ঢাকা,শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪

নৌকা প্রত্যাশী আ.লীগের তিন নেতা

পেকুয়ার শিলখালী ইউপিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মাঠে

নিজস্ব প্রতিবেদক :: ইউপি নির্বাচন-২০২১ কে সামনে রেখে পেকুয়ার শিলখালী ইউনিয়ন সম্ভাব্য চেয়ারম্যান পদ প্রার্থীদের প্রচারণায় মুখর। নির্বাচনের তফশিল এখনো ঘোষণা করা হয়নি। কিন্তু স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ইতোমধ্যে মাঠে নেমে পড়েছেন। আসন্ন ইউপি নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করাতে এই দলের নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েই এই ইউপির নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। বিএনপি নেতা ও বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল হোসাইন আসন্ন নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা জানিয়েছেন।

তিনি শিলখালী ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠালগ্ন (২০০৩ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত) থেকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। টানা তিনবার নির্বাচিত এই চেয়ারম্যান বলেন, “দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে শিলখালীর চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছি। সবসময় চেষ্টা করেছি শিলখালীবাসীর জন্য সর্বোচ্চটা দেওয়ার। আসন্ন নির্বাচনে সাধারণ মানুষ চাচ্ছে আমি আবারও নির্বাচন করি।”

এক প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান নুরুল হোসাইন আরও বলেন, গতবার বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে আমি নির্বাচন করেছিলাম। এবারের ইউপি নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিচ্ছেনা। তাই আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবো। এদিকে বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, টানা তিন বার নির্বাচনে জয়ী বিএনপি নেতা নুরুল হোসাইনকে চেয়ারম্যানের আসন ধরে রাখতে চ্যালেঞ্জে পড়তে হতে পারে এবার।
কারন আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি দলগতভাবে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এতে নুরুল হোসাইন ছাড়াও বিএনপির আরও দুই নেতা এই ইউপি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তাঁরা হলেন ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু ছিদ্দিক ও উপজেলা বিএনপির সদস্য আবদু রশিদ। তাঁরা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে থাকবেন বলে জানান।

আবু ছিদ্দিক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শিলখালী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। এই অঞ্চলের তৃণমূল বিএনপি চায় আমি নির্বাচন করি। শিলখালীর মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আসন্ন নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছি। আমি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে থাকবো। উপজেলা বিএনপির সদস্য আবদু রশিদও এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে লড়তে চান। দলীয় প্রতীক না থাকাতে তিনিও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা জানান।

এদিকে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে শিলখালী ইউনিয়নের পথ ঘাট দাপিয়ে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন মো. কামাল হোসেন ও শাহ জাহান। শিলখালী ইউনিয়নের প্রায় রাস্তার মোড়ে তাঁদের নির্বাচনী ব্যানার ফেস্টুন ঝুলছে। পরিবর্তনের ডাক দিতেই তাঁরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বলে জানান।
স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহ জাহান বলেন, শিলখালীর মানুষ এখন অনেক বেশী সচেতন। তাঁরা যোগ্য ও দক্ষ একজনকে চেয়ারম্যান হিসেবে বেচে নিবেন।

বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল হোসাইনের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাবেক ইসলামী ছাত্র শিবির নেতা মো. ইলিয়াছ অনেকটা এগিয়ে রয়েছেন বলে জানান শিলখালী ইউনিয়নের বাসিন্দারা। মো. ইলিয়াছ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিতে সক্রিয়। তিনি আসন্ন ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, শিলখালীর সাধারণ মানুষ পরিবর্তনের জন্য মুখিয়ে আছে। আগামী ইউপি নির্বাচনে সাধারণ মানুষের সমর্থন নিয়ে আমি শেষ পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবো। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নির্বাচন নিয়ে তেমন তৎপরতা নেই। তবে আওয়ামী লীগের তিন নেতা নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী বলে জানান শিলখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেলাল উদ্দিন আহমদ। তিনজনের মধ্যে তিনি একজন। বাকী দুজন হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক কাজিউল ইনসান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক খানে আলম।

বেলাল উদ্দিন আহমদ বলেন, “দল ক্ষমতায় থাকাতে অনেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে চায়। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ থেকে এই তিন জনের নাম সুপারিশ করা হয়েছে। আমি দলের মনোনয়ন পেলেই প্রার্থী হবো। অন্যথায় নৌকার পক্ষেই কাজ করবো।”২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন কাজিউল ইনসান।

তিনি বলেন, “আমার জনপ্রিয়তা দেখে গতবার দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছিলো। দুর্ভাগ্যজনকভাবে হেরে যায়। এবার শিলখালীর মানুষ পরিবর্তন চাই। মানুষের ভালোবাসা আর সমর্থন নিয়ে আসন্ন নির্বাচনে আমি আবারও লড়বো।” মনোনয়ন না পেলে নির্বাচন করবে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শিলখালীতে আগের চেয়ে আমার জনসমর্থন অনেক এগিয়ে। এ ইউনিয়নের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে থাকবো। সাধারণ মানুষের ভাবনা পেকুয়া উপজেলার পাহাড় বেষ্টিত এই ইউনিয়নে আইনের শাসন জোরদার করতে নেতৃত্বে পরিবর্তন দরকার। এই ইউনিয়নের আবদুল হক নামের এক বাসিন্দা বলেন, শিলখালীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের চাইতে বেশ উদ্বেগজনক।

সম্প্রতি জায়গা-জমির বিরোধের কারনে বিচ্ছিন্ন ঘটনার জন্ম হচ্ছে। এসব বিরোধ গৃষ্টির অন্যতম কারণ হলো পরিষদের বিচার কার্যক্রমের ধীরগতি। তাছাড়া বিচার ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়াতে যে কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে। তাই আগামীতে শিলখালীর মানুষ পরিবর্তন চায়।

পাঠকের মতামত: