ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

উপকূলীয় পেকুয়া- কুতুবদিয়া উপজেলায়

জনশুমারির কর্মীদের খাবারের বরাদ্দ লোপাট

মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া :: কক্সবাজার জেলার দুই উপকূলীয় পেকুয়া- কুতুবদিয়া উপজেলায় চলমান জনশুমারি ও গৃহ গণনায় নিয়োজিত কর্মী গণনাকারী- সুপারভাইজারদের প্রশিক্ষণ চলাকালে খাবারের বরাদ্ধ লোপাট করেছে সংশ্লিষ্ট পরিসংখ্যান অফিসের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সিন্ডিকেট! গত ১৫ জুনের পূর্বে প্রশিক্ষণ চলাকালে এই দুই উপকূলীয় উপজেলায় প্রশিক্ষনার্থী গণনাকারী ও সুপারভাইজারদের মাঝে পরিসংখ্যান অফিস কর্তৃক দুপুরে অত্যন্ত নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। সকালের নাস্তা নামেমাত্র দেওয়া হলেও বিকালে এ দুই উপজেলায় কোন প্রশিক্ষণার্থীকেই নাস্তা দেওয়া হয়নি। জনশুমারি ও গৃহ গণনায় নিয়োজিত গণনাকারী ও সুপারভাইজার পদ থেকে বাদ দেওয়া হবে এ আশংকায় পেকুয়া এবং কুতুবদিয়া উপজেলা থেকে কোন প্রশিক্ষণার্থীই এসব অনিয়মের প্রতিবাদ করেনি। বেশ কয়েকজন প্রশিক্ষণার্থীর সাথে আলাপকালে তারা এমনটিই এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন। প্রশিক্ষণের খাবার ও নাস্তার টাকা লোপাপাটের মধ্য দিয়ে পেকুয়া- কুতুবদিয়া উপজেলায় দায়সারাভাবে প্রশিক্ষণ সমাপ্ত হয়েছে।

প্রাপ্ত অভিযোগে জানা যায়, পেকুয়া ও কুতুবদিয়া পরিসংখ্যান অফিসের কতিপয় কর্মরচারী সিন্ডিকেট প্রশিক্ষণার্থীদের খাবার ও নাস্তার বরাদ্দ নিয়ে নয়ছয় করলেও পরিসংখ্যান অফিসের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি মাসের প্রথম ও ২য় সপ্তাহে পেকুয়া উপজেলা পরিসংখ্যান অফিস কর্তৃক আয়োজিত উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে সুপাভাইজার ও গণনাকারীদের প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। প্রশিক্ষণে পেকুয়া উপজেলার ৭ ইউনিয়নের সর্বমোট ৪৩১ জন গণনাকারী ও ৭৫ জন সুপারভাইজার ৪ দিনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। অপরদিকে কুতুবদিয়া উপজেলাতেও একইভাবে দুই শতাধিক গণনাকারী ও অর্ধ শতাধিক সুপারভাইজার প্রশিক্ষণে অংশ নেয়। এসব প্রশিক্ষণে সমন্বয়কারী ছিলেন পরিসংখ্যান অফিস কর্তৃক নিয়োগকৃত সংশ্লিষ্ট জোনের জোনাল অফিসার।

পেকুয়া উপজেলার বেশ কয়েকজন গণনাকারী ও সুপারভাইজার নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেককে জানিয়েছেন, পেকুয়ায় প্রশিক্ষণ শুরুর ১ম ও ২য় দিন অত্যান্ত নিম্নমানের খাবার দেওয়া হয়েছে। সকালে নাস্তাও নিম্নমানের দেওয়া হয়েছে। বিকালে নাস্তা দেওয়ার জন্য সরকারী নির্দেশনা থাকলেও কোন প্রকার নাস্তা দেওয়া হয়নি।

একইসূরে কুতুবদিয়া উপজেলার কয়েকজন প্রশিক্ষণার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে বলেন, দুপুরের খাবার অত্যন্ত নি¤œমানের দেওয়া হয়েছে। পঁচা বাসি খাবার ও পরিবেশন করা হয়েছে। সকালে নামমাত্র নাস্তা দেওয়া হলেও বিকালে কোন প্রকার নাস্তা দেওয়া হয়নি।

তবে পেকুয়া উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসে দায়িত্বরত কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবদুর রহিম বলেন, তার উপজেলায় প্রশিক্ষণার্থীদের ভাল মানের খাবার দেওয়া হয়েছে। ভাল মানের নাস্তাও দেওয়া হয়েছে। বিকালে নাস্তা দেওয়া হয়নি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার ও বিকালের নাস্তার জন্য যে বরাদ্দ ছিল সে অনুযায়ী দেওয়া হয়েছে। কোন প্রকার অনিয়ম করা হয়নি।

কুতুবদিয়া উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসের কর্মকর্তা মো: মিনহাজুল ইসলামের কাছে কুতুবদিয়ায় প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে খাবার সরবরাহে অনিমের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কুতুবদিয়ায় কোন অনিয়ম হয়নি। বরাদ্দ অনুযায়ী সব টিকটাক মতো করা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা পরিসংখ্যান অফিস সূত্রে জানা গেছে, সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার ও বিকালের নাস্তা বাবদ প্রতি প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য বরাদ্দ ছিল ২৫০টাকা। এরমধ্যেই খাবার ও নাস্তা দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।

কক্সবাজার জেলা পরিসংখ্যান অফিসের সহকারী পরিচালক সুব্রত রঞ্জন হাজারা বলেন, খাবারে অনিয়মের বিষয়টি তাকে পেকুয়া ও কুতুবদিয়া থেকে এখনো পর্যন্ত কেউ অবগত করেনি। সরকারি নির্দেশনা মেনে পেকুয়া- কুতুবদিয়ায় খাবার দিতে বলেছি। তারপরও যদি অনিয়ম হয়ে থাকে তাহলে বিষয়টি তিনি তদন্ত করে দেখবেন। গণনাকারীরা কষ্ট করে তথ্য সংগ্রহ করবে। তাদের খাবার যদি খারাপ হয় এটা মেনে নেওয়া যায় না।

পাঠকের মতামত: