ঢাকা,রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় রিজার্ভ বনভুমিতে বাণিজ্যিক মার্কেট নির্মাণ! জড়িত ইউপি চেয়ারম্যান!

কক্সবাজার,প্রতিনিধি :: চকরিয়া সুন্দর বনের প্যারাবন কেটে ৭ শত একরের চিংড়ী ঘের দখলের পর ফাসিয়াখালী রেঞ্জের অধীন মালুমঘাট স্টেশনের উত্তরে মেমোরিয়াল খ্রীষ্টান হাসপাতাল লাগোয়া এলাকায় এবার সরকারি রিজার্ভ বনভুমি জবর দখল করে বাণিজ্যিক মার্কেট নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে চিরিংগা ইউপি চেয়ারম্যান জামাল হোসেন চৌধুরীর বিরোদ্ধে। এদিকে দখলে জড়িত থাকার বিষয়টি কৌশলে ধামাচাপা দেয়ার জন্য অভিযুক্ত একটি চক্র কতিপয় দখলদার মালিকদের কাছে স্ট্যাম্পমুলে কাগজ নিয়ে রীতিমত বনভুমিতে স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণ শুরু করেছে। গেল পক্ষকাল সময়ধরে বনবিভাগের রির্জাভ জমিতে অবৈধভাবে বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ অব্যাহত থাকলেও বনকর্মীরা রয়েছেন নিরব দর্শকের ভুমিকায়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলার চিরিঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল হোছাইন চৌধুরী মালুমঘাট স্টেশনের উত্তরে বনবিভাগের রির্জাভ বনভুমিতে একটি বাণিজ্যিক মার্কেট নির্মাণ করছেন। তাঁর বিরোদ্ধে ইতিপুর্বেও চকরিয়া সুন্দরবনের প্যারাবন কেটে ৭ শত একরের চিংড়ী ঘের তৈরী করার কারনে ৩টি বনমামলাও রয়েছে।

অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চিরিঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান জামাল চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্ঠা করা হয়। কিন্তু তিনি মুঠোফোন রিসিভ না করায় তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

মালুমঘাটের বনজায়গীরদার রফিক উদ্দিন ও মো.জাহাংগীর আলম বলেন, তাঁরা বনবিভাগের ভিলেজার অংশিদার হিসেবে দীর্ঘবছর আগে মালুমঘাট স্টেশনের উত্তরে বেশকিছু রিজার্ভ বনভুমি (ভিলেজারী প্রথায়) ভোগদখলে থেকে রক্ষনাবেক্ষন করে আসছেন। এতবছর তাঁরা ওই জায়গা ভোগদখলে থাকলেও সেখানে স্থায়ী কোনধরণের অবকাঠামো নির্মাণ করেনি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তাদের ওই রিজার্ভ বনভুমির সেই জায়গাটি কতিপয় মহলের চক্রান্তে বেদখল হয়ে গেছে।

রফিক উদ্দিন ও জাহাংগীর আলমের অভিযোগ, স্থানীয় কয়েকজন অবৈধ দখলদার বনবিভাগের রিজার্ভ জায়গার বেশকিছু অংশ কৌশলে চিরিঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল চৌধুরীকে বিক্রি করে দিয়েছেন। বর্তমানে ইউপি চেয়ারম্যান জামাল চৌধুরী অবৈধ দখলদার থেকে কেনা বনভুমির পাশাপাশি আমাদের ভোগদলীয় ভিলেজারী জায়গাও দখলে নিয়েছেন। এখন সেখানে তিনি ব্যক্তিগত বাণিজ্যিক মার্কেটও (ইট-পাথরে পাকা বিল্ডিং) নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ভুক্তভোগীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা বিষয়টি স্থানীয় বনবিভাগকে জানালেও বনবিভাগের রিজার্ভ জায়গায় স্থায়ী অবকাঠামো তথা বিল্ডিং ভবন নির্মাণকাজে কোন ধরণের বাধা দেয়নি, এমনকি এব্যাপারে প্রশাসনিক উদ্যোগও নেয়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় লোকজন।

কক্সবাজার উত্তর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ আনোয়ার হোসেন সরকারের কাছে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয় নি।

বিষয়টি প্রসঙ্গে কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের চকরিয়ার উপজেলার ফাসিয়াখালী বিট কাম রেঞ্জ কর্মকর্তা শেখ মিজানুর রহমান বলেন, আমি এই রেঞ্জে যোগদানের অনেক আগে থেকে মালুমঘাট স্টেশনের উত্তরে ওই এলাকায় অনেক দোকানপাট গড়ে উঠেছে। সেখানে ভিলেজারী বনভুমিতে নতুন করে দোকানপাট নির্মাণ করছে এ ধরণের বিষয় আমাকে কেউ জানায়নি। তবু আপনার কাছ থেকে বিষয়টি যখন জানলাম, অবশ্যই খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন।

 

পাঠকের মতামত: