ঢাকা,রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

৫ জানুয়ারী মার্কা নির্বাচন হতে দেয়া হবে না -কক্সবাজারে মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন

IMG_20170513_160201আগামী নির্বাচন হতে হবে সব দলের অংশগ্রণমূলক নির্বাচন। ৫ জানুয়ারি মার্কা নির্বাচন আর করতে দেয়া হবে না। বিএনপি ছাড়া কেন নির্বাচন নয়। শনিবার বিকালে শহরের হোটেল সী-প্যালেসের সম্মেলন কক্ষে জেলা বিএনপির তৃণমূল প্রতিনিধি সভায় বিএনপির ভাইসচেয়ারম্যান ও সাবেকমন্ত্রী মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

মীর নাসির বলেন, আওয়ামী লীগ উন্নয়নের নামে খুন, হত্যা, মিথ্যা মামলায় সাধারণ মানুষকে অতীষ্ঠ করে তুলেছে। আওয়ামী লীগের জুলুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

তিনি বলেন, বিএনপি বর্তমানে শক্তিশালী ও সুসংগঠিত দল। বিএনপিকে প্রতিহত করতে স্বসস্ত্র আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের ব্যবহার করছে আওয়ামী লীগ। তিনি আরো বলেন, নিরস্ত্র মানুষ কোন দিন অস্ত্রধারীদের মুখোমুখি হতে পারে না। সরকারী বাহিনী বাদ দিয়ে মাঠে নামলে বোঝা যাবে বিএনপি শক্তিশালী নাকি আওয়ামী লীগ। মীর নাসির মনে করেন, যতদিন আওয়ামীলীগের মতো একটি ফ্যাসিস্ট দল থাকবে ততদিন দেশের মানুষের শান্তি নেই। দেশের উন্নয়ন ও মানুষের আস্থার ঠিকানা বিএনপি।

উন্নয়নের নামে আওয়ামী লীগ মিথ্যাচার করছে জানিয়ে বিএনপির ভাইসচেয়ারম্যান ও সাবেকমন্ত্রী মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, কক্সবাজার বিমানবন্দর, মেরিনড্রাইভ সড়ক বিএনপি সরকারই করেছে। উন্নয়নের নামে আওয়ামী লীগ জঘন্য মিথ্যাচার করছে। আওয়ামী লীগের ধোকাবাজি জনগন বুঝে ফেলেছে।

মীর নাসির বলেন, মোদি বা ট্রাম ক্ষমতায় বসাতে পারে না। জনগণই ক্ষমতায় বসাতে পারে। তাই ঐক্যবদ্ধ ভাবে দল পরিচালনা করে জনগণ ম্যান্ডেট নেয়ার জন্য বিএনপির নেতাকর্মীদের নিরলসভাবে কাজ করে যেতে হবে।

তিনি আরো বলেন, স্বৈরশাসক এরশাদকে ক্ষমতায় বসিয়ে ছিলো আওয়ামী লীগ। ১/১১ এর ফখরুদ্দিন সরকারকেও একইভাবে ক্ষমতায় বসিয়েছিল তারা। ফখরুদ্দিন সরকারের সব অপকর্ম মেনে নিয়ে ও বৈধতা দেয়ার অঙ্গীকার করে ক্ষমতায় যায় আওয়ামী লীগ। বেগম খালেদা জিয়া স্বৈরচারীদের সাথে কখনো আপোস করে না। তিনি যদি ফখরুদ্দিন সরকারের সাথে আপোষ করতেন তাহলে বিএনপি আবার ক্ষমতায় আসতে পারতো।

বিএনপির এই ভাইসচেয়ারম্যান আরো বলেন, ৫ জানুয়ারির ভোটবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছে আওয়ামী লীগ। ক্ষমতা চেপে ধরে দেশের সম্পদ লুটপাট করে খাচ্ছে।

দলের সাংগঠনিক অবস্থা সম্পর্কে মীর নাসির বলেন, দল বড় হলে নেতাও বেশি হবে। এতে কোন্দল হতে পারবে না। নেতৃত্বের জন্য প্রতিযোগিতা হতে পারে এবং তা করতে হবে। যারা দলের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টি করে তারা বিএনপিতে থাকতে পারবে না।

জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, যদি আজকে নির্বাচন হয় তাহলে সারাদেশে ২৭০ থেকে ২৮০ আসনে বিএনপির প্রার্থীরা নির্বাচিত হবেন। দেশের রাজনীতির আবহাওয়া তাই ইঙ্গিত বহন করে। কোন ফ্যাসিবাদী সরকার ক্ষমতায় চিরস্থায়ী হতে পারেনা।

তৃণমূলের উদ্দেশ্যে মৎসজীবী বিষয়ক সম্পাদক লুৎফুর রহমান কাজল বলেন, আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় আসছে। মনোবল শক্ত করুন। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমাদের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবেনা। এখন ঘরে ঘরে, চায়ের দোকানের বিএনপির রাজনীতি নিয়ে আলোচনা। সবাই বিএনপি সরকারের অপেক্ষা করছে। মার্শাল ল করলেও বিএনপির বিজয় ঠেকানোর শক্তি নেই।

তিনি দুঃখ করে বলেন, আওয়ামী লীগ আমাদের শত্রু নয়। আমাদের শত্রু আমরাই। ভেদাভেদ ভুলে আমাদের এগুতে হবে। বিএনপির সকল পর্যায়ের জনশক্তি এক হয়ে মাঠে নামলে আওয়ামী লীগ নেতারা ঘর থেকে বের হওয়ার সাহসও করবেনা। সামনের নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিন।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. শামীম আরা স্বপ্নার সঞ্চালনায় প্রতিনিধি সভায় অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দীন মজুমদার, হারুনুর রশীদ, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি এটিএম নুরুল বশর চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক জামিল ইব্রাহিম চৌধুরী, পৌর বিএনপির সভাপতি রফিকুল হুদা চৌধুরী, চকরিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান চৌধুরী খোকন মিয়া, উখিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি সরওয়ার জাহান চৌধুরীসহ বিভিন্ন উপজেলার ১৫টি সাংগঠনিক ইউনিয়নের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা বক্তব্য রাখেন।

সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের ধারণকৃত বক্তব্য সম্প্রচার করা হয়। এ সময় পুরো হলজুড়ে নেতাকর্মীরা আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়ে। অুনষ্ঠানস্থলে নেমে আসে নীরব নিস্তব্দতা।

সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন ওসমান গণি। জাতীয় ও দলীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে তৃণমূল প্রতিনিধি সভা উদ্বোধন হয়। বার্তা প্রেরক, ইউসুফ বদরী, দপ্তর সম্পাদক, জেলা বিএনপি |

পাঠকের মতামত: