ঢাকা,শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় যুবককে পঙ্গু করতে পরিকল্পনার ফোনালাপ নিয়ে তোলপাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::
যুবককে উঠিয়ে নিয়ে আহত করে পঙ্গু বানিয়ে দিতে হবে আর নির্বাচনে গন্ডগোল লাগলে উদ্ধার করে সহযোগিতা করতে হবে। এসব ফোনালাপের প্রায় ৬ মিনেটের অডিও রেকর্ড নিয়ে তোলপাড় চলছে চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারায়। এনিয়ে স্থানীয়দের মাঝে সংঘর্ষের আশংকা করা হচ্ছে। তবে গণ্যমন্য মুরব্বিদের মাধ্যমে যাচাই করে সমাধানের প্রচেষ্টা চলছে।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন সময়ের ১মিঃ ১৪, ৩মিঃ ২৭ ও ২মিঃ ১৯ সেকেন্ডের ভয়েস রেকর্ড সমুহ এখন ৭নং ওয়ার্ড পূর্ব মাইজপাড়া এলাকাবাসীর গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের হাতে।

ফোনালাপ সুত্রে জানা গেছে, স্থানীয় পূর্ব মাইজ পাড়ার মৃত অছিয়র রহমানের ছেলে মীর হোসেন ও অপরজন সরওয়ার নামের অজ্ঞাত সন্ত্রাসীর অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে চুক্তি ও আলাপ আলোচনা চলে।
সেখানে, বাজারের মধ্যে লাল মিয়া সর্দারের ছেলে ফরিদ মেম্বারের ছোট ভাই এহেলাজ কবিরকে চিনিয়ে দিতে হবে। এরপর দুই ঘন্টার মধ্যে সন্ত্রাসীরা তাকে নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে মেরে পঙ্গু করে দিবে। এ কাজ সম্পন্ন করতে সরোয়ারের দাবী বিশ হাজার টাকা। কিন্তু মীর হোসেন দশ হাজার টাকার বেশি দিতে রাজি নয়। এছাড়াও সরোয়ারকে দলবল নিয়ে নির্বাচন চলাকালে সহযোগিতাও করতে হবে। অডিও ফোন রেকর্ডটি ফাঁস হলে ক্ষিপ্ত হয়ে যায় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। এ নিয়ে সোমবার স্থানীয় মুরব্বিরা মেম্বার ফরিদুল আলমের অফিসে বিষয়গুলো বিস্তারিত যাচাই করতে বৈঠকে বসেন।
এ বৈঠকের সম্মানিত ব্যক্তি সাবেক কৃতি ফুটবলার ইব্রাহিম জানান, এলাকার বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখে এসবের রহস্য জানতে গত সোমবার আমরা বৈঠকে বসি। আরো বিস্তারিত জানার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা। সকলের সিদ্ধান্ত সোমবার পুনঃ বৈঠকের দিন ধার্য করা হয়েছে।

এ বিষয়ে পরিকল্পনার শিকার মোঃ এহেলাজ কবির বলেন, আমি এলাকায় এপর্যন্ত কারো উপকার করতে না পারলেও ক্ষতি করার চেষ্টা করিনি। তবু কেন আমার উপর এ পরিকল্পনা বুঝতেছি না। এনিয়ে এলাকার মুরব্বিদের দেয়া বিচারের আশ্বাসে এখনো মামলা বা জিডি করিনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অভিযুক্ত মীর হোসেন। উপস্থিত সকলের সম্মুখে তিনি জানান, এসব পরিকল্পনার কথা সম্ভাব্য মেম্বার পদপ্রার্থী গিয়াস উদ্দিনের কথায় করা হয়েছে। ওনার সাথে আমিও নির্বাচনী প্রচারণায় ছিলাম।
এ বিষয়ে গিয়াস উদ্দিন বলেন, এটি ফরিদ মেম্বারের সাজানো পরিকল্পিত। আমি এরকম কোন কথা কাউকে বলিনি এবং কোথাও আমার রেকর্ড থাকলে দেখাতে বলুন। এছাড়া তাদের দলবল নিয়ে আমার বাড়িঘরে হামলার চেষ্টা চালিয়েছে। এ বিষয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে ডুলাহাজারা ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার ফরিদুল আলম বলেন, একটি ফোন রেকর্ড পেয়ে আমি এলাকার লোকজন ও গিয়াস উদ্দিনের আত্মীয় স্বজনকে অবগত করি। গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বৈঠকে মীর হোসনকে ডাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে শুক্রবার আরেকটি বৈঠকে বসতে জানিয়েছে মুরব্বিরা।
ডুলাহাজারা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চকরিয়া নিউজকে বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। আমার ইউনিয়নে এরকম ঘটনা করতে এ পরিকল্পনা যদি সত্যি হয় তা অত্যন্ত দুঃখজনক। আরেকটু খতিয়ে দেখে কি করা যায় দেখতেছি।

পাঠকের মতামত: