কক্সবাজারের হোটেল শৈবালের পর্যটন গলফ ক্লাব বার (অপটিমা ট্যুরিজম) থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১৩৭৬.২১ লিটার মদ উদ্ধার করা হয়েছে।
সেখানে বিলাতী মদ মোট ৬৪১ বোতল (৬২৯.৭৫ লিটার) এবং বিভিন্ন ব্রান্ডের বিয়ার মোট- ২২৬২ ক্যান (৭৪৬.৪৬ লিটার) রয়েছে।
এতে জড়িত থাকার অভিযোগে বারের ইনচার্জ মোঃ শামীম উদ্দিন (৫৬)কে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি শহরের দক্ষিণ বাহারছড়ার বাসিন্দা মৃত সুরেন্দ্র লাল বড়ুয়ার ছেলে।
গত ১০ মে গভীর রাতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কক্সবাজারের সহকারি পরিচালক সোমেন মন্ডলের নেতৃত্বে একটি টিম এ অভিযান চালানো হয়।
এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) চাঁন মিয়া বাদি হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। এসময় বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মামলা গ্রেফতার মোঃ শামীম উদ্দিন ছাড়া আরো দুই আসামি হলেন- বার তথা মেসার্স অপটিমা ট্যুরিজমের মালিক এমএ আউয়াল চৌধুরী (ভুলু) এবং বারের ম্যানেজার শফিউল বারী চৌধুরী। তারা দুই জনই পলাতক রয়েছেন।
অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কক্সবাজার’র সহকারী পরিচালক সৌমেন মন্ডল।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) ও মামলার বাদি চাঁন মিয়া এজাহারে উল্লেখ করেছেন, আসামিরা বিপুল পরিমাণ অ্যালকোহল (মদ) অবৈধ উপায়ে সংগ্রহপূর্বক ধারণ, অধিকার অথবা দখল, সংরক্ষণ ও গুদামজাত করায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর ১০ এর উপধারা (১) এর দফা (ঙ), (জ) এবং ধারা ৪০-৪১ লংঘন করে একই আইনের ধারা ৩৫ (১) এর সারণীর ২৪ (গ) ২৭ ও ধারা ৪০-৪১ মোতাবেক শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামিকে থানার মাধ্যমে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালত আসামির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে অনুসন্ধান করে জানা গেছে, পর্যটন কর্পোরেশনের নিয়ন্ত্রণাধীন শৈবাল বারে মোঃ শামীম উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট অবৈধ মদের বিশাল মজুদ গড়ে তোলে। তারা এসব মদ হোটেল মোটেল জোনের বৈধ-অবৈধ বিভিন্ন বারে সরবরাহ করে আসছিল।
চোরাইপথে সংগৃহীত এসব মদ বিক্রি করায় কোটি টাকার রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে সরকার।
এর আগেও ২০১৭ সালের ১৮ ডিসেম্বর হোটেল শৈবাল থেকে বিদেশী বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৯৭৪ লিটার মদ উদ্ধার করা হয়েছিল।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় গোয়েন্দা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা এ অভিযান পরিচালনা করেছিলেন।
এ ঘটনায় বারের সহকারী ম্যানেজার আবদুল আলীমকে আসামী করে সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে প্রকাশ, হোটেল শৈবাল সংলগ্ন বারে বিপুল পরিমান
অবৈধ বিদেশী মদ মজুদ আছে মর্মে গোপন সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছিল।
এর প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ পরিচালক শওকত ইসলাম, সহকারী পরিচালক জিল্লুর রহমান ও তত্বাবধায়ক ইদ্রিস আলীর নেতৃত্বাধীন চৌকস ফোর্স এ অভিযান পরিচালনা করেছিলেন।
৯৭৪ লিটার বিদেশী মদ উদ্ধারের ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের পরিদর্শক জীবন বড়ুয়া বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় মাদক মামলা দায়ের করেছিলেন।
হোটেল শৈবাল ও পর্যটন গলফ বার ঘিরে গড়ে উঠা মাদক কারবারী চক্রকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা না গেলে প্রতিবছর শত কোটি টাকার রাজস্ব বঞ্চিত হবে সরকার, এমনটাই অভিমত সচেতন মহলের।
পাঠকের মতামত: