ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

যত্রতত্র গড়ে উঠছে ফার্মেসী : কোথাও আইনের বালাই নেই

মাহাবুবুর রহমান ::  কক্সবাজারে যত্রতত্র গড়ে উঠছে অবৈধ ফার্মেসী। সরকারি সমস্ত নিয়ননীতি উপেক্ষা করে শহরাঞ্চল সহ গ্রামেও গড়ে উঠছে অসংখ্য ফার্মেসী। প্রতিটি ফার্মেসীতে একজন করে ফার্মাসিস্ট থাকার কথা থাকলেও লাইসেন্স নেওয়া ফার্মেসীর মধ্যে ৯৫% ফার্মেসীতে নেই ফার্মাসিস্ট। এছাড়া বেশির ভাগ ফার্মেসীতে বিক্রি হচ্ছে মেয়াদোর্ত্তীণ সহ নি¤œমানের কোম্পানীর ঔষধ, গ্রাহকদের কাছ থেকে দাম রাখা হয় বাড়তি।এছাড়া সাধারণ মানুষের মধ্যে বেশির ভাগ ঔষধের দাম জানা না থাকার কারনে প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। তবে সমস্ত অনিয়ম যারা তদারকি করার কথা তাদের কাছে মাসিক মাসোহারা পাঠালে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায় বলেও জানান খোদ ফার্মেসীর সাথে সংশ্লিষ্টরা।
খুরুশকুল বঙ্গবন্ধু বাজারে নিজেই ফার্মেসী দিয়ে নিজেই ডাক্তার হিসাবে প্রেসক্রিপশন দিয়ে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন মৃদুল কান্তি ধর নামের এক ব্যাক্তি,জানা গেছে তিনি প্রথমে স্থানীয় একটি ফার্মেসীতে চাকরী করলেও বর্তমানে একই এলাকায় ২ টি ফার্মেসীর মালিক। একই ফার্মেসীতে নিয়মিত বসে রোগি দেখেন সাধণ চন্দ্র দে নামে আরো একজন ডাক্তার। নিয়ম অনুযায়ী তাদের কারো নামের আগে ডাক্তার লেখার আইন না থাকলেও দিব্বি ডাক্তার হিসাবেই নাম লিখিয়েছেন। এই ফার্মেসীতে সরকারের অনুমোদনহীন অনেক নি¤œমানের এন্টিবায়েটিক রাখা হয়,যা প্রতিনিয়ম বিক্রি করা হয় গ্রামের মানুষের মাঝে। পালপাড়া বাজারে মোহাম্মদ নুর সহ অনেক ফার্মেসী গড়ে তুলেছেন অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সেখানে হর হামেসাই বিক্রি হচ্ছে নি¤œমানের মানের ঔষধ যাতে প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
খুরুশকুল পালপাড়া এলাকার সনজিত পাল জানান,কিছুদিন আগে আমি সহ পরিবারের সবার সর্দিজ¦র হয়েছিল। বর্তমানে যেহেতু করোনার প্রাদর্ভাব চলছে তাই প্রথমে স্থানীয় ফার্মেসীতে গিয়ে সমস্যা কথা জানালে তারাই বলে করোনা বলে কিছুই নাই। এগুলো কোন সমস্যা নাই আমরা যে ঔষধ দিচ্ছি সেগুলো খান ভাল হয়ে যাবেন। তাদের কথা মত প্রায় ৯০০ টাকার ঔষধ খাওয়ার পরও কোন পরিবর্তন না দেখে চট্টগ্রাম থাকা এক আত্বীয় ডাক্তারকে ফোন করে উনার দেওয়া ঔষধ খাওয়ার পর কিছুটা ভাল লেগেছে। এবং ফার্মেসী থেকে যে ঔষধ দিয়েছিল তা খুবই নি¤œমানের কোম্পানীর এবং আমার রোগের ঔষধ না বলে জানিয়েছিলেন তিনি। এভাবে অনেকে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে তবে ভালও হচ্ছে অনেকে। পিএমখালী বাংলাবাজার এলাকার আনিকা ফার্মেসীর সামনে দাড়ানো অবস্থায় সিএনজি থেকে নেমে এক বয়স্কলোক বকে ব্যাথা,মাথা ঘুরানো সহ কিছু সমস্যা কথা জানালে ফার্মেসীতে থাকা ছেলেটি কোন ব্যাখ্যা না শুনেই ২ প্রকারের এন্টিবায়েটিক সহ এইচ প্লাস ঔষধ দিয়ে ৫৭০ টাকা আদায় করলো,এ সময় তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি ডাক্তার না তবে এখানে প্রায় সময় এরকম রোগিই আসে,তাদের প্রায় ঔষধ দিতে গিয়ে আমার অভিজ্ঞতা হয়ে গেছে। আর ডাক্তারের কাছে গেলেও সেই একই ঔষধ দিত। সুতরাং মানুষ ডাক্তারের কাছে না গিয়ে আমাদের কাছে চলে আসে। এ সময় আবদুল হক নামের একজনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,শুধু বাংলাবাজারে ১০ টির মত ফার্মেসী আছে কারো লাইসেন্স আছে কিনা জানিনা তবে ফার্মাসিন্ট কোথাও নেই। যে যার ইচ্ছমত ফার্মেসী ব্যবসা করে যাচ্ছে। আর টাকা দিলে সব ঠিক হয়ে যায় এখানে কে কাকে দেখছে। তাছাড়া পুরু পিএমখালীতে অন্তত ২/৩ শত ফার্মেসী আছে। এদিকে কয়েক সপ্তাহ আগে শহরের ৬ নং ওয়ার্ডের বড়–য়া পাড়া এলাকা গিয়ে দেখা যায় ফার্মেসীতে গিয়ে রোগের বর্ননা দিয়ে ঔষধ নিচ্ছে লোকজন। এ সময় স্থানীয় মিনাল নামের একজন বলেন,এখানে সবাই ডাক্তার,এভাবেইচলছে সারাজীবন কেউ কাউকে দেখার সময় নেই। করোনার সময় স্থানীয় এক ব্যাক্তি ফার্মেসী থেকে ঔষধ কিনে রোগ ভাল না হওয়ায় তিনি ডাক্তার নুরুল আলমকে নাকি দেখিয়েছিল পরে জানা গেছে তিনি যে ঔষধ খাচ্ছেন সে গুলো নাকি নকল ঔষধ তাই রোগ ভাল হচ্ছে,সেটা নিয়ে এলাকায় অনেক ঝামেলা তৈরি হয়েছিল।
এদিকে কক্সবাজার ঔষধ তত্ববধায়ক কার্যালয়ে গিয়ে জানা গেছে পুরু জেলায় প্রায় ৩ হাজার ২শ‘র মত ফার্মেসী আছে তবে তারাই শিকার করে বাস্তবে ৫ হাজারের বেশি ফার্মেসী আছে। আর ফার্মাসিস্ট ছাড়া কোন ফার্মেসী খুলতে না পারার নিয়ম থাকলে বাস্তবে কেই মানছে না। তবুও কিভাবে সে সব ফার্মেসীর লাইসেন্স নবায়ন হয় এমন প্রশ্নের জবাবে উত্তর না দিয়ে হেসেই উড়িয়ে দেন তারা। এ ব্যপারে জেলা ঔষধ তত্ত¦বাধায়ক রোপান মল্লিক বলেন,আমি নতুন এসেছি করোনা পরিস্থিতি কারনে এখনো মাঠ পর্যায়ে ভিজিট করতে পারিনি তবে আসা করছি সমস্ত অনিয়ম ধীরে ধীরে বন্ধ করবো।

পাঠকের মতামত: