ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় রোহিঙ্গা পরিচয় গোপন করে ভোটার হালনাগাদে আবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নে পরিচয় গোপন করে নাগরিকত্ব সনদ নিয়ে ভোটার হতে গিয়ে ধরা পড়েছে রোহিঙ্গা যুবক। তার নাম আইয়ুব উদ্দিন। তিনি ২০১৫ সালের ২৪ আগস্ট হারবাং ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটি জন্ম সনদ নিয়েছেন। সেখানে তার বাড়ি হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নং ওয়ার্ডের মসজিদ মোড়া গ্রামে লেখা আছে। তার পিতার নাম আবদুল মজিদ ও মাতার নাম নুরবাহার। সেসময়কার ইউপি চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন বাবর সনদে স্বাক্ষর করেন।

অভিযোগ উঠেছে, জন্ম সনদ নিলেও ভয় আশঙ্কা থেকে আইয়ুব উদ্দিন এতদিন ভোটার হতে পারেনি। তবে চলতি ২০২২ সালের জুন মাসে সমাপ্ত হওয়া ভোটার হালনাগাদে তিনি ঠিকই অর্ন্তভুক্ত হযেছেন। স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করে বলেছেন, সম্প্রতি শেষ হওয়া ভোটার হালনাগাদে আইয়ুব উদ্দিন কৌশলে হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম মিরানের একটি প্রত্যায়ন জমা দিয়েছেন।
২০২১ সালের ১০ অক্টোবর সাবেক চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম সাক্ষরিত রোহিঙ্গা নয় প্রত্যায়নে রোহিঙ্গা যুবক আইয়ুব উদ্দিনকে বাংলাদেশী নাগরিক এবং তিনি কোন সময় রাষ্ট্র বিরোধী কাজে জড়িত ছিলনা ও তার স্বভাব চরিত্র ভালো বলে সনাক্ত করেছেন সাবেক চেয়ারম্যান মিরানুল।

জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২৪ আগস্ট হারবাং ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দেওয়া জন্ম সনদ ও ২০২১ সালের ১০ অক্টোবর সাবেক চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম সাক্ষরিত রোহিঙ্গা নয় মর্মে দেওয়া প্রত্যায়ন দিয়ে সম্প্রতি শেষ হওয়া ভোটার হালনাগাদে আইয়ুব উদ্দিন কৌশলে আবেদন জমা দিয়েছেন।

বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করেছেন হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মেহেরাজ উদ্দিন মিরাজ। তিনি বলেন, ২০২২ সালের ভোটার হালনাগাদে আইয়ুব উদ্দিন ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দেওয়া জন্ম সনদ ও সাবেক চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম সাক্ষরিত রোহিঙ্গা নয় সনদ দিয়ে নতুন ভোটার হতে আবেদন জমা দেন। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন প্রদত্ত চকরিয়া উপজেলা প্রশাসনের যাছাই বাছাই কমিটিতে আইয়ুব উদ্দিনের আবেদনটি বৈধ হয়েছে। পরে তাকে হারবাং ইউনিয়ন পরিষদে ভোটার হতে ছবি উঠাতেও বলেছে।
ইউপি চেয়ারম্যান মেহেরাজ উদ্দিন মিরাজ বলেন, ছবি উঠাতে তারিখ ঘোষণা করার কদিন আগে স্থানীয় এলাকাবাসী একটি লিখিত অভিযোগ দেন চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার দপ্তরে। সেই অভিযোগে বলা হয় আইয়ুব উদ্দিন রোহিঙ্গা নাগরিক। শুধু তিনি নন, তার পুরো পরিবার মায়ানমার থেকে এসে হাববাং ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের মসজিদ মোড়া এলাকায় বসতি স্থাপন করে বসবাস করছেন। পরে পরিবার সদস্যরা নানা উপায়ে হারবাং ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নাগরিকত্ব ও জন্ম সনদ নিয়ে অনেকে ভোটার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
হারবাং ইউপি চেয়ারম্যান মেহেরাজ উদ্দিন মিরাজ বলেন, আইয়ুব উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নি্দেশ দিয়েছেন তার ছবি এখনই উঠানো যাবেনা। এরই প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত আইয়ুব উদ্দিনকে পরিষদে ছবি তোলার সময় বিষয়টি জানিয়ে ছবি তুলতে দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, খোজ নিয়ে জেনেছি, আইয়ুব উদ্দিন ভোটার হালনাগাদে জমা দেওয়া আবেদনে যাদেরকে মা বাবা দেখিয়েছেন, তা সম্পুর্ন ভুয়া। আবদুল মজিদ ও নুরবাহার তার মা বাবা নন।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, হারবাং ইউনিয়নে ভোটার হালনাগাদে নাম উঠা আইয়ুব উদ্দিন নামের একব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ আসায় তার ছবি উঠানো বন্ধ রাখা হয়েছে। ওই ব্যক্তি রোহিঙ্গা নাগরিক কী না তা খতিয়ে দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ##

পাঠকের মতামত: