এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :: কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে ৫৮ কোটি টাকা বরাদ্দে চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের শান্তিবাজার পয়েন্ট থেকে কাকারা মানিকপুর ইয়াংছা পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। নিন্মমানের কাজের কারণে ঢালাইয়ের একদিন পর ভেঙ্গে গেছে সদ্য নির্মিত গাইডওয়াল। সড়কের কাকারা ইউনিয়নের পাহাড়তলী অংশে শনিবার রাতে ঘটেছে গাইডওয়াল ভেঙ্গে পড়ার ঘটনা।
এলাকাবাসি অভিযোগ তুলেছেন, নির্মাণ কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সড়ক উন্নয়ন কাজে নিন্মমানের উপকরণ ব্যবহার করছেন। বিশেষ করে ঢালাইয়ের কাজে সিডিউল মোতাবেক সিমেন্ট দিচ্ছেনা। এমনকি নির্মাণ কাজে ব্যবহার করছেন নিন্মমানের ইট। অভিযোগ উঠেছে, ঢালাইয়ের সময় সড়ক বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও সেখানে কেউ থাকছেনা। এতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন ইচ্ছেমত সড়ক নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
জানা গেছে, ২০২০ সালের জানুয়ারী মাসে শুরু হওয়া ১৯ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়ন কাজটি ২০২১ সালের জুন মাসে শেষ করার কার্যাদেশ থাকলেও গেল দশমাসে কাজের দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখাতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এ অবস্থায় মেরামত কাজ শুরুর প্রাক্কালে সড়কের বিভিন্নপয়েন্ট থেকে খুলে নেয়া ইট-সুরকির স্থানগুলো বৃষ্টির পানি জমে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতেকরে চলাচলের ক্ষেত্রে সড়কটির উপর নির্ভরশীল অন্তত চারটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষকে প্রতিদিন চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয় লোকজন দাবি করেছেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের চরম গাফেলতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে দশমাসেও কাজের দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছেন ভুক্তভোগী লোকজন।
প্রকল্পের কার্যাদেশ অনুযায়ী জানা গেছে, বর্তমানে কাকারা অংশের সড়কটি ১০ ফুট প্রস্থ। একে বাড়িয়ে ১৮ ফুট প্রস্থ করা হবে। এর বাইরে থাকবে চারফুট মাটির অংশ। কিন্তু ১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটির জিদ্দাবাজার থেকে টোব্যাকো অফিস পর্যন্ত ৪৫০ মিটার অংশ উঁচু করে এবং পাথরের খোয়া দেয়া শেষ হয়েছে চারমাস আগে। এরপর আর কাজ এগোয়নি। এই সড়কের অনেকস্থানেও নির্ধারিত ১৮ ফুট প্রস্থ নেই। শুধু তাই নয়, সড়কের এই অংশে দুটি কালভার্ট আছে যেগুলোর প্রস্থ ১০ ফুট। কালভার্ট দুটিকে ১৮ ফুট প্রস্থে করার সিদ্ধান্ত হলেও এখনও অনুমোদন মিলেনি।
জানতে চাইলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আরএবিআরসি লিমিটেডের স্থানীয় কো-অডিনের্টর আনোয়ার হোসেন বলেন, নির্মাণকাজে অনিয়মের বিষয়টি সত্য নয়। নিন্মমানের কাজের কারণে নয়, গাইডওয়ালটি ভেঙ্গে গেছে ঘটনাস্থলে একটি ট্রাক উল্টে গিয়ে।
কাজের ধীরগতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘করোনাকালীন দুর্যোগ সময়ে উপকরণ সরবরাহ সংকট, আর্থিক সংকটের কারণে আমাদের কাজের অগ্রগতি কম হয়েছে। একইসাথে কত কিলোমিটার সড়ক সিসি ঢালাই এবং কত কিলোমিটার সড়ক কার্পেটিং হবে তা এখনও চুড়ান্ত হয়নি। এখানে ইচ্ছেকৃত ধীরগতির সুযোগ নেই।’
পাঠকের মতামত: