ঢাকা,শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর আঘাত এখনো ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেনি, বরাদ্দ চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল

pic 1 pekuaচকরিয়া অফিস :

ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর আঘাত এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ গুলো। রাস্তাঘাট ও বেড়িবাধ গুলো সমুদ্রের তোড়ে ভেঙ্গে গেছে। ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে পড়া মানুষের পাশে কেউ দাড়াঁয়নি। ওইসব এলাকায় এখনো পর্যন্ত কোন ত্রান সামগ্রী পৌছানো হয়নি। তবে গতকাল সাতটি ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের মাঝে ১০কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। যা চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের তুলনায় অপ্রতুল। তাদের দাবী ত্রান বা সাহায্য নয় চাই স্থায়ী সমাধান। দ্রুত সময়ে রোয়ানুর আঘাতে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের পাশে দাড়াঁনো।

জানা যায়, গত এক সপ্তাহ ধরে চকরিয়া উপজেলায় প্রায় ২০হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তাদের প্রায় ৯শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বংস্ত হয়ে গেছে। আংশিক ক্ষতি হয়েছে এক হাজার মতো ঘর-বাড়ি। অনেক মানুষের বাসস্থান না থাকায় পাশ্ববর্তী আশ্রয়ণ কেন্দ্র গুলোতে অবস্থান নিয়েছেন। ওইসব এলাকায় জরুরী কাজ হচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে দ্রুত সময়ে ত্রান সামগ্রী পৌছানো। কাগজে কলমে সরকারি কিছু ত্রান কার্যক্রমের কথা থাকলেও তা চাহিদার তুলনায় না থাকার মতো। অধিকাংশ এলাকায় জনপ্রতিনিধি তাদের পাশে নেই বলে অভিযোগ উঠেছে। জনপ্রতিধিনারাও যথা সময়ে খোজ খবর নিচ্ছেন না। ওইসব ইউনিয়নে সবেমাত্র ইউপি নির্বাচন শেষ হয়েছে। এখনো জনপ্রতিনিধিরা শপথ নেননি। অন্যান্য উপজেলার চেয়েও রোয়ানুর আঘাত চকরিয়ায় ক্ষতির পরিমাণ কম হলেও তবে সবচেয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন চিংড়ি ও লবণ চাষীরা। রামপুর ও চরণদ্বীপ চিংড়িজোনে প্রায় ২০হাজার একর জমির মাছ ও লবণ ধ্বংস হয়ে গেছে। মাছের প্রকল্প গুলোতে স্বাভাবিক পানির তুলনায় ৩-৪ থেকে ফুট উচ্চতায় সমুদ্রের পানি ঢুকায় ঘের গুলো সমুদ্রের সাথে একাকার হয়ে যায়। এতে চিংড়ি চাষীদের অর্ধশত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। অন্যান্য বছর গুলোর দূর্যোগের সময় সরকারী বরাদ্দ দেওয়ার পূর্বে জনপ্রতিনিধি ও শিল্পপতি ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে দলগত বিভিন্ন কার্যক্রম দেখা গেলেও এবার তা অনুপস্থিত। রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ এনজিওগুলোও অনেকটা নিরব। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় সাংসদ মৌলভী মোহাম্মদ ইলিয়াছের তৎপরতা চোখে পড়ছে না। পাশে নেই উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলমও। তাদের পক্ষ থেকে এখনো ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাড়াঁননি বলে জানান স্থানীয় এলাকাবাসী। গত সোমবার দূর্যোগ ও ত্রান মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া জেলা সদর ও মহেশখালী উপজেলা ঘুরে গেলেও চকরিয়ায় আসেননি। এতে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে। এদিকে রোয়ানুর আঘাতে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে গতকাল চাল বিতরণ করা হয়েছে। পুরো উপজেলার জন্য ৮ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল।

এদিকে সাহারবিল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহসিন বাবুল জানান, সাহারবিল ইউনিয়নে রোয়ানুর আঘাতে বেশ ক্ষতি হয়েছে। তবে বেশি ক্ষতি হয়েছে চিংড়ি প্রকল্প ও লবণ মাঠের। চাষীদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ২টন চাল বরাদ্দ পেয়েছেন বলে জানান। এসব চাল প্রায় দুই’শ পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক জরুরী ভিত্তিতে সাহারবিল ইউনিয়নে ২টন, পশ্চিম বড়ভেওলায় ১টন, চিরিঙ্গা ইউনিয়নে ১টন, ঢেমুশিয়া ইউনিয়নে ১টন, কোনাখালী ইউনিয়নে ১টন, পূর্ববড়ভেওলা ইউনিয়নে ১টন ও বিএমচর ইউনিয়নে ১টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ৫০ হাজার বেশি মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। খেটে খাওয়া দিনমজুরদের পরিবারে রীতিমতো হাহাকার চলছে। ক্ষতিগ্রস্থরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ত্রানের প্রয়োজন নেই। চাই স্থায়ী সমাধান। স্থায়ীভাবে বাধ দেওয়ার জোর দাবী জানান ক্ষতিগ্রস্থরা। ##

পাঠকের মতামত: