের অনেক নেতা দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’র কয়েকঘন্টার ছোবলে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে চার ইউনিয়নের জনপদ। কোন কোন বসতবাড়ির এমন অবস্থা হয়েছে যে, ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার সময় শুধুমাত্র পরণের কাপড় ছাড়া অবশিষ্ট কোন সহায়সম্পদ অক্ষত নেই। তার ওপর বেড়িবাঁধ সাগরবক্ষে বিলীন হয়ে যাওয়ায় নিয়মিত জোয়ারভাটা চলছে এসব ইউনিয়নে। এ অবস্থায় খাদ্য সংকট চরমে পৌঁছেছে। কিন্তু তেমন ত্রাণ তৎপরতা চোখে না পড়ায় আমরা বিব্রত ।’

পেকুয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কফিল উদ্দিন বাহাদুর বলেন, পেকুয়া সদরের একাংশ ছাড়াও তিন ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাই এ তিন ইউনিয়নকে সরকারের পক্ষ থেকে ঘূর্ণিদুর্গত এলাকা ঘোষণা করতে হবে। তিনি পাশাপাশি ব্যাপক পরিসরে ত্রাণ তৎপরতা চালানো ও বসতবাড়ি হারানো পরিবারগুলোকে নতুন করে পুনর্বাসনেরও দাবি জানান।

এপ্রসঙ্গে পেকুয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল কাশেম বলেন, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রীর পেকুয়ায় আসা উচিত ছিল। তিনি আসলে স্বচক্ষে দেখতেন আসলে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে চার ইউনিয়নে। তবে মন্ত্রী না আসলেও ক্ষতিগ্রস্তরা যাতে প্রয়োজনীয় ত্রাণ ও বসতবাড়ি হারানো মানুষগুলোর পুনর্বাসনের জন্য মন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে।

পেকুয়ার বেশি ক্ষতিগ্রস্ত চার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিরা বলেন, ‘সরকারিভাবে বরাদ্দ দেয়া জিআর চাল বিলি করতে গেলেই হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন ঘূর্ণিদুর্গতরা। বিএনপি দলীয় পেকুয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ চৌধুরী রাজু দৈনিক আজাদীকে বলেন, আগে থেকে সচেতন করায় কোন প্রাণহানি না ঘটলেও ঘূর্ণিঝড়ের ছোবলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে উপজেলার চার ইউনিয়নে। সেই তুলনায় সরকারিভাবে বরাদ্দ করা ত্রাণ একেবারে অপ্রতুল। গতকালবিকেল পর্যন্ত মাত্র ৪৪ টন জিআর চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্তু সেই বরাদ্দ একেবারে অপ্রতুল।উপজেলা চেয়ারম্যান রাজু আরো বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়া উপকূলীয় চার ইউনিয়ন মগনামা, উজানটিয়া, রাজাখালী ও পেকুয়া সদরের রক্ষাকবচ বেড়িবাঁধগুলো একেবারে বিলীন হয়ে গেছে। এ অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলো যে দুর্বিষহ যন্ত্রণায় সময় পার করছেন তা বলে বোঝাতে পারব না। তবে আমি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলোর মতোই হতাশ হয়েছি, কারণ সরকারের পানি সম্পদ মন্ত্রী, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রীর কেউ এক মুহূর্তের জন্যও ঘূর্ণিদুর্গত এলাকায় না আসায়। উপরন্তু ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া গত সোমবার বাঁশখালী উপজেলার ক্ষয়ক্ষতি সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। এসময় তিনি সেখানে ত্রাণ তৎপরতাও চালান। এরপর বাঁশখালী থেকে এবিসি সড়ক হয়ে কক্সবাজারের পেকুয়া ও চকরিয়া হয়ে মহেশখালী গেছেন। কিন্তু এক মুহূর্তের জন্যও মন্ত্রী পেকুয়ায় না আসায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলোর মতো আমিও হতাশ হয়েছি । এব্যাপারে কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা দৈনিক চকরিয়া নিউজকে বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পরদিন সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। এ সময় আমি যা দেখেছি তার বিস্তারিত মন্ত্রীর দৃষ্টিতে এনেছি। পেকুয়াসহ যেখানে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতি হয়েছে তা সময় স্বল্পতার কারণে দেখতে না পারায় মন্ত্রী নিজেও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি তিনি এও বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে, কোন মানুষ যাতে অভুক্ত না থাকে। সেজন্য সকল ধরণের পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘মন্ত্রী পেকুয়ায় যেতে না পারলেও যারা একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছেন তাদেরকে পুনর্বাসনে সরকারি সহায়তা দেয়া হবে। এর কোন হেরফের হবে না। তিনি প্রতিটি দপ্তরের স্ব স্ব কর্মকর্তার কাছ থেকে পুঙ্খানুপুঙ্খ ক্ষয়ক্ষতির চিত্র নিয়ে গেছেন।’

 

 

পেকুয়ার উপর দিয়ে গেলেন মন্ত্রী কিন্তু নামলেন না

চকরিয়া প্রতিনিধি ।।

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর ক্ষয়ক্ষতি স্বচক্ষে দেখার পর ত্রাণ বিতরণ শেষে এবিসি (আনোয়ারাবাঁশখালীপেকুয়াচকরিয়া) কক্সবাজারে যান ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। পথিমধ্যে পেকুয়ার ক্ষয়ক্ষতি দেখতে এক মুহূর্তের জন্য না নামায় হতাশ হয়েছেন পেকুয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হাজার হাজার মানুষ। আওয়ামীলীগ দলীয় নেতাকর্মীরাও বিষয়টিকে ভালভাবে নেননি। এনিয়ে এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পেকুয়া উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’ আঘাত হানার পাঁচদিন পেরিয়ে গেছে। কয়েকঘন্টার এ দুর্যোগে লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়া উপজেলার চার ইউনিয়ন মগনামা, রাজাখালী, উজানটিয়া ও পেকুয়া সদরের ঘরবাড়ি হারানো প্রায় দুই হাজার পরিবারের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ এখন সীমাহীন কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। কোথাও ত্রাণ হিসেবে শুকনো খাবার ও চাল বিতরণের খবর শুনলেই দুর্গতরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। আর তাদেরকে সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন জনপ্রতিনিধিরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূলের অনেক নেতা দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’র কয়েকঘন্টার ছোবলে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে চার ইউনিয়নের জনপদ। কোন কোন বসতবাড়ির এমন অবস্থা হয়েছে যে, ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার সময় শুধুমাত্র পরণের কাপড় ছাড়া অবশিষ্ট কোন সহায়সম্পদ অক্ষত নেই। তার ওপর বেড়িবাঁধ সাগরবক্ষে বিলীন হয়ে যাওয়ায় নিয়মিত জোয়ারভাটা চলছে এসব ইউনিয়নে। এ অবস্থায় খাদ্য সংকট চরমে পৌঁছেছে। কিন্তু তেমন ত্রাণ তৎপরতা চোখে না পড়ায় আমরা বিব্রত ।’

পেকুয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কফিল উদ্দিন বাহাদুর বলেন, পেকুয়া সদরের একাংশ ছাড়াও তিন ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাই এ তিন ইউনিয়নকে সরকারের পক্ষ থেকে ঘূর্ণিদুর্গত এলাকা ঘোষণা করতে হবে। তিনি পাশাপাশি ব্যাপক পরিসরে ত্রাণ তৎপরতা চালানো ও বসতবাড়ি হারানো পরিবারগুলোকে নতুন করে পুনর্বাসনেরও দাবি জানান।

এপ্রসঙ্গে পেকুয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল কাশেম বলেন, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রীর পেকুয়ায় আসা উচিত ছিল। তিনি আসলে স্বচক্ষে দেখতেন আসলে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে চার ইউনিয়নে। তবে মন্ত্রী না আসলেও ক্ষতিগ্রস্তরা যাতে প্রয়োজনীয় ত্রাণ ও বসতবাড়ি হারানো মানুষগুলোর পুনর্বাসনের জন্য মন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে।

পেকুয়ার বেশি ক্ষতিগ্রস্ত চার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিরা বলেন, ‘সরকারিভাবে বরাদ্দ দেয়া জিআর চাল বিলি করতে গেলেই হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন ঘূর্ণিদুর্গতরা। বিএনপি দলীয় পেকুয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ চৌধুরী রাজু দৈনিক আজাদীকে বলেন, আগে থেকে সচেতন করায় কোন প্রাণহানি না ঘটলেও ঘূর্ণিঝড়ের ছোবলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে উপজেলার চার ইউনিয়নে। সেই তুলনায় সরকারিভাবে বরাদ্দ করা ত্রাণ একেবারে অপ্রতুল। আজ (গতকাল) বিকেল পর্যন্ত মাত্র ৪৪ টন জিআর চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্তু সেই বরাদ্দ একেবারে অপ্রতুল।উপজেলা চেয়ারম্যান রাজু আরো বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়া উপকূলীয় চার ইউনিয়ন মগনামা, উজানটিয়া, রাজাখালী ও পেকুয়া সদরের রক্ষাকবচ বেড়িবাঁধগুলো একেবারে বিলীন হয়ে গেছে। এ অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলো যে দুর্বিষহ যন্ত্রণায় সময় পার করছেন তা বলে বোঝাতে পারব না। তবে আমি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলোর মতোই হতাশ হয়েছি, কারণ সরকারের পানি সম্পদ মন্ত্রী, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রীর কেউ এক মুহূর্তের জন্যও ঘূর্ণিদুর্গত এলাকায় না আসায়। উপরন্তু ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া গত সোমবার বাঁশখালী উপজেলার ক্ষয়ক্ষতি সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। এসময় তিনি সেখানে ত্রাণ তৎপরতাও চালান। এরপর বাঁশখালী থেকে এবিসি সড়ক হয়ে কক্সবাজারের পেকুয়া ও চকরিয়া হয়ে মহেশখালী গেছেন। কিন্তু এক মুহূর্তের জন্যও মন্ত্রী পেকুয়ায় না আসায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলোর মতো আমিও হতাশ হয়েছি । এব্যাপারে কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পরদিন সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। এ সময় আমি যা দেখেছি তার বিস্তারিত মন্ত্রীর দৃষ্টিতে এনেছি। পেকুয়াসহ যেখানে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতি হয়েছে তা সময় স্বল্পতার কারণে দেখতে না পারায় মন্ত্রী নিজেও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি তিনি এও বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে, কোন মানুষ যাতে অভুক্ত না থাকে। সেজন্য সকল ধরণের পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘মন্ত্রী পেকুয়ায় যেতে না পারলেও যারা একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছেন তাদেরকে পুনর্বাসনে সরকারি সহায়তা দেয়া হবে। এর কোন হেরফের হবে না। তিনি প্রতিটি দপ্তরের স্ব স্ব কর্মকর্তার কাছ থেকে পুঙ্খানুপুঙ্খ ক্ষয়ক্ষতির চিত্র নিয়ে গেছেন।’

– See more at: http://www.dainikazadi.org/details2.php?news_id=2589&table=may2016&date=2016-05-26&page_id=4&view=0&instant_status=#sthash.jeXpakAj.dpuf

পেকুয়ার উপর দিয়ে গেলেন মন্ত্রী কিন্তু নামলেন না

চকরিয়া প্রতিনিধি ।।

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর ক্ষয়ক্ষতি স্বচক্ষে দেখার পর ত্রাণ বিতরণ শেষে এবিসি (আনোয়ারাবাঁশখালীপেকুয়াচকরিয়া) কক্সবাজারে যান ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। পথিমধ্যে পেকুয়ার ক্ষয়ক্ষতি দেখতে এক মুহূর্তের জন্য না নামায় হতাশ হয়েছেন পেকুয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হাজার হাজার মানুষ। আওয়ামীলীগ দলীয় নেতাকর্মীরাও বিষয়টিকে ভালভাবে নেননি। এনিয়ে এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পেকুয়া উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’ আঘাত হানার পাঁচদিন পেরিয়ে গেছে। কয়েকঘন্টার এ দুর্যোগে লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়া উপজেলার চার ইউনিয়ন মগনামা, রাজাখালী, উজানটিয়া ও পেকুয়া সদরের ঘরবাড়ি হারানো প্রায় দুই হাজার পরিবারের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ এখন সীমাহীন কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। কোথাও ত্রাণ হিসেবে শুকনো খাবার ও চাল বিতরণের খবর শুনলেই দুর্গতরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। আর তাদেরকে সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন জনপ্রতিনিধিরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূলের অনেক নেতা দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’র কয়েকঘন্টার ছোবলে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে চার ইউনিয়নের জনপদ। কোন কোন বসতবাড়ির এমন অবস্থা হয়েছে যে, ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার সময় শুধুমাত্র পরণের কাপড় ছাড়া অবশিষ্ট কোন সহায়সম্পদ অক্ষত নেই। তার ওপর বেড়িবাঁধ সাগরবক্ষে বিলীন হয়ে যাওয়ায় নিয়মিত জোয়ারভাটা চলছে এসব ইউনিয়নে। এ অবস্থায় খাদ্য সংকট চরমে পৌঁছেছে। কিন্তু তেমন ত্রাণ তৎপরতা চোখে না পড়ায় আমরা বিব্রত ।’

পেকুয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কফিল উদ্দিন বাহাদুর বলেন, পেকুয়া সদরের একাংশ ছাড়াও তিন ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাই এ তিন ইউনিয়নকে সরকারের পক্ষ থেকে ঘূর্ণিদুর্গত এলাকা ঘোষণা করতে হবে। তিনি পাশাপাশি ব্যাপক পরিসরে ত্রাণ তৎপরতা চালানো ও বসতবাড়ি হারানো পরিবারগুলোকে নতুন করে পুনর্বাসনেরও দাবি জানান।

এপ্রসঙ্গে পেকুয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল কাশেম বলেন, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রীর পেকুয়ায় আসা উচিত ছিল। তিনি আসলে স্বচক্ষে দেখতেন আসলে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে চার ইউনিয়নে। তবে মন্ত্রী না আসলেও ক্ষতিগ্রস্তরা যাতে প্রয়োজনীয় ত্রাণ ও বসতবাড়ি হারানো মানুষগুলোর পুনর্বাসনের জন্য মন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে।

পেকুয়ার বেশি ক্ষতিগ্রস্ত চার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিরা বলেন, ‘সরকারিভাবে বরাদ্দ দেয়া জিআর চাল বিলি করতে গেলেই হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন ঘূর্ণিদুর্গতরা। বিএনপি দলীয় পেকুয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ চৌধুরী রাজু দৈনিক আজাদীকে বলেন, আগে থেকে সচেতন করায় কোন প্রাণহানি না ঘটলেও ঘূর্ণিঝড়ের ছোবলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে উপজেলার চার ইউনিয়নে। সেই তুলনায় সরকারিভাবে বরাদ্দ করা ত্রাণ একেবারে অপ্রতুল। আজ (গতকাল) বিকেল পর্যন্ত মাত্র ৪৪ টন জিআর চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্তু সেই বরাদ্দ একেবারে অপ্রতুল।উপজেলা চেয়ারম্যান রাজু আরো বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়া উপকূলীয় চার ইউনিয়ন মগনামা, উজানটিয়া, রাজাখালী ও পেকুয়া সদরের রক্ষাকবচ বেড়িবাঁধগুলো একেবারে বিলীন হয়ে গেছে। এ অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলো যে দুর্বিষহ যন্ত্রণায় সময় পার করছেন তা বলে বোঝাতে পারব না। তবে আমি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলোর মতোই হতাশ হয়েছি, কারণ সরকারের পানি সম্পদ মন্ত্রী, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রীর কেউ এক মুহূর্তের জন্যও ঘূর্ণিদুর্গত এলাকায় না আসায়। উপরন্তু ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া গত সোমবার বাঁশখালী উপজেলার ক্ষয়ক্ষতি সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। এসময় তিনি সেখানে ত্রাণ তৎপরতাও চালান। এরপর বাঁশখালী থেকে এবিসি সড়ক হয়ে কক্সবাজারের পেকুয়া ও চকরিয়া হয়ে মহেশখালী গেছেন। কিন্তু এক মুহূর্তের জন্যও মন্ত্রী পেকুয়ায় না আসায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলোর মতো আমিও হতাশ হয়েছি । এব্যাপারে কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পরদিন সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। এ সময় আমি যা দেখেছি তার বিস্তারিত মন্ত্রীর দৃষ্টিতে এনেছি। পেকুয়াসহ যেখানে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতি হয়েছে তা সময় স্বল্পতার কারণে দেখতে না পারায় মন্ত্রী নিজেও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি তিনি এও বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে, কোন মানুষ যাতে অভুক্ত না থাকে। সেজন্য সকল ধরণের পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘মন্ত্রী পেকুয়ায় যেতে না পারলেও যারা একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছেন তাদেরকে পুনর্বাসনে সরকারি সহায়তা দেয়া হবে। এর কোন হেরফের হবে না। তিনি প্রতিটি দপ্তরের স্ব স্ব কর্মকর্তার কাছ থেকে পুঙ্খানুপুঙ্খ ক্ষয়ক্ষতির চিত্র নিয়ে গেছেন।’

– See more at: http://www.dainikazadi.org/details2.php?news_id=2589&table=may2016&date=2016-05-26&page_id=4&view=0&instant_status=#sthash.jeXpakAj.dpuf

পাঠকের মতামত: