সোয়েব সাঈদ, রামু ::
কক্সবাজারে চাকুরি জাতীয়করনের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন জেলার ৮ উপজেলার ১৭১টি কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত সিএইচসিপিগণ। সিএইচসিপি’দের এ অবস্থান কর্মসূচির কারনে বিগত ৪দিন জেলার ১৭১ টি কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ ছিলো। এ কারনে প্রান্তিক জনপদের হাজার হাজার রোগী কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে দূর্ভোগের শিকার হয়েছেন।
বাংলাদেশ সিএইচসিপি অ্যাসোসিয়েশস কক্সবাজার জেলা শাখার আয়োজনে মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত কক্সবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয় চত্বরে এ অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন জেলার ১৭১টি কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি (কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার)।
“শেখ হাসিনার অবদান, কমিউনিটি ক্লিনিক বাঁচায় প্রাণ” এ শ্লোগানে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ সিএইচসিপি অ্যাসোসিয়েশস কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি রফিকুল হাসান, সাধারণ সম্পাদক এমকে মো. মিরাজ, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম রেজাউল করিম, অর্থ সম্পাদক মো. শামীম উল্লাহ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মঈনুল হোসেন চৌধুরী, রামু উপজেলা সাধারণ সম্পাদক সুদর্শন কান্তি দাশ, টেকনাফ সভাপতি আবদুল মতিন ডালিম, সাধারণ সম্পাদক মোসা আকবর, উখিয়া উপজেলা সাধারণ সম্পাদক জিয়া উল হাসান জিয়া, কক্সবাজার সদর উপজেলা সভাপতি হামিদ হাসান, সাধারণ সম্পাদক মো. শহীদ, পেকুয়া উপজেলা সভাপতি মো. শাহেদ, সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদুর রহমান, কুতুবদিয়া উপজেলা সভাপতি মনজুর মোর্শেদ, সাধারণ সম্পাদক ছৈয়দ আলম, মহেশখালী উপজেলা সভাপতি নুরুল আলম, সাধারণ সম্পাদক সাদেকুর রহমান প্রমূখ।
অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সিএইচসিপি নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ গ্রামীন জনসাধারণের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকল্পে প্রতি ৬ হাজার জনগোষ্ঠির জন্য একটি করে কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করেছে। এসব ক্লিনিকে স্বাস্থ্য সেবা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রদানের জন্য একজন করে প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্য কর্মী, সিএইচসিপি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এদেশে গ্রামীন স্বাস্থ্য সেবায় কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত সিএইচসিপিদের অবদান সর্বত্র প্রশংসনীয়। ২০১৩ সালে চাকুরি রাজস্ব খাতে অর্ন্তভূক্ত করণের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু এখনো সে উদ্যোগ আলোর মুখ দেখেনি। অবিলম্বে চাকরি জাতীয়করন না করা হলে কঠোর আন্দোলন করবেন সারাদেশের সিএইচসিপিগণ।
বক্তারা আরো বলেন, ২০১১ সালে কমিউনিটি ক্লিনিকে দেশের ১৪ হাজার সিএইচসিপি নিয়োগ পায়। এরমধ্যে প্রায় ৪ হাজার ৫০০ জন সিএইচসিপি মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান। সিএইচসিপিগণ শুরু থেকে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবি জানিয়ে আসছিলো। পরবর্তীতে দাবি পূরণ না হওয়ায় সিএইচসিপিরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। হাইকোর্ট চাকরি স্থায়ীকরণের জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য রায় প্রদান করলেও এখনো সরকার বাস্তবায়ন করছে না। এ অবস্থায় সিএইচসিপিরা অবিলম্বে হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান। দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে আগামীতে বৃহত্তর কর্মসূচি পালন করা হবে ঘোষণা দেয়া হয়।
সংগঠনের কেন্দ্রিয় কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক দেশের সকল জেলা শহরে এ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে বলে জানান, বাংলাদেশ সিএইচসিপি অ্যাসোসিয়েশস কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি রফিকুল হাসান, সাধারণ সম্পাদক এমকে মো. মিরাজ ও সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম রেজাউল করিম। তারা আরো জানান, গর্ভবতী মায়ের সেবা, শিশু স্বাস্থ্য, স্বাভাবিক প্রসব, সাধারণ রোগের চিকিৎসা, গর্ভবর্তী নারী ও শিশুদের অনলাইন রেজিস্ট্রেশন, অনলাইন হেলথ সেবা, দৈনিক ও মাসিক রিপোট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা সহ আরো অনেক স্বাস্থ্য সেবা ও উন্নয়নমূলক কাজে সিএইচসিপিগণ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরআগে গত ২০ থেকে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত উপজেলা পর্যায়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।
পাঠকের মতামত: