ঢাকা,শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

থানায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে এজাহার

চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যানের বাড়ির প্রাচীর নির্মাণে বাঁধা, হামলায় পাঁচ নির্মাণ শ্রমিক আহত

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া
কক্সবাজারের উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদি’র পৈতৃক বাড়ির পুকুরে সীমানা প্রাচীর নির্মাণকাজে চাঁদা দাবিতে হামলা-ভাংচুর চালিয়েছে স্থানীয় একটি সংঘবদ্ধ চক্র। শুক্রবার বিকালে এ হামলার ঘটনায় উপজেলা চেয়ারম্যানের কেয়ারটেকার ও চার নির্মাণ শ্রমিক গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের উপজেলা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলার ঘটনার সময় উপজেলা চেয়ারম্যান বাড়িতে অনুপস্থিত ছিলেন। এ ঘটনায় উপজেলা চেয়ারম্যানের কেয়ারটেকার ওলা মিয়া বাদি হয়ে শুক্রবার রাতে চকরিয়া থানায় একটি এজাহার জমা দিয়েছেন।

মামলার এজাহারে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি ও হামলা -ভাংচুর তাণ্ডবের ঘটনায় চকরিয়া পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডেে জনতা মার্কেট এলাকার মরহুম মোজাহের আহমদ কোম্পানির ছেলে খোরশেদ আলম, জাফর আলম, শাহ আলম, শামসুল আলম ও মনসুর আলমসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ্য করে আরও ৪-৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

বাদি মোহাম্মদ ওলা মিয়া এজাহারে বলেন, চকরিয়া পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের জনতা মার্কেট এলাকায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ফজলুল করিম সাঈদির পৈতৃক বাড়ি-ভিটা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা চেয়ারম্যানের বাড়ির কেয়ারটেকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। শুক্রবার বাড়ির পেছনে পুকুরের সীমানা প্রাচীর কাম গাড়ির রাখার জন্য একটি গ্যারেজ তৈরির কাজ করছিলেন।

এরই মধ্যে দুপুর দুইটার দিকে অভিযুক্তদের নেতৃত্বে একটি চক্র দৈশীয় তৈরি বন্দুক, ধারালো দা, লোহার রড, হাতুড়িসহ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। একপর্যায়ে তারা পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে সবাইকে ঘিরে ধরে এলোপাতাড়ি মারপিট শুরু করে। এ অবস্থায় বেদড়ক মারধর ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে উপজেলা চেয়ারম্যানের কেয়ারটেকার ওলা মিয়া (৪০), নির্মাণ শ্রমিক হালকাকারা জনতা মার্কেট এলাকার বশির আহামদের ছেলে দেলোয়ার হোসেন (৪০), মৃত নজির উদ্দিনের ছেলে তৌহিদুল ইসলাম (২৮), মৃত আব্বাছ আহামদের ছেলে হেলাল উদ্দিন (২৬) ও আমির হোসেন এর ছেলে জয়নাল আবেদীন (৩৮) গুরুতর আহত হয়েছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, হামলার সময় আহতদের শৌর চিৎকারে জুমার নামাজ থেকে মুসল্লীরা বের হয়ে এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে আহত সবাইকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় ইউনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

বাদি কেয়ারটেকার ওলা মিয়া বলেন, ঘটনার বিষয়ে চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী এবং এলাকার গণ্যমান্য লোকজনকে অবগত করার পর বিষয়টি নিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে থানায় এজাহার দায়ের করেন।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত জাফর আলম কোম্পানী চকরিয়া বরইতলী ইউনিয়নের আলোচিত কলেজ ছাত্র মোর্শেদ আলম হত্যার মামলার অন্যতম আসামি। তিনি ছিলেন হত্যাকাণ্ডের মুলপরিকল্পনাকারী। ওই মামলায় পিবিআই পুলিশ তাকে গ্রেফতারও করেন। পরে অবশ্য তিনি জামিনে এসেছেন।
এছাড়াও জাফর কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রলোভনে ফেলে চকরিয়া, পেকুয়া, লামা, টেকনাফে অসংখ্য নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনার অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি অন্যজনের জায়গা জমি দখলে হামলা, নিজের প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে নিজে পিটিয়ে সাজানো ঘটনায় প্রতিপক্ষ কিংবা এলাকাবাসীকে মামলায় জড়িয়ে হয়রানির অহরহ অভিযোগ রয়েছে।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন , চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যানের পৈত্রিক বাড়ির পুকুরের জমিতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণকালে হামলার ঘটনায় একটি এজাহার পাওয়া গেছে। তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে জড়িতদের আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। #

পাঠকের মতামত: